খাগড়াছড়ি মহালছড়ি উপজেলায় সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা

Model test Examination picture

দুলাল হোসেন,খাগড়াছড়ি॥
 খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নে প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক ধরণের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে বলে স্থানীয় অভিভাবকদের সুত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষা প্রশাসনের তদারকির অভাব, দায়িত্বের প্রতি অবহেলা, শিক্ষকদের নিয়মিত স্কুল ফাঁকি দেওয়ার কাজে শিক্ষা অফিসের সহযোগিতার কারনে কাগজে-কলমে সবকিছু ঠিক থাকলেও বাস্তবে সম্পূর্ণ বিপরীত বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলা সদর হতে ১৫/১৬ কিলোমিটার দুরবর্তী সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নে ৯টি সরকারী-বেসরকারী প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নে ৩ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা রয়েছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য  ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার সিন্দুকছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষক অঞ্জনাথ ত্রিপুরা একাই পঞ্চম শ্রেণীর মডেল টেষ্ট পরীক্ষা নিচ্ছেন। বিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন সহকারী শিক্ষক উপস্থিত থাকলেও প্রধান শিক্ষক পুষ্পেশ্বর ত্রিপুরাসহ অপর দুই জন সহকারী শিক্ষক উনুমং মারমা ও অংক্যচিং মারমাকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায় নাই।

ছাত্র/ছাত্রীদের ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন ১ জন শিক্ষক অথবা সর্বোচ্চ ২ জন শিক্ষক দিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ ছাত্র/ছাত্রীদের লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সিন্দুকছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি’র সভাপতি গহেন্দ্র ত্রিপুরার সাথে কথা বললে জানাযায়, অনেকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। বরঞ্চ অভিযোগ দেওয়ার পর ২/৩ মাস শিক্ষকের বেতন বন্ধ রাখার পর কর্তৃপক্ষকে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে শিক্ষকেরা বেতন তুলে নিয়ে যান। যারফলে শিক্ষকরা সেই আগের মতো স্কুল ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সুইনুপ্রু চৌধুরীও একই অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকদের উপস্থিতি তাদের ইচ্ছাধীন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে শিক্ষকরা এ ধরণের অন্যায় কাজে সাহস পাচ্ছে। অত্র ইউনিয়নে এমনও স্কুল আছে যে, শিক্ষকেরা এক থেকে দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে বর্গা শিক্ষক রেখে ছাত্র/ছাত্রীদের সারা বছর পাঠদান করাচ্ছেন। আর এরা স্কুল ফাঁকি দিয়ে ঘরে বসে বসে বেতন নিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও এ বিষয়ে কোন নজরদারী নেই বলে জানান তিনি।

উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আ,ন,ম মাসুম হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি শিক্ষকদের অনুপস্থিতির কথা স্বীকার করলেও উৎকোচ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, উৎকোচ নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়, তবে এর আগে অভিযুক্ত শিক্ষকগণের  কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছিল। এবারে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে এলাকার প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে সকল অবহেলা দুর করে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন, এটাই প্রত্যাশা করেন এলাকার সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন