স্বপ্ন নয়, বাস্তবে রুপ পেতে যাচ্ছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর

fec-image

দূর থেকেই চোখে পড়বে সাগরের নীল জলরাশি। আর এই সাগরের নীল জলরাশির বুক চিরে গড়ে তোলা হচ্ছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর। এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবে রুপ পেতে যাচ্ছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর। এরই মধ্যেশেষ হয়েছে নকশা প্রণয়ন। আগামী জুন থেকেই শুরু হবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের মূল অবকাঠামো নির্মাণের কাজ। ২০২৬ সালে এই বন্দর চালু হলে শুধু দেশের আমদানী-রপ্তানী বাণিজ্যেই সুবিধা বাড়াবেনা বরং এটি পরিণত হবে এ অঞ্চলে সমুদ্রপথের বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে।

বিশেষ ব্যবস্থায় সাগরে বাঁধ বা ব্রেকওয়াটার তৈরির পাশাপাশি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম খননযন্ত্র ‘ক্যাসিওপিয়া– ফাইভ’ দিয়ে খনন করা হচ্ছে মাটি। এছাড়াও লবণের মাঠ খনন করে বানানো হয়েছে সাগর থেকে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের পথ। সেইসাথে কৃত্রিম এই চ্যানেলে যাতে ঢেউ না আসে, সেজন্য তীর থেকে সাগরের দুই কিলোমিটার পর্যন্ত এরই মধ্যে দেয়া হয়েছে বাঁধও।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সাগরপথে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি। যেখানে ১ হাজার ৩১ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হবে এই বন্দর। এখন সেখানে চলছে সড়কের অবকাঠামো নির্মানের কাজ। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে আগামী জুনের পর শুরু হবে সমুদ্র বন্দরের মূল অবকাঠামো নির্মাণের কাজ।

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক জাহিদ হাসান জানান, বাংলাদেশ সরকার ও জাপানি উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা)-এর অর্থায়নে নির্মিত এ বন্দরটি ২০২৬ সালেই চালুর আশা করছেন সংসদীয় কমিটি। একই সঙ্গে রেল নেটওয়ার্কের সাথেও যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে এর সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন তারা।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি সভাপতি বীর উত্তম মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ। কিন্তু এই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে ১৬ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে। আর এটিকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ায় ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর হিসেবে নিজেদের ব্র্যান্ডিং এর সুযোগ সৃষ্টি করতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ রিয়ার চেয়ারম্যান, এডমিরাল এম শাহজাহান জানান, গভীর সমুদ্র বন্দরটিতে জেটি থাকবে ২টি, যেখানে একসঙ্গে ভিড়তে পারবে ২টি জাহাজ। জাইকা, বাংলাদেশ সরকার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে মোট ১৭ হাজার ৭’শ ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে এই প্রকল্প। এর মাঝেই গেল দুই বছরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মিত অস্থায়ী দুটি জেটিতে ভিড়েছে ১১১টি জাহাজ। আর তা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে অন্তত ১০ কোটি টাকা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন