দূর্গম পাহাড়ে ডিজিটাল শিক্ষা ও আধুনিক চাষাবাদ শেখাবে সেনাবাহিনী

20150101_110453 copy

সাজেক প্রতিনিধি:

পার্বত্যাঞ্চলের দূর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রাম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সেনাবাহিনী। শুধু তাই নয়, দুর্গম এলাকার জুমচাষি ও কৃষকদের জন্য বহুমূখী সচেতনতা কেন্দ্র চালু করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শনিবার দুপুরে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেক ইউনিয়নে রুইলুই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ভারপ্রাপ্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা। উদ্বোধনের পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিভিডির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রামের বিভিন্ন বিষয় প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে দুপুর ১২ টায় রুইলুইপাড়া ক্লাব হাউজে এ নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ভারপ্রাপ্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল স.ম. মাহবুব আলম, বাঘাইহাট সেনা জোনের জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো আলী হায়দার সিদ্দিকী, খাগড়াছড়ি সদর জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হাসান মাহমুদ, দিঘীনালা জোন অধিনায়ক লে. ক. মহসিন রেজা, সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা প্রমূখ।

এসময় প্রধান অতিথির ব্ক্তব্যে নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে কাজ করছে সরকার। কিন্তু একটি পক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সাজেকে উন্নয়নের ব্যাপারে সেনাবাহিনীদের অবদানের কথা স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সাজেকসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রচুর পর্যটক বিদেশে ঘুরতে যায়। তাদের বাংলাদেশে ভ্রমনের পরিবেশ করে দিতে হবে।
সাজেকের পার্শ্ববর্তী ভারতের অঙ্গরাজ্য মিজোরামের উদাহরণ দিয়ে নব বিক্রম আরও বলেন, ২০০২ সালে মিজোরামে ৯৯০ একর ভূমি নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। আর বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য মাত্র ৬০ একর ভূমিও পাওয়া যাচ্ছেনা।

সভায় খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল স.ম. মাহবুব আলম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন চাকরির সুবাদে বিভিন্ন দূর্গম অঞ্চলে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। দেখা গেছে তারা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বিদ্যালয়বিহীন গ্রামগুলোতে গ্রামের লোকজন চাঁদা তুলে শিক্ষকের বেতন দেওয়া হতো কোথাও কোথাও। আমরা সেই সব সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কাছে ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রাম পৌঁছে দিতে চাই।

তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রামের জন্য দক্ষ শিক্ষক দিয়ে ইতিমধ্যেই চার শতাধিক ডিভিডি তৈরি করা হয়েছে। ডিভিডি প্লেয়ারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে সহজে পাঠদান দেওয়া যাবে। দু’য়েক মাসের মধ্যে তা চালু করা হবে বলেও জানান তিনি।

খাগড়াছড়ি সদর জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হাসান মাহমুদ বলেন, শুধু ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রাম নয়, দূর্গম এলাকায় ডিভিডি প্লেয়ারের মাধ্যমে জুমচাষের আধুনিক পদ্ধতি, বৃষ্টির পানি কিভাবে নিরাপদে ধরে রাখা যায় এবং লাভজনক মাছ চাষসহ নানা বিষয়ে জানানো হবে। প্রত্যেক গ্রামের কার্বারীদের মাধ্যমে চাষিদের শেখানো হবে।

খাগড়াছড়ি সদর জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হাসান মাহমুদ বলেন, শুধু ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রাম নয়, দূর্গম এলাকায় ডিভিডি প্লেয়ারের মাধ্যমে জুমচাষের আধুনিক পদ্ধতি, বৃষ্টির পানি কিভাবে নিরাপদে ধরে রাখা যায় এবং লাভজনক মাছ চাষসহ নানা বিষয়ে জানানো হবে। প্রত্যেক গ্রামের কার্বারীদের মাধ্যমে চাষিদের শেখানো হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন