মিয়ানমারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে দ্বিতীয় দফায় জরুরি ত্রাণ প্রেরণ


প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে গত ২৮ মার্চ মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পে মিয়ানমারের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তার অংশ হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে জরুরিভিত্তিতে ত্রাণসামগ্রী এবং উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা দল প্রেরণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর প্রেক্ষিতে প্রথম ধাপে গত ৩০ মার্চ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দুটি পরিবহন বিমানে ১৬.৫ টন জরুরি ত্রাণ সহায়তা মিয়ানমারে প্রেরণ করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায়, আজ ০১ এপ্রিল সাড়ে ১১টায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১টি এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ২টি পরিবহন বিমানের মাধ্যমে উদ্ধার সরঞ্জামাদিসহ একটি উদ্ধারকারী দল এবং জরুরী ঔষুধ সামগ্রীসহ একটি চিকিৎসক দল এবং আরও ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
উল্লেখ্য যে, ৫৫ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ সহায়তাকারী দল সেনাবাহিনীর কর্ণেল মো. শামীম ইফতেখারের নেতৃত্বে মিয়ানমারের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান ও জরুরী চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করবে। ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট উদ্ধারকারী দলের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২১ জন, নৌবাহিনীর ২ জন, বিমানবাহিনীর ১ জন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১০ জন সদস্য রয়েছেন। এছাড়া ২১ সদস্য বিশিষ্ট চিকিৎসা সহায়তা দলের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ জন, নৌবাহিনীর ১ জন, বিমানবাহিনীর ২ জন এবং অসামরিক ৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স রয়েছেন।
উদ্ধারকারী ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানকারী দলের পাশাপাশি আজ প্রেরিত ১৫ টন ত্রাণসহায়তার মধ্যে রয়েছে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, তাঁবু, হাইজিন প্রোডাক্ট, ঔষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ সরকারের এই মানবিক উদ্যোগে সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করেছে। এর প্রেক্ষিতে সশস্ত্র বাহিনী বিশেষভাবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের সংকটকালে বাংলাদেশ সরকারের এই মানবিক উদ্যোগ বাংলাদেশের সুপ্রতিবেশীসুলভ আচরণের পরিচায়ক। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রেরিত এই মানবিক সহায়তা মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের দুর্ভোগ কমিয়ে আনা এবং দুই প্রতিবেশী দেশের সরকার ও জনগনের পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আগামী দিনগুলোতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বৈশ্বিক যেকোন প্রয়োজনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আত্মনিয়োগের জন্য সদা অঙ্গীকারবদ্ধ।