ইউরেনিয়াম উদ্ধারের দাবি গোয়েন্দা পুলিশের
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে ৫০ কোটি টাকার ‘ইউরেনিয়াম’ উদ্ধারের দাবি করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) কৃষ্ণপদ রায় জানান, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ শনিবার ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বনানীর একটি বাসা থেকে দুই পাউন্ড ওজনের কথিত ওই ইউরেনিয়াম পাওয়া যায়।
“তারা দাবি করেছে- এগুলো ইউরেনিয়াম। এগুলো বিক্রির জন্য তারা গত ছয় মাস ধরে ক্রেতা খুঁজছিল। উদ্ধার করা বস্তু আসলেই ইউরেনিয়াম কি না তা পরীক্ষার জন্য আমরা আনবিক শক্তি কমিশনে পাঠাব।”পরীক্ষার ফল জানতে সপ্তাহ দুয়েক লাগতে পারে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
ইউরোনিয়াম একটি উচ্চ ঘনত্বের তেজস্ক্রিয় মৌল, যা পারমনবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
বনানীর সেই বাসা থেকে পাওয়া কথিত সেই ইউরেনিয়ামের ব্যাগ, চামড়ার গ্লাভস, জ্যাকেট, ক্যাটালগসহ বেশকিছু সরঞ্জাম এবং গ্রেপ্তার ১১ জনকে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনেরও আয়োজন করা হয়।
গ্রেপ্তার ১১ জন হলেন- ময়নাল হোসেন সাগর (৪৫), হুমায়ুন কবির (৪৮), কাইয়ুম চৌধুরী (৫৪), কায়েস আহমেদ (৫৪), মো. খালেক (৪৪), স্বপন মোল্লা (৪৫), ফিরোজ (৪৫), মাসুদুর রহমান নাসিম (৪২), আসলাম মিয়া (৬১), মঈনুদ্দীন রাজন (৪৫) ও তোফায়েল আহমেদ পাটোয়ারী (৪৮)।
এদের মধ্যে আসলাম একজন গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। বনানীতে তার বাসা থেকেই ‘ইউআর – (এ)’ লেখা খয়েরি রংয়ের চামড়ার বাক্সটি উদ্ধার করা হয় বলে কৃষ্ণপদ রায় জানান।
তিনি বলেন, “বিদেশি আমদানি নিষিদ্ধ বস্তু বিক্রির কথা বলে এরা প্রতারণা করে আসছিল। যে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা এর সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত। কেউ বিক্রির জন্য ক্রেতা সংগ্রহ করত, কেউ এটি সংরক্ষণ করত।”
উপ কমিশনার কৃষ্ণপদ বলেন, কথিত ওই ইউরেনিয়াম বিক্রির জন্য চক্রটি একটি ভিডিও ব্যবহার করত। ৫০ হাজার টাকা ‘সিকিউরিটি মানি’ রেখে তারা সম্ভাব্য ক্রেতাদের ওই ভিডিও দেখাত। আর কেউ সরাসরি দেখতে চাইলে ৫০ লাখ টাকা ‘সিকিউরিটি মানি’ রাখা হতো বলে গ্রেপ্তাররা জানিয়েছে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে এক নারীকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ের বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।নাম প্রকাশ না করে ওই নারী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তিনি গ্রেপ্তার কায়েসের স্ত্রী। তার স্বামী গত বৃহস্পতিবার রাতে ‘এক মিটিংয়ে’ যাওয়ার পর গ্রেপ্তার হন। রোববার সকালে তাকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে আনার খবর পেয়ে তিনিও এসেছেন।
ওই নারীর দাবি, কায়েস ‘মজুদদারির ব্যবসা’ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে ‘তদবির’ করেন। অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে তার পরিচয় আছে।
কথিত ইউরেনিয়ামের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, তার স্বামীর মুখে এরকম কিছু তিনি শোনেননি।