খাগড়াছড়িতে দিন-দুপুরে চুরি, শহরবাসী চোর আতঙ্কে

fec-image

 খাগড়াছড়ি শহরবাসী ভুগছে চোর আতঙ্কে । দিন -দুপরে ঘটছে চুরির ঘটনা। চোর চক্রের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছে না, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক শিক্ষক। কিন্তু চোর আটক কিংবা চুরির মালামাল উদ্ধার নজির কম। ফলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে জনসাধারণ। পুলিশ বলছে চিহিৃত চোরদের ধরতে আপ্রাণ চেষ্টা চলছে।

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুদর্শন চাকমার খাগড়াছড়ির শহরের মিলনপুরস্থ বাস ভবন। গত ১৮ আগস্ট দিন-দুপুরে তার বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজে দেখায়, দুপুর ২টা ৫৬ মিনিটে। বাসার নিচে দুই যুবক ঘুরছে। চারপাশ ভালো করে দেখে ওই দুই যুবক ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পর এক যুবক বেরিয়ে এসে হাতের ইশারা দিলে অপর যুবক একটি টিভি নিয়ে কৌশলে বের হয়ে যায়।

জানা যায়, দুই যুবক সুদর্শন চাকমার ভবনের নিচ তলায় ভাড়াটিয়ার বাসার তালা ভেঙ্গে টিভি চুরি করে নিয়ে যায়। উপজেলা চেয়ারম্যান সুদর্শন চাকমা তার ফেসবুকে সিসি টিভির এ ফুটেজ পোস্ট করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

২৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় একই এলাকায় কুহেলী দেওয়ানের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। তিনি খাগড়াছড়ি জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক। চোর ঘরের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে আলমিরা ভেঙ্গে ল্যাপটপ, নগদ ৬০ হাজার টাকা এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।

এক পরিসংখানে দেখা গেছে, গত কয়েক মাসে খাগড়াছড়ি শহরে অন্তত ২০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। তাও আবার অধিকাংশ ঘটেছে দিন-দুপুরে। তবে চোর গ্রেফতার কিংবা মালামাল উদ্ধার হয়েছে খুবই কম। এক সময় খাগড়াছড়ি শহরে রাতের বেলা চুরি হলেও এখন হচ্ছে দিন-দুপুরে। গত বছর পর্যন্ত খাগড়াছড়িতে অধিকাংশ চুরির ঘটনা ছিল মোটরসাইকেল। কিন্তু এ বছর থেকে উদ্বেগ জনকভাবে বেড়েছে ঘর থেকে মূল্যবান মালামাল চুরির ঘটনা। তাও আবার দিন-দুপুরে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।

গত ১৯ আগস্ট শহরের বাঙ্গালকাটি এলাকায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল সাংবাদিক মো. শাহজাহানের বাসায় দিন-দুপুরে চুরির ঘটনা ঘটে। চোর বাসার দরজার হুক খুলে ভেতরে ঢুকে ল্যাপটপ, ক্যামেরা, নগদ ২০ হাজার টাকা এবং মোবাইল নিয়ে যায়। একই দিনে তার পাশের ফ্লাটে দুই কলেজ শিক্ষকের বাসা থেকে ল্যাপটপ ও মোবাইল নিয়ে গেছে।

সাংবাদিক মো. শাহজাহান জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা করলেও এখনো চোর শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার কাউন্সিলর মাসুদুল হক জানান, গত ২৬ আগস্ট রাতে তার বাসায় চোর হানা দেয়। চোর মূল ফটকের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর জানালা দিয়ে দেখি চোর পালাচ্ছে।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহরে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটলেও মামলা হয়েছে এ পর্যন্ত ৩টি। একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটলেও চোর চক্রকে চিহিৃত করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষুব্ধ।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রশিদ জানান, এ পর্যন্ত সংঘটিত চুরির ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। একটি চুরির ঘটনায় মালামাল উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া ১০ জন চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেল থেকে একাধিক চোর জামিনে মুক্তি পেয়েছে।

তিনি বলেন, চুরি ঠেকাতে ও চোর চিহিৃত করতে পুলিশের একাধিক সদস্য বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মাঠে রয়েছে। এছাড়াও আবাসিক এলাকাগুলোতে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আব্দুল আজিজ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা হেড কোয়ার্টার থেকে আগেই জানানো হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনায় চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়িতে, চুরি, চোর আতঙ্কে
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন