কক্সবাজারে কৃষি মেলায় মাশরুমের স্টলে ক্রেতার ভিড়

Coxs Mella 29-05-2013

আবদুল্লাহ নয়ন, কক্সবাজার:
কক্সবাজার শহরের পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী কৃষি, মৎস্য, প্রাণি সম্পদ প্রযুক্তি ও বীজ মেলায় এবারের অন্যতম ‘প্রদর্শনী স্টল’ হিসেবে ক্রেতা ও দর্শকদের কাছে সাড়া জাগিয়েছে দেশিয় মাশরুম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘কক্স মাশরুম’।
তিন দিন ব্যাপী আয়োজিত বুধবার মেলার ২য় দিনে স্টল ঘুরে দেখা গেছে, মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতার ভিড় ১ম দিনের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। নার্সারী ও প্রযুক্তি স্টলের পাশাপাশি ক্রেতারা ভিড় জমিয়েছেন মাশরুমের স্টলেও।
শহরের বিডিআর ক্যাম্প থেকে মেলা দেখতে এসে সবজির জন্য ‘তাজা মাশরুম’ কিনেছেন স্কুল শিক্ষিকা শামীম বিনতে আলী (৩২)।
তিনি জানান, “এই প্রথম দেশীয় উৎপাদনে তাজা মাশরুম কিনেছেন। মাশরুমের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কে জেনেই তিনি কিনতে উদ্ধুদ্ধ হয়েছেন বলেও জানান। ”
মুদি দোকান ব্যবসায়ী আমির হোসেন (৪২)। এসেছেন শহরের বাহারছড়া থেকে। তিনি ‘পাওয়ার মাশরুম’র একটি ‘কৌটা’ কিনে নিয়েছেন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, দেহের উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ‘মাশরুম’ অধিক কার্যকর জেনেই তিনি ‘পাওয়ার মাশরুম’ কিনেছেন।
সকাল গড়িয়ে দুপুর পার হলেও মেলায় তেমন দর্শনার্থী কিংবা ক্রেতার ভিড় জমেনি। তবে বিকেল এবং সন্ধ্যার পর মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থী বেড়ে যায়। অন্য স্টলের চেয়ে মাশরুমের স্টলেই ক্রেতার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বেশি।
‘কক্স মাশরুম’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক শহিদুল হক কাজল জানিয়েছেন, পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি নির্ভর বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিই মাশরুম চাষের প্রধান লক্ষ্য। এছাড়া দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি বাজার এবং ভেজার যুক্ত পরিবেশকে নির্ভেজাল এবং সুস্থ রাখতে মাশরুমের বিকল্প নেই।
মাশরুমের উপকারিতা সম্পর্কে তিনি জানান, মাশরুম গর্ভবতী মা, শিশু এবং বয়স্কদের আদর্শ খাবার। এটি দেহের কোলেস্টরল কমায়, পুষ্ঠিহীনতা দূর এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শিশুদের ‘ইমিউন সিস্টেম’ অর্থাৎ পাকস্থলিতে হজম প্রক্রিয়া বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁত ও হাঁড় গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। মাশরুম খাবারে রুচি বাড়ায়। ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ রোগ, যৌন অক্ষমতা সফলভাবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
চলমান পদ্ধতির পাশাপাশি খড় পদ্ধতিতে মাশরুমের চাষও মেলায় প্রদর্শনের জন্য এনেছেন কক্স মাশরুম।
চাষ পদ্ধতি নিয়ে অধ্যাপক শহিদুল হক কাজল জানান, খড়কে কুচি কুচি করে ফুটন্ত গরম পানি দিয়ে জীবাণু মুক্ত করতে হবে। পানি ঝরে গেলে গমের ভূষি, ধানের তোষ, কাঠের গুড়ি ও চুন মিশাতে হবে। এরপর আলো এবং তাপ নিয়ন্ত্রণ করে ঘরের ভিতরেই ‘তাক’ পদ্ধতিতে চাষ করতে হবে। ফলে অল্প পরিসরে অধিক পরিমাণে মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
মেলায় বিক্রি করে মুনাফা অর্জন নয়; বেকার জাতিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অনুপ্রেরণা যোগাতেই তিনি মাশরুমের স্টল নিয়ে মেলায় অংশ গ্রহণ করেছেন জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন