এবার ক্যাম্প ইনচার্জ ও পুলিশের উপর হামলা করলো রোহিঙ্গারা, আটক ১০

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অদুরে ৬নং ক্যাম্পে অবস্থিত নৌকার মাঠের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ক্যাম্প ইনচার্জসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছলে রোহিঙ্গারা তাদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৭/৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়লে রোহিঙ্গারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়।

এসময় সেনা সদস্য-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ১০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করতে সক্ষম হয়। শনিবার (১৬ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন।

আটককৃত সন্ত্রাসী রোহিঙ্গারা হচ্ছে কুতুপালং ক্যাম্প-২ এর মো. ইসমাইল (২৩) পিতা আব্দুর রহিম, কুতুপালং ৬ এর মাহমুদ হোসেন (৩০) পিতা মোহাম্মদ জলিল, ক্যাম্প-২ এর মোহাম্মদ আলম (১৮) পিতা হাবিব উল্যাহ, মোহাম্মদ (২৯) পিতা ছৈয়দ আলম, ভুট্টু আলম (৫০) পিতা সাহাব মিয়া, ক্যাম্প-৭ এর মো. রফিক (১৪) পিতা শামসুল আলম, ক্যাম্প-৬ এর মোহাম্মদ ইউনুছ (১৮), পিতা মোহাম্মদ আইয়ুব, মোহাম্মদ রফিক (১৮) পিতা আলী আহম্মদ, মোহাম্মদ আমিন (১৮) পিতা দিল মোহাম্মদ, ক্যাম্প-৭ এর খায়ের মোহাম্মদ (৫৫) পিতা জাহেদ হোসেন।

রবিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে এ রিপোর্ট সংগ্রহকালে কুতুপালং ক্যাম্পের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) দুইজন রোহিঙ্গা নাগরিক উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে সংঘঠিত ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, কুতুপালং ক্যাম্পের ৮/৯ কিলোমিটার অদূরে জনমানবহীন নৌকার মাঠ এলাকাটি আল ইয়াকিন গ্রুপের নেতা ইসমাইল গ্রুপের নিয়ন্ত্রনে ছিল। এক সময় সেখানে রোহিঙ্গা যুবকদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। তিন মাস আগে ইউনুছ পুলিশের হাতে আটক হওয়ার সুযোগে নৌকার মাঠ এলাকা দখল দেয় আরসা গ্রুপের লীডার মার্স নাম ধারী এক সন্ত্রাসী। গত এক মাস ইউনুছ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নৌকার মাঠ পুনরুদ্ধারে চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে ইতি পূর্বে উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার হামলা, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

রবিবার (১৭) রাত আড়াইটার দিকে আল ইয়াকিনের লীডার ইউনুছ গ্রুপ নৌকার মাঠটি দখলে নিতে গেলে দু-গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ সেনা সদস্যের সাথে করে ঘটনাস্থলে পৌছলে উচ্ছৃঙ্খল রোহিঙ্গারা তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে।

এসময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৭/৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়লে রোহিঙ্গারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থল থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ১০ জন রোঙ্গিাকে আটক করে।

প্রতক্ষ্যদর্শী পুলিশ কর্মকর্তা প্রভাত জানান, কালো হাফপ্যান্ট পরিহিত হাজার হাজার রোহিঙ্গা দা-কিরিজ নিয়ে একে অপরের উপর হামলা, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিল। মনে হচ্ছিল একটি রণক্ষেত্র।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, আটক ১০ জন রোহিঙ্গাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ ঘটনা নিয়ে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গারা জানিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন