এবার রোহিঙ্গাদের জন্য ধারালো সরঞ্জাম মজুদ করেছে ওয়ার্ল্ড ভিশন

fec-image

রোহিঙ্গাদের মাঝে এনজিও কর্তৃক ধারালো সরঞ্জাম বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করা হলেও নতুন করে আবারো দা, খুন্তি, লাঠিসহ বিভিন্ন উপকরণ মজুদ করছে ওয়ার্ল্ড ভিশন। উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের মুহুরীপাড়া এলাকার একটি ওয়্যারহাউজে (গুদাম) এসব দেশীয় অস্ত্র মজুদ করার প্রমাণ মেলেছে। এর আগে কৃষি উপকরণের নামে এনজিও সংস্থা মুক্তি কক্সবাজার ও শেড এর ধারালো সরঞ্জাম বিতরণের অভিযোগে বেশকিছু প্রকল্প বন্ধ করে দেন এনজিও ব্যুরো।

এদিকে ক্যাম্পকেন্দ্রিক কর্মরত এনজিও সংস্থাগুলো আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়মিত খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করলেও এ ধরণের ধারালো যন্ত্রপাতি রোহিঙ্গাদের মাঝে সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছে স্থানীয়রা।

তাঁদের একজন অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি শরীফ আজাদ বলেন, এনজিওগুলো রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে ধারালো সরঞ্জাম তুলে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। সমস্ত চাহিদা পুরণের পরও আশ্রিত এসব রোহিঙ্গাদের অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি এনজিওগুলো স্থানীয়দের সাথে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়্যার হাউজের মালিক আনিসুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে এনজিওসংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন আমি গুদাম হিসেবে একটি ঘর ভাড়া দিয়েছি। কখনো তাদের কার্যক্রমে সন্দেহজনক কিছু দেখিনি। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু লোহার রড, লাঠিসহ বিভিন্ন উপকরণ মজুত করার দৃশ্যটি সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মাঝে এধরণের সরঞ্জাম বিতরণে সরকারের বিধিনিষেধ রয়েছে বলে শুনেছি।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের লজিষ্টিক অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ধারালো কোন সরঞ্জাম রাখা হয়নি। কিছু নিড়ানি, লাঠি, খুন্তি রাখা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ভিশনের কো-অর্ডিনেটর আবদুল বারেক, মিটিংয়ের ব্যস্ততা দেখিয়ে কমিউনিকেশন অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

কথা হয় ওয়ার্ল্ড ভিশনের সিনিয়র কমিউনিকেশন অফিসার জেবিয়ার স্ক্যু’র সাথে। তাঁর কথা মতো এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে তাঁকে ৮ ডিসেম্বর ইমেইল করা হয়। প্রতি উত্তরে তিনি দ্রুত তথ্য প্রদানের কথা জানালেও ৫ দিনেও কোন প্রকার তথ্য না দেয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সামসু দৌজা বলেন, মহুরীপাড়ায় ওয়ার্ল্ড ভিশনের ওয়্যার হাউজে ধারালো সরঞ্জাম মজুদের খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

গত ২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট কোটবাজার স্টেশনে ভালুকিয়া সড়কের রনজিত দাশের কামারের দোকান থেকে এনজিও মুক্তি কক্সবাজারের নামে অর্ডারকৃত বিপুল বেশকিছু ধারালো অস্ত্র জব্দ করে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন। এরপরে ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ উখিয়ার মালভিটাপাড়াস্থ শেড অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ ধারালো দা, খুন্তি, বেলচা, হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উখিয়া, ওয়ার্ল্ড ভিশন, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন