২০২৩ সালে কক্সবাজারে ট্রেন

fec-image

দ্রুত গতিতে চলছে চট্টগ্রাম টু কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ মেগা প্রকল্পের কাজ ৭০ ভাগ সম্পন্ন : যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে অত্যাধুনিক রেল ইঞ্জিন-কোচ আসবে পর্যটনে অর্থনীতির বিকাশ ঘটবে। সুযোগ সৃষ্টি হবে বহুমাত্রিক উন্নয়ন, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের।

বিশ্বের বহুদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি কার্যত পর্যটন শিল্প। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত হলো বাংলাদেশের কক্সবাজারে। প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক নয়নাভিরাম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ করলেও যাতায়াতে ভোগান্তির কারণে অনেকেই কক্সবাজারমুখী হন না। রেল যোগাযোগ ভ্রমণ পিঁপাসুদের আগ্রহ বাড়াবে। সে কারণে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাতায়াত সহজ করতে আকাশ পথ ও সড়ক পথের পাশাপাশি রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। রেলপথ নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০২৩ সালের জুন মাসে রাজধানী ঢাকা থেকে কক্সবাজার রেল চালু হবে। এতে বদলে যাবে কক্সবাজারে অর্থনীতির চিত্র। যোগাযোগ সহজ হলে প্রতি সাপ্তাহে লাখ লাখ পর্যটক ঢাকা থেকে ছুটবেন কক্সবাজার অভিমুখে। এতে বদলে যাবে জীবনধারা, দেশের অর্থনীতি পাবে নতুন প্রাণ। গার্মেন্টস শিল্পের মতোই পর্যটন খাত হয়ে উঠবে দেশের অথর্নীতির অন্যতম প্রধান খাত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা টু কক্সবাজার রেল যোগাযোগ চালু হলে বিশ্ব দরবারে পর্যটন শিল্পে বাংলাদেশের অগ্রগতি হবে।

জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এ পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে ৪০ কিলোমিটার পথে বসেছে রেললাইন। দীর্ঘ রেলপথে প্রায় সবকটি বড় ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে। ছোটখাটো কিছু কালভার্ট নির্মাণ চলছে। আশা করছি, আগামী বছর জুনের আগে পুরো কাজ শেষ হবে।
দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল রেললাইন। সেই কক্সবাজারমুখী রেল লাইন প্রকল্পে গতি ফিরেছে। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল রেললাইন স্থাপন অগ্রাধিকার প্রকল্পটির ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। আগামী বছরের জুনে এই পথে শুরু হবে ট্রেন চলাচল। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে চলবে দ্রুতগতির ট্রেন। বহুল প্রত্যাশিত এই ট্রেন চলাচল শুরু হলে কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ এই অঞ্চলের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন গতির সঞ্চার হবে। সুযোগ সৃষ্টি হবে বহুমাত্রিক উন্নয়ন, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের। ট্রেন চালু হলে কক্সবাজারের সাথে চট্টগ্রামের ছয়-সাত ঘণ্টার দূরত্ব নেমে আসবে অর্ধেকে। কমবে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও

ঢাকা-কক্সবাজার রুটে দ্রুতগতির ট্রেন চালু হলে দেশের উদীয়মান অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। উন্মোচিত হবে নতুন দিগন্ত। কক্সবাজার থেকে মাছ, শুঁটকি, লবণ ও অন্যান্য কৃষিপণ্য রেলপথে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় সহজেই সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বিশ্বের সকল পর্যটন শহরের মতো কক্সবাজারের মানুষেরও জীবনমান উন্নত হবে। উন্নয়ন অগ্রযাত্রার নতুন সংযোজন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন। নতুন এই রেললাইন দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে যাতায়াত সহজ করবে। এর নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে চালু হবে দ্রুতগতির ট্রেন। এগুলো চলবে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে। দ্রুতগতির ট্রেনের মাধ্যমে মাত্র চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়া যাবে এবং বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ হবে। সড়কপথে ভোগান্তি এবং ক্লান্তিকর যাত্রায় আসবে স্বস্তি। ট্রেন ভ্রমণ হবে স্বাচ্ছন্দ্যের। প্রকল্পটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। এই পথে রেললাইন চালুর প্রাথমিক লক্ষ্য পর্যটক। তাই পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ঢাকা-কক্সবাজার পথে দ্রুতগতির ট্রেন পরিচালনার জন্য নতুন ইঞ্জিন-কোচ কেনার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে অত্যাধুনিক ইঞ্জিন-কোচ কেনার প্রকল্প নেয়া হয়। নতুন লাইন নির্মাণের পর এসব ইঞ্জিন-কোচ দিয়ে চাইলে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। এই রেলপথ পর্যটন খাত ছাড়াও কক্সবাজারের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে এই অঞ্চলের মৎস্য সম্পদ, লবণ, রবারের কাঁচামাল এবং বনজ ও কৃষিজ পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক সহজ হবে। আগের চেয়ে কম খরচে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে পণ্য পরিবহন করতে পারবেন মৎস্যজীবী ও কৃষকেরা। বর্তমানে কক্সবাজারের মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্প অঞ্চলসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে নানা প্রকল্পের কাজ চলছে। চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ ও দ্রুত করার জন্য কর্ণফুলী নদীর তলদেশে চলছে টানেলের নির্মাণকাজ। এর পাশাপাশি রেললাইন স্থাপিত হলে কক্সবাজারে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হবে। এর ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির আশা করছে সরকার।

স্থানীয়দের কাছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন এক সময়ে স্বপ্ন ছিল, অনেক দিন পর সেই স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। তাই এ প্রকল্পকে ঘিরে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নও দেখছেন অনেকেই। কক্সবাজারের মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, এনার্জি হাব, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ নানা প্রকল্পের কাজ চলছে। চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজার এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের যোগাযোগ সহজতর করতে কর্ণফুলীর তলদেশে চলছে টানেল নির্মাণ কাজ। এর পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন চালু হলে যাতায়াত ব্যবস্থা আরও সহজতর হবে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, আগামী বছরের জুনে প্রথমবারের মত ঢাকা-কক্সবাজার পথে রেল যোগাযোগ শুরু হবে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মন্ত্রণালয়। এখন ডিসেম্বরের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আগামী জুনে ট্রেন চালুর লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সবকিছু। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কপথের দূরত্ব প্রায় ১৫০ কিলোমিটার। সড়কপথে বাসে এ দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা। আর এ মহাসড়কে যানজটে পড়লে পেরিয়ে যায় ছয়-সাত ঘণ্টা এমনকি তারও বেশি। তবে স্বপ্নপূরণের পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজ।

প্রথমবারের মতো ঢাকা-কক্সবাজার পথে রেল যোগাযোগ শুরু হওয়ার আশা করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেলপথ ৩২০ কিলোমিটার। আর চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মিশ্র গেজ রেললাইন নির্মিত হচ্ছে। এ পথে রেললাইন বসানো শেষ হলে ঢাকা থেকে দ্রুতগতির রেল চলাচল সম্ভব হবে। আর এজন্য চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত বিদ্যমান রেলপথের কিছুটা সংস্কার করা হবে।

২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং কক্সবাজার থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুনধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করা হয়। তখন ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। তবে কক্সবাজার থেকে ঘুনধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার অংশে আপাতত রেললাইন নির্মাণ কাজ হচ্ছে না। ২০১৩ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় ২০১৭ সালে। তখন প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত।

প্রকল্পে দুইটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। দোহাজারি থেকে চকরিয়া তমা কন্সট্রাকশন এন্ড কোং লিঃ- লট-১, অন্যটি হচ্ছে চকরিয়া-রামু হয়ে কক্সবাজার-সিটি জয়েন্ট ভেঞ্চার (চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লি.)- লট-২। লট-১ এ পাঁচটি স্টেশন হবে: দোহাজারি, সাতকানিয়া, লোহাগাড়ার আধুনগর ইউনিয়ন, হারবাং এবং চকরিয়ায়। লট-১ এ ব্রিজ হবে ১৮টি, কালভার্ট হবে ৯৮টি, রুট আন্ডারপাস হবে ২৭টি, এ্যালিফ্যান্ট আন্ডারপাস হবে ২টি, এ্যালিফ্যান্ট ওভারপাস হবে ১টি। লট-১ এ স্লিপার বসানো হয়েছে প্রায় ১২ কিলোমিটার।

কাজ শেষ ও রেল চালুর ব্যাপারে লট-১ এ তমা কন্সট্রাকশনের সহকারী ম্যানেজার নাজমুল হোসাইন বলেন, আমাদের ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, বাদবাকি কাজ আগামী বছর জুনের আগে শেষ হবে। লট-২ চকরিয়া-রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত মোট ৪টি স্টেশন হবে- ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু, কক্সবাজার। এখানে ব্রিজ হবে ২০টি, ১০৬টি কালভার্ট, রুট আন্ডারপাস ২০টি, স্লিপার বসানো হয়েছে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার। লট-২ ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান, আমাদের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে শেষ হবে।

প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য, বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, পাহাড়ের বুক চিরে, আবার কিছুদূর জলাশয়ের মাঝখানে, আবার কিছুদূর ফসলি জমির মাঝখানে দিয়ে যাওয়া দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত পর্যটন নগরী কক্সবাজার রেলপথ ভ্রমণ প্রকৃতির সৌন্দর্য্য অবলোকন করতে করতে সত্যিই ভ্রমণপিপাসুদের আনন্দিত ও মনোমুগ্ধ করবে। কক্সবাজারের রেল স্টেশন হবে আরও বেশি দৃষ্টিনন্দন। ঝিনুক আকৃতির অত্যাধুনিক এ স্টেশনে থাকবে যাবতীয় সকল সুযোগ-সুবিধা। যাত্রীরা স্টেশনের লকারে মালামাল রেখে সৈকত ঘুরে ফের গন্তব্যে ফিরতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ রেলপথ পর্যটন খাত ছাড়াও কক্সবাজারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে এ অঞ্চলের মৎস্য সম্পদ, লবণ, রাবারের কাঁচামাল, বনজ ও কৃষিপণ্য পরিবহন ব্যবস্থা আগের চেয়ে সহজতর হবে। কমখরচে পণ্য পরিবহন করা যাবে। রেলে নির্জঞ্জাট ভ্রমণের সুযোগে পর্যটকের সংখ্যাও বাড়বে।

রেল চালু নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহের কমতি নেই। রামুর জোয়ারিয়ানালার বাসিন্দা রহিম বলেন, আমার বয়স এখন ৭০ বছর। এখন দেখছি রেললাইন বসে গেছে, হয় তো বেঁচে থাকতেই দেখে যেতে পারব কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এই রেললাইনে দীর্ঘ ৯ মাস শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছি। ভালো আয়-রোজগারও করেছি। এখন ট্রেন আসলেও কাজ-কর্ম পাব এটাই আশা করছি। আরেক বাসিন্দা ছৈয়দুল করিম বলেন, রেললাইনের দ্রুতগতিতে কাজ যে চলছে এতে অনেক খুশি লাগছে। অনেক সময় মনে হতো কোনো দিন কক্সবাজারে ট্রেন আসবে না। কিন্তু এখন যে রেললাইন বসে যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে দ্রুত কক্সবাজার ট্রেন আসবে এবং আমরা সহজে ঢাকা-চট্টগ্রাম যেতে পারব।

আবদুর রহমান নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ট্রেন আসলে কক্সবাজারের উৎপাদিত লবণ, মাছ, সবজি দ্রুত ঢাকা-চট্টগ্রাম বিক্রি করা যাবে। এতে আমরা লাভবান হতে পারব এবং আয়ও বাড়বে। পর্যটননগরী কক্সবাজারকে ঘিরে চলছে সরকারের ১৯১টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। যার মধ্যে দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন অবকাঠামো উন্নয়ন পর্যটন অর্থনীতিতে সুবাতাস বয়ে আনার পাশাপাশি বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূচনা করবে বলে মনে সংশ্লিষ্টরা। কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এখন বছরজুড়েই কক্সবাজারে পর্যটক আসেন। তবে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পর্যটকের আগমন বেশি। রেলের মতো নিরাপদ বাহন চালু হলে মৌসুমের বাইরেও পর্যটক বাড়বে। পর্যটক যত বাড়বে, তত বেচাকেনা বাড়বে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্যের বিক্রি বাড়বে। লেনদেনও বাড়বে।

কক্সবাজারে যেতে এখন পর্যটকদের প্রধান ভরসা সড়কপথ। আকাশপথে আসা পর্যটকের সংখ্যা সীমিত। পর্যটন অর্থনীতি চাঙা থাকে মূলত শুষ্ক মৌসুমে। রেলওয়ে হলে সারা বছর পর্যটক পাওয়ার আশা করছেন হোটেল-মোটেলের উদ্যোক্তারা। পর্যটনের পর কক্সবাজারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কয়েকটি খাত হলো-লবণ, কৃষিপণ্য, মৎস্য ও শুঁটকি। এসব পণ্য কম খরচে আনা-নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। কৃষিপণ্য সহজে আনা-নেওয়ার সুবিধা থাকলে কৃষকেরও দাম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যেও কিছুটা গতি আনতে পারে নতুন রেললাইন।

সূত্র: ইনকিলাব

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, ট্রেন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন