গুইমারার জালিয়াপাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি


খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৯টি দোকান ভস্মীভূত হয়ে গেছে। শনিবার (৫ অক্টোবর) ভোররাত আনুমানিক ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ইসমাইল মার্কেট এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতের অন্ধকারে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত হলে মুহূর্তেই তা পাশের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে রামগড় ও মাটিরাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে পুরো মার্কেটের ১৯টি দোকানই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
দোকান মালিকদের দাবি, আগুনে অন্তত ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে ছিল তেলের দোকান, মোটর গ্যারেজ, হোটেল, ফার্নিচার, ইলেকট্রনিকস ও মুদি দোকানসহ নানা ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই আগুনের উৎপত্তি হতে পারে।
অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে উপজেলা প্রশিক্ষক আল-আমিন তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় হিল ভিডিপি ও ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রুপে বার্তা পাঠান। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২০-২৫ জন ভিডিপি সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নেভানো ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সিন্দুকছড়ি সেনা জোন অধিনায়ক, গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আইরিন আক্তার, ও গুইমারা থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী।
ইউএনও আইরিন আক্তার ক্ষতিগ্রস্তদের সান্ত্বনা জানিয়ে বলেন,
“উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে এবং যথাসম্ভব সহায়তা করা হবে।”
তিনি হিল ভিডিপি ও ভিডিপি সদস্যদের তাৎক্ষণিক সাড়া ও সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং উপজেলা প্রশিক্ষক আল-আমিনকে ধন্যবাদ জানান।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির নেতারা অভিযোগ করেছেন, গুইমারা উপজেলা সদরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কোনো স্থায়ী কার্যালয় না থাকায় আগুন লাগার পর তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ভয়াবহ রূপ নেয়।
একজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী বলেন—“গুইমারাতে যদি ফায়ার সার্ভিসের স্থায়ী অফিস থাকতো, তাহলে আগুন শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া যেত। হয়তো আমাদের এত বড় ক্ষতি হতো না।”
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতি দ্রুত গুইমারায় একটি পূর্ণাঙ্গ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের জোর দাবি জানিয়েছেন।
পাহাড়ের সাম্প্রতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই গভীর রাতে ঘটে যাওয়া এই অগ্নিকাণ্ডে এলাকায় চরম আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।