ইরানের সমরাস্ত্র নিয়ে নতুন আতঙ্কে ইসরাইল

fec-image

ইরানকে নিয়ে নতুন আতঙ্কে ভুগছে ইসরাইল। সমরাস্ত্র তথা ড্রোন শিল্পে ইরানের ইর্ষণীয় সাফল্যই ইসরাইলের এই আতঙ্কের মূল কারণ। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে এ আতঙ্ক প্রকাশ পেয়েছে।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, শুক্রবার ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ইরান তার ড্রোন এবং প্রিসিশন গাইডেড মিউনিশন (নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম যুদ্ধাস্ত্র) বিক্রির বিষয়ে অন্তত ৫০টি দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে।

তিনি আরও বলেছেন, নানা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বাইরে নিজের উন্নত অস্ত্রের বিস্তার ঘটাচ্ছে ইরান।

ইরানি ড্রোন শাহেদ ১৩৬-এর প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো— এটি বিস্ফোরক নিয়ে সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে নিজেই বিস্ফোরিত হয়। এতে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে প্রতিপক্ষকে দ্রুত চাপে ফেলতে তাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেলক্ষেত্র ও গ্যাসক্ষেত্রের মতো স্থাপনাগুলোতে নিখুঁত হামলা চালানো যায়। অথচ আশপাশের কোনো কিছুর উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষতি হয় না। যেমনটি ইউক্রেনে করছে রাশিয়া।

ইরানি ড্রোনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো— এগুলো দামে সস্তা। ফলে যুদ্ধের ব্যয়ভার কমাতে ব্যাপক সহায়ক এসব ড্রোন। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্য কোনো ড্রোন দিয়ে সেটি সম্ভব নয়। এ কারণেই ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসলামিক জিহাদ এবং ইরাক ও সিরিয়ার ইরানসমর্থিত যোদ্ধাদের পক্ষে ইরানি ড্রোন ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে।

শুধু এসব যোদ্ধাই নয়, বরং সাম্প্রতিক সময়ে অনেক দেশই প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে ইরানি ড্রোন কিনছে। আফগানিস্তান, আজারবাইজান, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিস্তান ও কাজখস্তানের মতো দেশগুলোও ইরানি ড্রোনের অন্যতম ক্রেতা। যদিও এসব দেশ তুরস্ক ও অন্যান্য দেশের ড্রোনও মজুত করছে।

ইরানি ড্রোন তথা সমরাস্ত্র শিল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অস্ত্র শিল্পে দেশটির অগ্রগতি থামাতে তেহরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছেন পশ্চিমারা। কিন্তু তার পরও ইরানকে থামাতে পারছে না।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শনিবার চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞাকে তেহরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। আগে অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করত, এখন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে তিন দিনের বেইজিং সফরে গিয়ে ওই সাক্ষাৎকার দেন তিনি। শনিবার তার সাক্ষাৎকারটি প্রচার করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন