ইউপি নির্বাচন নিয়ে রাঙামাটিতে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলো অসহায় সিদ্ধান্তহীন

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন

স্টাফ রিপোর্টার:
দিন যতই যাচ্ছে ততই ঘনিয়ে আসছে নির্বাচন। রাঙামাটি ১০টি উপজেলার ৪৮টি ইউনিয়নে একযোগে নির্বাচন হাজির হচ্ছে আগামী ৪জুন। কিন্তু পাহাড়ে নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলো।

অনিশ্চয়তার আশংকায় সম্ভাব্য প্রার্থী এবং নেতা-কর্মীরা হতাশ ও অস্থির হয়ে উঠছেন। সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্রের ভারে চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামীলীগ, বিএনপির ও জাতীয় পার্টি নেতারা। কারণ স্থানীয় আঞ্চলিক দলগুলোর সমর্থন ছাড়া এসব আসন ধরে রাখা খুবই কঠিন। দূর্গম পাহাড়ে কেন্দ্র দখল ও অস্ত্রের অাতঙ্কে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও প্রস্তুতি নিতে পারছে না খোদ ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দল জেলা আওয়ামীলীগ। তাই সিদ্ধান্তহীনতায় হাবুডাবু খাচ্ছেন দলীয় নেতা-কর্মী । একই অবস্থা অন্য দু’রাজনৈতিক দল জেলা বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ক্ষেত্রেও। তবে মাঠে নেমেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও ইউপিডিএফ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। পুরোদমে প্রচারণা কার্য চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। জয়ের ব্যাপারে শক্ত অবস্থানে স্থানীয় আঞ্চলিক দু’রাজনৈতিক দল।

অন্যদিকে, নির্বাচনের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছে রাঙামাটির ৪৮ ইউনিয়নে ৭৪ সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ২৪ প্রার্থী।

রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন জানান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার ১০ উপজেলার মোট ৪৯ ইউনিয়নের মধ্যে ষষ্ঠ ধাপে ৪ জুন ভোট হবে ৪৮টিতে। কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে নির্বাচন স্থগিত রেখেছে নির্বাচন কমিশন (সিইসি)।

৪৮টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন মোট ১৪৯ প্রার্থী। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- স্বতন্ত্র ৮২, আওয়ামী লীগ ৪১, বিএনপি ২০, জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) ৪ এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের (হাতপাখা) ২ জন।

তবে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় কেউ চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হলেও ওইসব ইউনিয়নে সাধারণ ওয়ার্ডে ৭৪ এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে ২৪ জন সদস্য বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও ৪৮ ইউনিয়নে সাধারণ ওয়ার্ডে ১০৪৮ এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৩৩৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বর জানান, ইউপি নির্বাচনে রাঙামাটি কয়েকটি উপজেলা ছাড়া অন্যান্য উপজেলাগুলোতে আওয়ামীলীগ সমর্থীত প্রার্থীরা শক্ত অবস্থানে। কিন্তু অবৈধ অস্ত্রের কাছে দূর্বল। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্রবাজি বন্ধ করা না হলে সুষ্ট পরিবেশে নির্বাচন অনিশ্চিত।

একই অভিযোগ করলেন জেলা বিএনপির সভাপতি শাহ আলম। তিনি বলেন, পাহাড়ে আঞ্চলিক দলগুলোর সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের ভয়ে ২৭টি ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয়নি। বাকি যেসব ইউনিয়নে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে সেগুলোও আশংকায়।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী ৪ জুন রাঙামাটি জেলার দশটি উপজেলায় যেসব ইউনিয়নে ভোট হবে সেগুলো হল- কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া, ফটিকছড়ি, ঘাগড়া ও কমলপতি, জুরাছড়ি উপজেলার বনযোগীছড়া, দুমদুম্যা, জুরাছড়ি ও মৈদং, বিলাইছড়ি উপজেলার বিলাইছড়ি সদর, ফারুয়া ও ক্যাংড়াছড়ি, লংগদু উপজেলার আটারকছড়া, ভাসান্যাদম, বগাচতর, গুলশাখালী, কালাপাকুজ্যা, লংগদু সদর ও মাইনীমূখ, রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া, ঘিলাছড়ি ও গাইন্দ্যা, বরকল উপজেলার আইমাছড়া, বড়হরিণা, বরকল সদর, ভূষনছড়া ও সুবলং, নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট, ঘিলাছড়ি, নানিয়ারচর সদর ও সাবেংক্ষ্যং, বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইছড়ি, বঙ্গলতলী, সারোয়াতলী, খেদারমারা, মারিশ্যা, রুপকারী, সাজেক ও আমতলী, রাঙামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা, বালুখালী, জীবতলী, কুতুকছড়ি, মগবান ও সাপছড়ি এবং কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম, কাপ্তাই, রাইখালী ও ওয়াগ্গা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন