অবশেষে পুলিশ কর্মকর্তা তৌহিদকে প্রত্যাহার
পেকুয়া প্রতিনিধি:
পুলিশ জনগণের সেবক হিসাবে কাজ করে। পুলিশ মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে পারেনা। মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু তারই ব্যতিক্রম কক্সবাজারের পেকুয়ায়।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা ২ মিনিটে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৌমুহনী ষ্টেশন এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। চারদিকে উৎসুক মানুষের চোখ। হঠাৎ চোখে পড়ল একজন দাঁড়ি টুপিওয়ালা মানুষকে চৌরাস্তার মোড়ে সিজদা দিতে বাধ্য করছেন পেকুয়া থানার সেই বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিজদাকারী পিকআপ চালক মৌলানা মো. মীর কাশেম (৩৫) কক্সবাজার পৌরশহরের নাজিরারটেক এলাকার নুরুল আলমের পুত্র।ওই চালক গাড়ি নিয়ে চৌমুহনীর মোড় ফিরতে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ওই পুলিশ কর্মকর্তার গা ঘেঁষে গাড়িটি চলে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আর সে অপরাধেই উত্তেজিত পুলিশ কর্মকর্তা তাকে অভিনব কায়দায় এ শাস্তি দিলেন। চৌরাস্তার মাঝখানে নিয়ে শত শত মানুষের সামনে তাকে শাস্তি হিসেবে লাথি মেরে সিজদা দিতে বাধ্য করায় পুলিশ অফিসার তৌহিদ।
সে ওই চালককে সিজদা দিতে দিয়ে নায়কের মত কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রহস্য করছেন। আর শত শত মানুষ তার এ দৃশ্যের ছবি ধারণ করছেন। তিনি পেকুয়া থানার কর্তব্যরত এস আই।
এ সময় আশপাশে শত শত মানুষ এ দৃশ্য দেখে পুলিশের পোশাক পরিহিত ওই এসআইকে নিয়ে নানা ধরণের মন্তব্য করেন। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনার চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিটি ভাইরাল হয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে পুরো পেকুয়া প্রশাসনের মাঝে।
ঘটনার ৮ঘন্টার মাথায় পেকুয়া থানার বিতর্কিত সেই পুলিশ কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলামকে অবশেষে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। কিছু দিন আগে তিনি নিজে দাঁড়িয়ে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরকে গাড়িতে তুলে দিয়ে সুনাম অর্জন করেছিলেন। সেই পুলিশ কর্মকর্তা কে আজ ধিক্কার দিয়ে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে পুলিশ প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, পিকআপ ভ্যানটি এসআই তৌহিদের একেবারে পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তাকে ধাক্কা দেয়নি। এর পরও ওই এসআই চালকের আসনে বসা ব্যক্তিটিকে নামিয়ে প্রথমে সজোরে চড়-থাপ্পড়, এর পর কান ধরে উঠাবসা করায়। এতেও ক্ষান্ত হননি তিনি, শেষপর্যন্ত ওই চালককে চৌরাস্তার মাঝখানে নিয়ে গিয়ে কয়েকদফা সেজদা দিতেও বাধ্য করেছে। আর এ দৃশ্য শত শত লোক প্রত্যক্ষ করেছে।
পেকুয়ার কয়েকজন সংবাদকর্মী বলেন, ‘ওই চালক অপরাধ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তা না করে প্রকাশ্যে যে কাণ্ড ঘটিয়েছে তা সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায়না।’
এদিকে ওই বির্তকিত এস আই তৌহিদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসি জিয়া মোহাম্মদ মোস্তাফিজ ভুইয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পেকুয়ার সচেতনমহল।
পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌহিদুল ইসলাম কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, চৌমুহনীতে যানজট নিরসনের জন্য দায়িত্ব পালনের সময় ওই পিকআপ তাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। এর পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। ছবিতে দাঁড়িয়ে থাকার ভঙ্গি আপনার আহত হবার দাবি প্রমাণ করে কিনা জানতে চাইলে কোন উত্তর দেননি এস আই তৌহিদ।
এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো. মোস্তাফিজ ভূঁইয়া পার্বত্যনিউজকে জানান এসআই তৌহিদুল ইসলামকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করেছেন।