ত্রানে বিরক্ত রোহিঙ্গা!

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা ইস্যুতে ত্রান শব্দটি যেন অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। রোহিঙ্গারা তাদের নিজ জন্মভূমিতে থাকতে তাদের দৈনন্দিন জীবন যেভাবে সুখ স্বাচ্ছন্দ্যে অতিবাহিত করতে পারেনি তা সুদে আসলে মিটিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) টেকনাফের উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর গ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত ত্রান বিতরণ ও সমন্বয় কেন্দ্রে ৯৪৫ রোহিঙ্গা পরিবারের মাঝে লাকড়ি, শীতবস্ত্র, দুধ ইত্যাদি বিতরণ কালে রোহিঙ্গারা পর্যাপ্ত ত্রাণে বিরক্ত বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়েছে। বিভিন্ন ত্রাণের বস্তাতে ভরপুর তাদের বাড়িঘর। আর এদিকে তিনবেলা ভাতও জুটছে না বাংলাদেশী গরীবদের। অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা শ্রমিক বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশী শ্রমিকরা পাচ্ছে না কোন কাজ, যেতে পারছে না মাছ ধরতে না যেতে পারছে দিনমজুরীতে। এমনকি রিক্সা, টমটম (ইজিবাইক) ও মটর গাড়ির স্টিয়ারিংও বর্তমানে রোহিঙ্গাদের দখলে। বাংলাদেশী গরীব দুস্থরা তীব্র শীতে গায়ে জড়ানোর মতো পাচ্ছে না কোন শীতবস্ত্র অথচ রোহিঙ্গারা তাদের বাড়ি ঘরের বেড়ার কাজে ব্যবহার করছে শীত বস্ত্রের কম্বল। শুধু তা নয় শামলাপুর বাজার ইউনিয়নে ব্যবসার প্রাণ কেন্দ্র হয়েও রোহিঙ্গা প্রবেশের পর বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ে ভাটা পড়েছে।  এ বাজারের ব্যবসার বিভিন্ন খাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে রোহিঙ্গারা। বাজারের  মুদি দোকান বা অন্যান্য পণ্য সামগ্রীর দোকানদাররা আশানুরূপ ভাবে বিক্রি করতে পারছেন না তাদের পণ্য।

বাজারের মুদি দোকানদার জসিম উদ্দিন বকুল থেকে বর্তমানে পণ্যের চাহিদা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের তুলনায় চাহিদা অনেক কম, আগে বেচাকেনা অধিক হলেও এখন এক তৃতীয়াংশও বেচাকেনা হয় না। সবচেয়ে কোন পণ্য দ্রব্যের উপর বেশি প্রভাব পড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তেল, মসুর ডাল, দুধ ইত্যাদি পণ্যের বেহাল দশা। তবে বিড়ি সিগারেট ব্যাপক হারে চলছে।

শামলাপুর নয়া পাড়া গ্রামের এ ব্লগের রোহিঙ্গা রাহমত উল্লাহ বলেন, গত ৫ মাস ধরে চাল, ডাল, তেল, ইত্যাদি কিনতে হচ্ছে না। শীতবস্ত্র অনেক পেয়েছি, কম্বলে বিরক্ত সবাই। এদিকে রোহিঙ্গারা কেন্দ্র থেকে ত্রাণ নিয়ে ফেরার সময় অতিরিক্ত হওয়ায়  হরেক রকমের ত্রাণ সামগ্রী বিক্রি করে দেয় বাড়ি পৌঁছানোর আগে।

এব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, নিজের জন্মভূমিতে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে দেশের গরীব নাগরিকরা অথচ বিভিন্ন রকম ত্রাণ সামগ্রীর উপর ঘুমাচ্ছে রোহিঙ্গারা। এ বৈষম্যের সমাধান কবে হবে বলে সরকারের কাছে তাদের প্রশ্ন। রোহিঙ্গাদের জন্য স্থানীয়রা সব কর্মে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তারা। পরিবেশ, সামাজিক আচার আচরণেও বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রোহিঙ্গারা। সবক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের কারণে ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন