খাগড়াছড়ির অর্কিড প্রেমী ভবেশ মিত্র চাকমার গল্প

fec-image

পরিবেশ বিধ্বংসী কাণ্ডে পাহাড় থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ,অর্থনৈতিক ও ঔষধি গুণে ভরপুর অর্কিড।

অপরিকল্পিত জুম চাষ ও বনাঞ্চল উজাড়সহ পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে পাহাড় থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে পরাশ্রয়ী,উদ্ভিদ অর্থনৈতিক ও ঔষধী গুণে ভরপুর অর্কিড। এক সময় পাহাড়ে শতাধিক প্রজাতির বেশি বুনো অর্কিডের দেখা মিললেও বন উজাড়ের সাথে নিঃশেষের পথে অর্কিডও। তবে সুখবর হচ্ছে খাগড়াছড়িতে অর্কিড রক্ষায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাজ করছেন কয়েক জন। সরকারিভাবে অর্কিড সংগ্রহশালা নির্মাণের পরিকল্পনার কথা বলছে বন বিভাগ।

এক সময় পাহাড় ছিল সবুজ বনানীতে ঘেরা। কিন্তু জুম চাষের নামে আগুন দিয়ে বনজ সম্পদ পুড়িয়ে ফেলা ও পাচারকারীদের কবলে পড়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বন উজাড়ে একদিকে যেমন জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে পাশাপাশি হারিয়ে যাচ্ছে মাতৃবৃক্ষসহ অনেক মূল্যবান বনজ সম্পদ। এর একটি অর্কিড। কিন্তু স্থানীয়দের কাছে সচেতনতার অভাবে নির্বিচারে বন উজাড় ও পাচারকারী চক্রের মাধ্যমে নিঃশেষ হতে বসেছে শতাধিক প্রজাতি। তবে সৌন্দর্যবর্ধন ও ঔষধীগুণ সম্পন্ন মূল্যবান এ বনজ সম্পদের গুরুত্ব অনুধাবন হচ্ছে কারো কারো। বিগত ৭ থেকে ৮ বছর ধরে অর্কিড সংগ্রহ করছেন খাগড়াছড়ির কয়েকজন অর্কিডপ্রেমী। তাদের মধ্যে অন্যতম খাগড়াছড়ি শহরের নারায়খাইয়া গ্রামের বাসিন্দা ভবেশ মিত্র চাকমা।

অর্কিড সংগ্রহক ভবেশ মিত্র চাকমা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। ২০০৪ সালে শিক্ষা জীবন শেষ করেন। তিনি এখন খাগড়াছড়ি শহরে একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চারুকলা বিভাগে শিক্ষাকতা করছেন। তবে তার প্রথম পছন্দ বাগান করা। সময় পেলেই বাড়ির একপাশে খালি জায়গায় বিভিন্ন ফলদ ও ফুলগাছ লাগান। তিনজনের সংসারে স্ত্রী কাজলা চাকমা খাগড়াছড়ি হাসপাতালের নার্স। একমাত্র সন্তান পড়াশোনা করছেন শহরের একটি বিদ্যালয়ে।

ভবেশ মিত্র চাকমা হারিয়ে যাওয়া অর্কিড সংগ্রহ করছেন নিজের প্রচেষ্টায়। বর্তমানে তার সংগ্রহে রয়েছে প্রায় ৪৫ ধরনের অর্কিড।
ভবেশ মিত্র চাকমার বাড়ির দোতলা বাড়ি আর আঙ্গিনা জুড়ে ফুটে আছে হলুদ, সাদা, বেগুনি, গোলাপিসহ নানা রঙের অর্কিড ফুল। বাড়ির প্রবেশ পথ থেকে নিচ তলা, সিঁড়ি, বারান্দা, বাড়ির ছাদ, বাড়ির চারপাশে লাগানো নারকেল গাছ, কাঁঠাল গাছসহ সব জায়গায় ফুটে আছে পিরারেড্ডি, পরিসি, ফার্মেরি, ক্রিপিডেটাম, জেলি অর্কিডসহ নানা ধরনের অর্কিড ফুল।

অর্কিডের জন্ম সম্পর্কে ভবেশ মিত্র চাকমা বলেন, ‘মূলত পাহাড়ের পাদদেশে বড় বড় গাছে অর্কিড প্রাকৃতিকভাবে জন্মায়। এক সময় বড় বড় গাছে লাল, সাদা, হলুদসহ বিভিন্ন রঙের ফুল ফুটে থাকত। কিন্তু গত তিন দশক ধরে জুম চাষ, বনাঞ্চল উজারসহ পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকারণে কারণে পাহাড় থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে অর্কিড। ভবেশ মিত্র চাকমা অর্কিড সংগ্রহ করতে গিয়ে কখনো কখনো তার কাছে টাকা দাবি করা হয়েছে। তিনি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে অর্কিড কিনেছে।

তিনি বলেন, পাহাড়ের মানুষে অর্কিড সম্পর্কে সচেতন না। অনেকে পরগাছা বা আগাছা ভেবে মূল্যবান অর্কিডগুলো নষ্ট করে দেয়। অথচ অর্কিড গাছের তেমন পরিচর্যা প্রয়োজন পড়ে না।

অর্কিড চাকমার স্বপ্ন,পাহাড় থেকে হারিয়ে যাওয়া সব অর্কিড তার সংগ্রহশালায় থাকবে। একদিন এ অর্কিড নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা দেখে

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন