গর্ভবতী স্ত্রীর লাশ ফেলে স্বর্ণালংকার নিয়ে পালালেন স্বামী-স্বজনরা

fec-image

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে গর্ভবতী স্ত্রীর লাশ রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় ইয়াছমিন আক্তার সেতু (১৯) নামক এক গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর স্বামী আবদু সালাম ও শাশুড়ি।

খবর পেয়ে নিহত ইয়াছমিনের এক আত্বীয় স্কুল শিক্ষক মো: আলী হাসপাতালে এলে ইয়াছমিনের লাশ হাসপাতালে রেখে কৌশলে পালিয়ে যান পাষন্ড স্বামী ও শাশুড়ি, ভাই ও বোন। নিহত গৃহবধূ ইয়াছমিন আক্তার সেতু উখিয়া উপজেলার পূর্ব দরগাবিল বাগানপাড়া এলাকার রফিক উদ্দিনের মেয়ে এবং সোনারপাড়া এলাকার আবদু সালামের স্ত্রী।

নিহত ইয়াছমিনের মা সদর হাসপাতালের মর্গের সামনে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘ইয়াছমিনের বিয়ে হয়েছে মাত্র ১০ মাস। এরমধ্যে তার মেয়ে এখন ৮ মাসের গর্ভবতী। ইয়াছমিনকে স্বামীর মা, ভাই ও বোনসহ ব্যাপক মারধর করে গলাটিপে হত্যা করেছে। তিনি আরো বলেন, তাঁর মেয়ের জামাই অত্যান্ত ভালো ছিল কিন্তু মা ও ভাইয়ের সাথে ইয়াছমিনের ঝগড়ার কথা বলে বারবার মারধর ও জ্বালাতন করত। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে আবদু সালামের বাড়িতে হত্যা করে ইয়াছমিনকে। বুধবার ভোরে খবর পেয়ে ইয়াছমিনকে কোর্টবাজার অরিজিন হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়ের জামাই আবদু সালাম ও তাঁর পরিবারের লোকজন আমার মেয়েকে মেরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’

নিহত ইয়াছমিনের ভাই তোফাইল বলেন, আমার বোন উখিয়া বঙ্গমাতা কলেজ থেকে ডিগ্রি পাশ করেছে। তাঁর বোনকে পরিকল্পিত হত্যা করেছে। না হলে হাসপাতাল থেকে তারা কেন পালিয়ে গেছেন। তিনি দাবী করেছেন, ইয়াছমিনের গলায় থাকা এক ভরি ওজনের একটি চেইনসহ নাক, কান ও হাতে থাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে গেছে স্বামী ও স্বজনরা।

প্রত্যক্ষদর্শী মো: আলী জানান, অরিজিন ও জেলা সদর হাসপাতালে আমি নিহত ইয়াছমিনের সাথে ছিলাম। হঠাৎ সদর হাসপাতাল থেকে স্বামী আবদু সালাম ও তার মা, ভাই ও বোন লাশ রেখে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: শাহিন আবদুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ইয়াছমিনের মৃত্যু হয়েছে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল মনসুর বলেন, এরকম একটি ঘটনা শুনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তে এটি হত্যা প্রমাণ মিললে গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন