চট্টগ্রাম টেস্টে পাকিস্তানের কাছে হারলো বাংলাদেশ

fec-image

শেষ দিনে ১০ উইকেটে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৯৩ রান। হাতে গোটা এক দিন। এমন ম্যাচ জিতবে সফরকারীরা, তা ছিল সহজেই অনুমেয়। তারপরও শেষ ভরসা হিসেবে বোলাররা চেষ্টা করলেন প্রাণান্ত। কয়েকটি উইকেটও পতন হলো পাকিস্তানের। তাতে অবশ্য জয় আটকানো গেল না। চট্টগ্রাম টেস্ট পাকিস্তান জিতল বলতে গেলে সহজেই। দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হারলো ৮ উইকেটে।

অলৌকিক কিছু করতে না পারলেও দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে সফরকারী শিবিরে কিছুটা অস্বস্তি ছড়াতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। আবিদ আলীকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেছেন তাইজুল। তার পর ২০২ রানের লক্ষ্যে পাকিস্তান ৮ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বাবর আজম ও আজহার আলীর সৌজন্যে।

স্বাগতিকদের আরও একটি উইকেট তুলে নেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু বাবর আজমের ক্যাচ নিতে পারেননি তাইজুল। গতকাল মনে হচ্ছিল বিনা উইকেটেই বুঝি পাকিস্তান জিতে যাবে। লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ দিন চা পানের বিরতির আগে থেকে এবং তৃতীয় সেশনের পুরোভাগেই দুই ওপেনার আবিদ আলী ও আব্দুল্লাহ শফিক আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন। হাফসেঞ্চুরিও পেয়েছেন দুজনে।

কিন্তু ৪৩তম ওভারে ১৫১ রানের এই জুটি ভেঙেছেন মেহেদী মিরাজ। অভিষিক্ত আব্দুল্লাহ শফিককে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন। শফিক রিভিউ নিলেও লাভ হয়নি। অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা এই ওপেনার ফিরেছেন ৭৩ রান করে। তার ১২৯ বলের ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ১টি ছয়।

সঙ্গীর বিদায়ের পর সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যেতে থাকেন আবিদ আলী। চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি ও এই টেস্টের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি থেকে ৯ রান দূরে ছিলেন। তাইজুল ইসলাম ঠিক এই সময়টাতেই তাকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেছেন। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে আবিদ রিভিউ নিয়েছিলেন যদিও। কিন্তু সেখানেও সাফল্য মেলেনি। ১৪৮ বল খেলা আবিদের ইনিংসে ছিল ১২টি চার।

অথচ চট্টগ্রামে বাংলাদেশের চতুর্থ দিনের সকালটা যেমন ছিল, সেখানে এই লক্ষ্যটাকেও অকল্পনীয় মনে হচ্ছিল। লিডটা চ্যালেঞ্জিং পজিশনে রাখা গেছে লিটন দাসের হাফসেঞ্চুরির কল্যাণে। ওই মুহূর্তে ইয়াসির-লিটন জুটিই মান বাঁচিয়েছে। ৪৭ রানের জুটি গড়েন তারা। গুরুত্বপূর্ণ ওই জুটি স্থায়ী হয়নি ইয়াসির আলী হেলমেটে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ফিরলে। এর পর মিরাজ কিছুক্ষণ সঙ্গী হয়েছিলেন, কিন্তু থিতু হতে পারেননি। তার আউটের পর আরেকটি সম্ভাবনাময় জুটি গড়েন লিটন ও ইয়াসিরের কনকাশন বদলি সোহান। সুযোগ বুঝে রান তুলে ভালো কিছুর ইঙ্গিতও দেন তারা। কিন্তু ৩৮ রানের জুটি ভেঙে যায় সোহানের বিলাসী শটের কারণে। এর পর আর স্বীকৃত ব্যাটসম্যান না থাকায় দ্বিতীয় ইনিংস বেশি দূর এগোয়নি।

অবশ্য বাংলাদেশকে রুখে রাখতে বড় ভূমিকা ছিল পেসার শাহীন আফ্রিদির। লিটনকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেই লেজ ছেঁটে দিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। তার কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১৫৭ রানে। তাতে লিড ২০১ রান হওয়া পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০২।

তৃতীয় দিন বিকালের শুরুর ধসটাও নেমেছিল শাহীনের গতি-ঝড়ের কারণে। ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দিন শেষ করেছিল। চতুর্থ দিনও তার এই গতি-ঝড় লিডটাকে বেশি বাড়তে দেয়নি। ৩২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন। তিনটি নেন অফস্পিনার সাজিদ, দুটি নেন হাসান আলী।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ৩৩০ (লিটন ১১৪, মুশফিক ৯১; হাসান আলী ৫/৫১) ও ১৫৭ (লিটন ৫৯, ইয়াসির ৩৬; শাহীন ৫/৩২)

পাকিস্তান: ২৮৬ (আবিদ আলী ১৩৩, শফিক ৫২; তাইজুল ৭/১১৬)ও ২০৩/২ (আবিদ ৯১, শফিক ৭৩; তাইজুল ১/৮৯, মিরাজ ১/৫৯)

ফল: পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী, ম্যাচসেরা: আবিদ আলী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন