সোর্স খুনের ৪ দিন পর বেরিয়ে আসছে কি ঘটেছিল সে দিন
বিগত ৬ ডিসেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদরের ইসলামপুরে ইয়াবা কারবারি কর্তৃক অভিজাত এক আইন শৃংখলা বাহিনীর সোর্স খুনের ৪ দিন পরও ঘটনার প্রকৃত রহস্যের কোন কুল কিনারা হচ্ছিল না।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ লোকেমুখে এ খুনের ঘটনা চাওর হলেও কেউ শতভাগ নিশ্চিত করতে পারছিলনা আদৌও এ রকম ঘটনা ঘটেছিল কিনা।অপরদিকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কিংবা অভিযান পরিচালনাকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কোন ভাবেই মুখ খুলেননি অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার স্বার্থে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গোলক ধাঁধায় পড়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরাও।
অবশেষে দেরিতে হলেও ঘটনার চার দিন পর সংঘটিত ঘটনার ইতিবৃত্ত প্রকাশ হতে শুরু করেছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ইসলামপুর ইউনিয়নের চাকার দোকান নামক স্থানে ইয়াবা কারবারিদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনবস্থায় যে সোর্স নিহত হয়, তার নাম নাছির উদ্দীন প্রকাশ দুলাল। তার বাবার নাম মোঃ শাহ আলম। তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট সংলগ্ন রিংভং এলাকায়। নিহত হতভাগা সোর্স ৪ বছর বয়সি এক সন্তানের জনক এবং বিগত কয়েক মাস পূর্ব থেকে টেকনাফের হোয়াইক্কং এলাকায় সে ইলেকট্রনিক মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করে আসছিল।
সম্প্রতি সে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করে এবং দ্রুতই সে নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয় সফল সোর্স হিসেবে।এরই ধারাবাহিকতায় ঐদিনও ইয়াবা কারবারি আটক অভিযানে নামে এ সাহসী সোর্সের সহায়তায় অভিজাত বাহিনীটি। অবশেষে নিজের জীবন দিয়ে তার বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিয়েছে সে। ঘটনার পরদিন শনিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে তার লাশ শরয়ী নিয়মে নিজ এলাকায় দাফন সম্পন্ন করে তার পরিবার। নিহতের বাবা বাদি হয়ে ঘটনার পরদিন ধৃত দুইজবসহ ৩ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে ও-ই সময় ঘটনায় জড়িত দুইজনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছে এবং মূল ছুরিকাঘাত করা ঘাতক এখনো পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে নাছিরসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর অপর এক সদস্য ইয়াবা ক্রেতা সেজে ইসলামপুরের বামন কাটা এলাকায় ইয়াবা কারবারিদের আটকে তাদের সাথে সারাদিন কৌশলে দেনদরবার করতে থেকে। অবশেষে সন্ধ্যার দিকে মহাসড়কের চাকার দোকান সংলগ্ন স্থানে ইয়াবা ও টাকা লেনদেন করার সময় ইয়াবা কারবারি পূর্ব বামন কাটার মোহাম্মদ হাছানের ছেলে মাহমুদউল হকের সন্দেহ জাগে দুই ক্রেতা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। এতে সে সোর্স নাছির উদ্দীনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যেতে পারলেও তার সহযোগি ইসলামপুর ইউনিয়নের ভিলেজের পাড়ার বাসিন্দা, সাবেক খুটাখালী ইউনিয়নের ফুলছড়ি ছরা পাড়ার অধিবাসি মৃত আবু শামা’র ছেলে নুরুল আবছার ড্রাইভার এবং পূর্ব নাপিত খালীর বাদশা মিয়ার ছেলে আবুল কাসেমকে আটক করে অভিযান পরিচালনাকারী বাহিনী। কিন্তু ঘটনার পর বিগত চার দিন অতিবাহিত হলেও স্থানীয় প্রশাসন ও অভিযান পরিচালনাকারী কোন পক্ষ আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন বিবৃতি না দেয়ায় উক্ত ঘটনা নিয়ে জনমনে সন্দেহ ও আতঙ্ক বিরাজ করতে থাকে। এমনকি এ সংবাদ প্রকাশ হয়ে পড়লে উক্ত স্থানসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার পেশাদার ইয়াবাচক্র গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছে বলে এলাকায় প্রচার হয়ে পড়েছে। সচেতন জনগণ আরো বড় ধরণের দূর্ঘটনা না ঘটার পূর্বেই ইয়াবা কারবারিদের আটকে অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানান।