এখন অনলাইনেই জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন

Untitled-136ডেস্ক রিপোর্ট:
উদ্বোধন হলো অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন কার্যক্রম। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

এবার ঘরে বসেই জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন ভোটাররা। এমন সুযোগ নিয়ে যাত্রা শুরু করলো তথ্য সংশোধনের এই অনলাইন প্রযুক্তি।

উদ্বোধনকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ওয়েবসাইটটিকে নিরাপদ করা হয়েছে যাতে কারো অ্যাকাউন্ট অন্য কেউ হ্যাক করতে না পারে বা দেখতে না পারে। এজন্য আমরা বুয়েটের এক্সপার্ট দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যবহারের সময় কোনো সমস্যা দেখা দিলে আমাদের একটা টেকনিক্যাল এক্সপার্ট দল আছে, তারা সমস্যার সমাধান করে দেবে।’

জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘নাগরিকেরা এ সুবিধা পাওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট www.ec.org.bd ঢুকে নিজের মোবাইল ফোন নম্বর দিলে ইসি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি পাসওয়ার্ড মোবাইল ফোনে চলে যাবে। এরপর তিনি ওই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন।’

সালেহ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে সব ধরনের নির্দেশনা দেয়া থাকবে। প্রতিদিন পাঁচশজনকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময়সূচি দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে অ্যাপয়েন্টমেন্টের সেবা পাওয়া যাবে।’

সালেহ বলেন, ‘অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য বা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য আবেদন করা গেলেও সেই আবেদনের সফট কপি প্রয়োজনীয় প্রমাণাদিসহ সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা এলাকার নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, নতুন যারা ভোটার হতে আগ্রহী তারা রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া যারা ভোটার আছেন তারা রেজিস্ট্রেশনের মধ্যমে এ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিজস্ব তথ্য তৈরি, সংশোধন, পরিবর্তন ও ছবির সাক্ষ্যর পরিবর্তন করতে পারবেন। হারিয়ে যাওয়া ও নষ্ট হওয়া পরিচয়পত্রও পুনরায় পাওয়ার জন্য আবেদন করা যাবে।

যেভাবে তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে-

তথ্য সংশোধনের জন্য ভোটারদের প্রথমে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটিwww.ec.org.bd/bangla/ প্রবেশ করতে হবে। এর পর ডান পাশের ‘এনআইডি অনলাইন সার্ভিসেস’ লেখা লিংকে অথবা সরাসরিservicees..nidw.gov.bdওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন। পরে রেজিস্ট্রেশন অপশনে গিয়ে চারটি ধাপে তথ্য পূরণ এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন শেষ হলেই মোবাইল বা ই-মেইলে যাওয়া গোপণ নম্বরের মাধ্যমে এ্যাকাউন্ট সচল করবেন।

এ্যাকাউন্ট সচল হওয়ার পর ভোটাররা ফরম পূরণের সময় দেওয়া তথ্য দেখতে পারবেন এবং তা সংশোধনের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ‘অনলাইনের মাধ্যমে নামের বানান, ঠিকানা, স্বাক্ষর, রক্তের গ্রুপ, জন্ম তারিখ ছবিসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। তবে তথ্য সংশোধের সময় অবশ্যই ইসির চাহিদামতো প্রমাণাদি দিতে হবে। এ ছাড়া যে সব এলাকায় অনলাইনের ব্যবস্থা নেই তারাও লিখিত আবেদনের মাধ্যম তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। বিদ্যমান ভোটারদের তথ্য সংশোধন শেষ হলেই ইসি স্মার্ট কার্ড প্রস্তুত শুরু করবে।

ইসি জানায়, স্মার্ট কার্ড বিতরণ ও প্রস্তুত করতে ফরাসী কোম্পানি অবারথু টেকনোলজির (oberthur technology) সঙ্গে চুক্তি করেছে নির্বাচন কমিশন। কোম্পানিটি ২০১৬ সালের জুনের মধ্যেই ৯ কোটি ভোটারের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দেবে। এতে ৭৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে।

ইসি আরও জানায়, প্রাথমিকভাবে ২৫টি কাজে স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করা হবে। এগুলো হলো- সরকারি সব অনলাইন সুবিধা, টিআইএন নম্বর (tin) প্রাপ্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, সম্পত্তি কেনাবেচা, ব্যাংক হিসাব খোলা, ব্যাংক ঋণ, সরকারি ভাতা উত্তোলন, সহায়তা প্রাপ্তি, বি আইএন, শেয়ার-বিও এ্যাকাউন্ট, ট্রেড লাইসেন্স, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, বীমা স্কিম, বিয়ে রেজিস্ট্রেশন, ই-পাসপোর্ট, ই-গভর্ন্যান্স, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, মোবাইল সংযোগ, হেলথ কার্ড, ই-ক্যাশ, ব্যাংক লেনদেন ও শিক্ষার্থীদের ভর্তি ক্ষেত্রেও এ স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করা হবে।

উদ্বোধনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ, আবু হাফিজ, মো. জাভেদ আলী, আব্দুল মোবারক, সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন