“খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে।”

খাগড়াছড়িতে ঠান্ডা জনিত রোগে ১২ দিনে ৬ শিশুর মৃত্যু

fec-image

খাগড়াছড়িতে শীতের প্রকোপ অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে বাড়ছে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। ঠান্ডাজনিত নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে চলতি মাসের ১২ দিনে ৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়াও চলতি শীত মৌসুমে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ১২শ রোগী। খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ রোগী বাড়তে থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

খাগড়াছড়িতে গত কয়েকদিনে আরও বেড়েছে শীতের প্রকোপ। সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত শীতের প্রকোপ বেশি। কখনো কখনো সূর্যের উত্তাপ দেখা মিলছে না। শীতের ঠান্ডায় সবচেয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা। নতুন বছরের প্রথম ১২ দিনে খাগড়াছড়িতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬ শিশু। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেন্দ্র ত্রিপুরা। সিভিয়ার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের স্ক্যানো ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাড়তি রোগী চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। আতঙ্কিত না হয়ে শিশুর বাড়তি যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিউমোনিয়া প্রতিরোধে পরার্মশ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা ।

ঠান্ডার প্রকোপে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে দুর্গম এলাকার মানুষেরা। ঠান্ডার প্রভাবে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শ্বাসকষ্ট, জ্বর, ঠান্ডা ছাড়াও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায়। ঠান্ডায় আক্রান্ত শিশুদের বেশীর ভাগের বয়স ৬ থেকে ১৮ মাস। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে রোগীরা। বাড়তি রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সরা।

রোগীর স্বজনরা জানান, পাহাড়ে ঠান্ডা বাড়ার সাথে শিশুর শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা, জ্বর সর্দি হচ্ছে। বেশীর ভাগই ৪-৫দিন পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে। ’

শীতের কারণে নবজাতক ও শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। তবে অনেক শিশু সিবিয়ার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আশংকাজনকভাবে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। সিবিয়ার নিউমোনিয়ায় আক্রান্তদের জীবন শঙ্কায় রয়েছে।

খগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের সিনিয়র নার্স ঈপসিতা ত্রিপুরা জানান,‘ শীত আসার পর থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এপর্যন্ত আমরা ১২শ রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছি। অনেক সময় বাড়তি রোগীর চাপে বেডে জায়গা হয়। ’

নিউমোনিয়া হলে আতঙ্কিত না হয়ে রোগ প্রতিরোধে পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকেরা। সতর্কতা অবলম্বন করলে এড়ানো যাবে নিউমোনিয়া।

খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেন্দ্র ত্রিপুরা জানান, ‘উপজেলা পর্যায়ে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা না নেওয়ায় জটিলতা বাড়ছে। গত কয়েকদিনে রোগীর চাপও বেশি। বেশীর ভাগই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। গত ১২ দিনে শিশু ওয়ার্ডে ৬ জন শিশু মারা গেছে।

তিনি আরও বলেন, শিশুর থাকার পরিবেশ শুষ্ক থাকতে হবে। নবজাতক ও বাচ্চাদের সময় গরম কাপড় দিয়ে রাখতে হবে। তুলশি পাতার রস নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে। অনেক সময় গরম কাপড়ের কারণে ঘেমে গিয়েও শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। সেই ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়িতে, ঠান্ডা জনিত রোগে, শিশুর মৃত্যু
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন