ঝরেপড়া রোধে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ মাটিরাঙ্গার ভবানীচরণ রোয়াজাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা:
ঝরেপড়ার হার রোধে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন দুর্গম ভবানীচরণ রোয়াজাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগেও ২০১৪ সালে ভবানীচরন রোয়াজা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে জেলা পর্যায়ে ঝরে পড়া রোধে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। শুধু তাই নয় ২০১৭ সালের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে। এছাড়াও জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় ১০০ মিটার দৌড় ও দীর্ঘ লাফ প্রতিযোগিতায় শিশু পুরস্কার রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটির অর্জনের ঝুড়িতে।
প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়েই বসে থাকেননি ভবানীচরন রোয়াজা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এরশাদ আলী। ২০১২ সালে জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন তিনি।
কিভাবে এ অর্জন সম্ভব জানতে চাইলে ভবানীচরন রোয়াজা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এরশাদ আলী বলেন, এসএমসি ও পিটিএ‘র সমন্বয়ে শিশু জরিপ, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ ও হোম ভিজিটের মাধ্যমে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। তবে এজন্য তিনি সব কৃতিত্ব তার এসএমসি ও শিক্ষকদের দিয়ে বলেন, তাদের সহযোগিতা ছাড়া বিদ্যালয়ের ঝড়ে পড়া রোধ সম্ভব নয়। তার এ সাফল্য লাভের পেছনে জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান-কারবারীদের গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা ছিল বলেও জানান তিনি।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণলাল দেবনাথ বলেন, ক্যাচমেন্ট এলাকার শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়া রোধে বিদ্যালয়টি এর আগেও সফলতা দেখিয়েছে। এজন্য তিনি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. এরশাদ আলী‘র যোগ্য নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের যোগ্য নেতৃত্বে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও তা সমন্বিত বাস্তবায়নের ফলেই এ সাফল্য এসছে।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা প্রতষ্ঠিানগুলোর মধ্যে ঝড়েপড়া রোধে বরাবরই এগিয়ে রয়েছে ভবানীচরন রোয়াজা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এমন মন্তব্য করে গোমতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন লিটন বলেন, এ প্রাপ্তির নায়ক হচ্ছেন প্রধান শিক্ষক মো. এরশাদ আলী। বিদ্যালয়টি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের স্বাক্ষর ধরে রাখবে বলেও মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান বলেন, চেষ্টা আর স্বদিচ্ছা থাকলে সব অর্জনই সম্ভব। এজন্য খুব বেশি পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়না। প্রয়োজন যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও এর বাস্তবায়ন। উপজেলা শিক্ষা বিভাগের সাথে যথাযথ সমন্বয় ছিল বলেই দুর্গম ভবানীচরণ রোয়াজাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝরেপড়া রোধে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।