যে গ্রামে সূর্যের আলো আসে আয়না দিয়ে

fec-image

ইতালি ও সুইজারল্যান্ডের সীমান্তের উপত্যকায় অবস্থিত ছোট একটি গ্রাম ভিগানেলা। পাহাড়-পর্বতে ঘেরা গ্রামটি অদ্ভুত এক সমস্যায় ভুগছিল দীর্ঘদিন। গ্রামটি প্রতিবছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস অন্ধকারে থাকে। সেখানে পৌঁছায় না সূর্যের আলো।

সূর্যের আলোর অভাবে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয় বলে অনেকেই গ্রামটি ছেড়ে সূর্যের আলো আছে, এমন এলাকায় চলে গেছেন। গ্রামের বাসিন্দাদের এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে ১৯৯৯ সালে একটি সমাধান প্রস্তাব করেন মেয়র ফ্রাঙ্কো মিদালি। ভাইস নিউজের তথ্যমতে, তাঁর সেই প্রস্তাব হচ্ছে, শহর চত্বরে সূর্যের আলো প্রতিফলিত করতে একটি বিশাল আকারের আয়না স্থাপন করা।

স্থপতি গিয়াকোমো বনজানি এই চ্যালেঞ্জ নেন। তিনি প্রকৌশলী জিয়ান্নি ফেরারির সহায়তায় আট মিটার প্রশস্ত, পাঁচ মিটার দীর্ঘ একটি আয়নার নকশা করেন। ২০০৬ সালে এই আয়না স্থাপন করা হয়। এর ফলে আয়নায় প্রতিফলিত হয়ে দিনে ছয় ঘণ্টা সেই গ্রামে সূর্যের আলো পড়তে থাকে।

তবে সূর্যের সরাসরি আলোর মতো সেই আলোর উত্তাপ ততটা শক্তিশালী নয়। প্রতিফলিত আলো স্কয়ারকে উষ্ণ করে তোলে। পাশাপাশি বাড়িঘরগুলোও আলো পায়। আয়নাটি শুধু শীতকালেই ব্যবহৃত হয়। বাকি সময় ঢেকে রাখা হয়।

এ উদ্যোগ শুধু ব্যবহারিক সুবিধাই নিয়ে আসেনি; বরং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছে। সিলভিয়া ক্যাম্পোরেসি নামের একজন মাল্টিমিডিয়া শিল্পী ২০২০ সালে ভিগানেলা গ্রামটি পরিদর্শন করেন এবং আয়নাটি নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করেন।

সাবেক মেয়র মিদালি ২০০৮ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এই প্রকল্পের পেছনে বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই , ছিল শুধু মানবিক কারণ। তিনি বলেন, শীতকালে ঠান্ডা ও অন্ধকারে ডুবে যাওয়া শহরটির মানুষেরা যেন নিজেদের মধ্যে সামাজিক মেলামেশা করতে পারেন, সেই ইচ্ছা থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন