হাসিনা আমলে গোয়েন্দা সংস্থার বন্দুকের মুখে ব্যাংক দখল, ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার!
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার যোগসাজশে দেশের ব্যাংক খাত থেকে ২ লাখ কোটি টাকা বা ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে ব্যবসায়িক গোষ্ঠী। এই ব্যবসায়িক গোষ্ঠী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত।
সাক্ষাৎকারে আহসান এই মনসুর বলেন, দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা এসব ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলো দখলে নিতে সহায়তা করেছিল।
গভর্নর জানান, নতুন শেয়ারহোল্ডারদের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের পর এই ঘটনা ঘটে। নতুন শেয়ারহোল্ডাররা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নিজেদের জন্য বিপুল অর্থ তুলে নেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে এটি ব্যাংক লুটের সবচেয়ে বড় ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা অন্য কোথাও ঘটেনি এবং এটি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে; গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যাংকগুলোর তৎকালীন প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) মাথায় বন্দুক না ঠেকালে এটি সম্ভব হতো না। এটি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত হয়েছে।
গভর্নর আরও বলেন, এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তাঁর সহযোগীরা ব্যাংক খাত থেকে অন্তত ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ‘ধাপে ধাপে চুরি’ করেছেন। ‘তাঁরা প্রতিদিন নিজেরা নিজেদের ঋণ দিয়েছেন’—বলেন আহসান এইচ মনসুর।
তবে সাইফুল আলম ও এস আলম গ্রুপের নিয়োগ করা মার্কিন আইন প্রতিষ্ঠান ‘কুইন ইমানুয়েল উরকুয়ার্ট অ্যান্ড সুলিভান’ এক বিবৃতিতে বলেছে, গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের অভিযোগের ‘কোনো ভিত্তি নেই।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে এস আলম গ্রুপসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসার বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের সমন্বিত অভিযানে মৌলিক নীতিগুলোর প্রতি কোনো সম্মান দেখানো হয়নি। যা এরই মধ্যে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়েছে। (এস আলম) গ্রুপের অতীত ইতিহাস ও অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নরের অভিযোগ আমাদের কাছে বিস্ময়কর এবং অযৌক্তিক বলে মনে হয়।’
এ বিষয়ে জানতে উল্লেখিত গোয়েন্দা সংস্থাটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। তবে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে।