টেকনাফে চাঞ্চল্যকর মোস্তাক হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন, আটক ৬

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফে চাঞ্চল্যকর ক্লো লেস টমটম (অটোরিকশা) চালক মোস্তাক মিয়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করা হয়েছে। টানা ২০ দিন শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করতে সক্ষম হন পুলিশ। ধৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাক হত্যার বর্ণনাও করেছেন পুলিশের কাছে।

আটককৃতরা হলেন- মাস্টার মাইন্ড মো. আব্দুর রহিম (১৯), আব্দুল আমিন প্রকাশ পুতিয়া (১৬), ওমর ফারুক (২৪), ফরিদ আহমদ (৫০), সাদেকুর রহমান (২১) ও নুরুল আমিন (৪৩)।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৩ মার্চ টেকনাফ পৌরসভাস্থ খায়ুকখালী খালে টমটম চালক মোস্তাক মিয়ার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় জনতা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গলায় মাটিভর্তি বস্তা বাঁধা অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহত টমটম চালক সাবরাং ইউনিয়নে কাটাবনিয়া এলাকার নুরুজ্জামানের ছেলে। এ ঘটনার পর এলাকাসহ পুরো টেকনাফে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের একটি টিম তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার মাস্টার মাইন্ডসহ জড়িত ৬ জনকে আটক করে।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মু.ওসমান গনি বলেন, মোস্তাক হত্যা একটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লু লেস হত্যাকাণ্ড ছিল। ঘটনার পরপরই জড়িতদের আটক ও ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে তৎপর হয়ে উঠে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই মামলার মাস্টার মাইন্ডসহ জড়িত ৬ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। তাদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং মোস্তাক হত্যার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। এ ব্যাপারে গত ১০ মার্চ টেকনাফ মডেল থানায় ১৯/১৩৬ নং মামলা দায়ের করা হয়। যারা ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০।

ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি আরও বলেন, মোস্তাকের হত্যাকারী সবাই আন্ত: জেলা টমটম ছিনতাই চক্রের সদস্য ছিল। ঘটনার দিন চক্রের সদস্য আব্দুর রহিম মোস্তাকের চালিত টমটম গাড়িটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে পৌরসভার উপরের বাজার মন্দিরের সামনে থেকে যাত্রী বেশে ভাড়া করে। গাড়িটি অলিয়াবাদ কাড়ির মাথা তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে চক্রের আরেক সদস্য আব্দুল আমিন প্রকাশ পুতিয়া জহির গাড়িটি থামার সংকেত দেয়। ইয়াবা তল্লাশির নামে চালক মোস্তাককে নামিয়ে ফেলে এবং পরিকল্পিতভাবে দুইজনে মিলে আটক আবদুর রহিম প্রথমে লোহার রড় দিয়ে ভিকটিমের মাথায় বারি মারিলে ভিকটিম রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে গেলে আসামি আব্দুর রহিম ও পূর্ব থেকে সেখানে অবস্থান করা আব্দুল আমিন পুতিয়া দ্বয় ভিকটিমকে টমটমে করে কায়ুকখালী খালের নিকটবর্তী খালি মাঠে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে কাঁধে করে খাল পাড়ে নিয়ে গিয়ে একটা প্লাস্টিকের বস্তার ভিতর কাদা মাটি ভরে ভিকটিমের গলায় বেঁধে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে লাশ কায়ুকখালী খালের পানিতে ফেলে দেয়।

পরবর্তীতে লাশের গলায় মাটিভর্তি বস্তা বেঁধে খালের পাড়ে ফেলে দিয়ে তারা টমটমটি নিয়ে উখিয়ায় উপজেলার দিকে রওনা দেয়। সেখানে চক্রের আরেক সদস্য ওমর ফারুকসহ টমটমটি কোট-বাজারের ফরিদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়।

এমন একটি সিন্ডিকেট চক্রের সন্ধান ও অল্প সময়ে সকলকে আটকের ঘটনায় টেকনাফ থানা পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করছেন টেকনাফ-বাসী।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আটক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন