মিয়ানমারে সংবিধান সংশোধনে ব্যর্থতায় বহাল থাকছে সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক ভূমিকা
মিয়ানমারের সংবিধানে সেনাবাহিনীকে ২০০৮ সালে যে রাজনৈতিক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তা খর্ব করার জন্য গত এক বছর ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমক্রেসি (এনএলডি)। সংবিধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনার জন্য মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টে যে ভোটাভুটি হয় তা প্রয়োজনীয় ৭৫ শতাংশ এমপি’র সমর্থন লাভ করতে পারেনি।
সংবিধানের ১৪টি অনুচ্ছেদ সংশোধনের জন্য এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ছিলো জাতীয় রাজনীতিতে প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা কমানো, পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীর আসন সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে আনা এবং সশস্ত্র বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার হিসেবে সেনা প্রধানের ভূমিকা ও জরুরি অবস্থার সময় তার ক্ষমতা গ্রহণের অধিকার খর্ব করা।
শুধু দুটি প্রস্তাব পাস হয়। এগুলো হলো বর্মিভাষায় ‘অক্ষম’ শব্দটি লেখা। এটা সংবিধানের ৪৩৬(এ) ধারায় অনুমোদন দেয়া হয়। তবে এর জন্য জাতীয় গণভোটে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে।
২০২০ সালের নির্বাচনের পর থেকে পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীর সংরক্ষিত আসনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে ২৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছিলো এনএলডি। এর মধ্যে ২০২৫ সালের পর ১০ শতাংশ ও ২০৩০ সালের পর ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবটি ৪০৪ ভোট পায়, যা ৬২ শাতংশের কম। সংবিধান সংশোধনের জন্য অন্তত ৭৫ শতাংশ এমপি’র সমর্থন প্রয়োজন।
সংবিধান সংশোধন নিয়ে গত দুই সপ্তাহ ধরে পার্লামেন্টে বিতর্ক চলে। এসময় জাতিগত দলগুলো সেনাবাহিনীর ভূমিকা সীমিত করা ও সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণ সম্পর্কিত ধারাগুলো অপসারণের পক্ষে কথা বলে।
কিন্তু এর তীব্র বিরোধিতা করে সেনাবাহিনীর নিযুক্ত এমপি ও সেনাপন্থী ইউএসডিপি। তাদের যুক্তি হলো সেনাবাহিনীর ক্ষমতা খর্ব করা হলে তা ‘অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি’র সৃষ্টি করবে এবং দেশের ভঙ্গুর গণতান্ত্রিক উত্তরণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সংবিধানে গণতন্ত্রের আগে লেখা ‘ডিসিপ্লিনড’ শব্দটি বাদ দেয়ার প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করা হয়।
সংবিধান সংশোধনের অন্যান্য প্রস্তাবের উপর ভোট গ্রহণ ২০ মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে সংবিধান পরিবর্তনের ব্যাপারে সেনাবাহিনীর ভোট দেয়া রদ এবং প্রসিডেন্টের নিয়োগের বদলে সরাসরি ভোটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য বিধায়ক নির্বাচন।
সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর