৮ ও ৯ মে হরতাল
পার্বত্য নিউজ: হেফাজতে ইসলামের গণতান্ত্রিক সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান এবং হতাহতের ঘটনার প্রতিবাদে ৮ ও ৯ মে হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয় জোট। সমাবেশে নিহতদের জন্য ৭ মে মঙ্গলবার বাদ আসর সারা দেশে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
কেন্দ্রীয়ভাবে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন এ ঘটনা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রদান করবেন।
সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের ও জোটের জেষ্ঠ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এ কর্মসূচি চূড়ান্ত করেন বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, “হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরে অবস্থানের সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক ছিলো। তারা নিরস্ত্র অবস্থায় সেখানে জিকির করছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যার পর র্যাব, পুলিশ, বিজিবি সকল বাতি নিভিয়ে দিয়ে এক বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি করে। সেখানে হাজার হাজার আলেম-ওলামাদের হত্যা করা হয়েছে।”
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আলেম-ওলামারা মহানবী (সা.) এর বিরুদ্ধে কটূক্তির প্রতিবাদ জানাতে ঢাকার শাপলা চত্বরে সমবেত হয়েছিলেন। এভাবে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জাতি হিসেবে লজ্জায় সারা বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা নত হয়ে গেছে। এ পৈশাচিক হত্যাকান্ডের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।”
তিনি বলেন, “ আমরা আশা করেছিলাম সরকার হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আলোচনা করে যতটুকু সম্ভব তাদের দাবি মেনে নিবে।”
এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা বলেন, “ দেশের মিডিয়াগুলো অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সরাসরি সম্প্রচার করে থাকে। অথচ গতকাল এতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটলেও তাদের সরাসরি সম্প্রচার করতে দেয়া হয়নি।”
দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশনের সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় সরকারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “সরকারের মুখোশ উন্মোচিত হবে এ জন্যে তারা টেলিভিশনগুলোকে সম্প্রচার করতে দেয়নি।”
রবিবার মধ্যরাতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ২৫০০ হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী নিহত হওয়ার খবর সিএনএন এবং আল-জাজিরার মাধ্যমে জানা গেছে বলে জানান তিনি।
নির্দলীয় সরকারের সুস্পষ্ট ঘোষণা চেয়ে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া মহাজোট সরকারকে ৪৮ঘন্টার সময় বেধে দিয়েছিলেন গত ৪মে। মতিঝিলের শাপলা চত্বরের সমাবেশ থেকে সরকারকে এই আল্টিমেটাম দেন তিনি। সোমবার সন্ধ্যায় এই সময় সীমা শেষ হলেও এই দাবিতে পরবর্তী কর্মসূচি কি হবে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, লে. জে. মাহাবুবুর রহমান (অব.), ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, এম কে আনোয়ার, ড. আব্দুল মঈন খান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ(অব.), সাদেক হোসেন খোকা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও জোটের শরিক দলের নেতাদের মধ্যে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির সভাপতি ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশে ইসলামিক পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মবিন, জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল হালিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।