উখিয়া-টেকনাফ সড়কে চেকপোস্ট নিয়ে স্থানীয়দের অসন্তোষ

fec-image

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ সড়কে একাধিক চেকপোস্ট স্থাপন নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করতে দেখা গেছে। এসব চেকপোস্টের কারণে কোন সুফল আসছে না বলেও দাবি স্থানীয়দের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী বাজারে প্রধান সড়কে ১শ গজের মধ্যে দুইপার্শ্বে দুটি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এতে প্রতিনিয়ত স্থানীয়রা বিড়ম্বনা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের।

তাদের একজন পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল নুরুল আলম সওদাগর বলেন, অন্য জায়গা থেকে কিছু কাঁচা শাক-সবজি ক্রয় করে এনে থাইংখালী বাজারে বিক্রি করতাম। এখন চেকপোস্টে হয়রানির কারণে তা বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দেখানোর পরও ছাড় দেয় না।

পালংখালী ৫নং ওয়ার্ডের হাকিমপাড়া এলাকার নুর হোসেন বলেন, চেকপোস্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা অবাধে চলাফেরা করতে পারলেও স্থানীয়রা বাধাগ্রস্ত হয় প্রতিনিয়ত।

রহমতের বিল এলাকার শামশুল আলম সওদাগর বলেন, থাইংখালী বাজারে তার একটি খাবার হোটেল রয়েছে। হোটেলে দৈনিক ৫/৬ হাজার টাকার বিক্রি হতো। এখন চেকপোস্টের কারণে দূরপাল্লার যানবাহন দাঁড়াতে পারে না। যার ফলে শ্রমিক বা স্থানীয় লোকজনের আনা-গোনা কমে যাওয়ায় বিক্রি কমে গেছে। এতে সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

থাইংখালী বাজারপাড়া এলাকার কাউসার উদ্দিন বলেন, চেকপোস্টের কারণে দৈনন্দিন কাজে বাঁধাগ্রস্তসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি চেকপোস্ট দুটি অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।

রাজাপালং ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল হক বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে নির্ধারিত ক্যাম্পের বাইরে যেতে না পারে সে লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক সেনা, বিজিবি ও পুলিশী চেকপোস্টে করা হলেও রোহিঙ্গারা ঠিকই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এদিকে চেকপোস্টে গুলোতে রোহিঙ্গা তল্লাশীর নামে স্থানীয়রা হয়রানির শিকার হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, উখিয়া-টেকনাফের চেকপোস্ট গুলোতে চট্টগ্রামের স্থানীয় ভাষা বোঝে এমন ব্যক্তিদের নিযুক্ত করে রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি স্থানীয়দের হয়রানি মুক্ত করার কথাও জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মর্জিনা আকতার বলেন, উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এবং প্রধানসড়কে ১৩টি পুলিশী চেকপোস্ট রয়েছে। রোহিঙ্গারা যাতে ক্যাম্প থেকে বাইরে যেতে না পারে এবং ইয়াবা পাচারসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে এসব চেকপোস্টে স্থাপন করা হয়েছে। এ সময় তিনি অন্যান্য সংস্থার চেকপোস্টের বিষয়ে কিছুই বলেননি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন চেকপোস্টের বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উখিয়া, চেকপোস্ট, টেকনাফ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন