“রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বেশ কয়েক বার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে তা বিলম্বিত হয়।”
নতুন করে আশার সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে

দ্রুত প্রত্যাবাসনের আশায় বুক বেঁধেছে রোহিঙ্গারা

fec-image

ব্যাপক প্রস্তুতি মধ্যদিয়ে সর্বশেষ ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসেনর জন্য দিনক্ষণ ঠিক করেছিল দু’দেশ, কিন্তু প্রত্যাবাসনের তালিকাভূক্ত রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে চীনকে জোর দাবি জানিয়েছেন।

মিয়ানমারে রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ২ বছর পার হতে চলেছে। এ দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বেশ কয়েক বার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে তা বিলম্বিত হয়।

ব্যাপক প্রস্তুতি মধ্যদিয়ে সর্বশেষ ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসেনর জন্য দিনক্ষণ ঠিক করেছিল দু’দেশ, কিন্তু প্রত্যাবাসনের তালিকাভূক্ত রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে চীনকে জোর দাবি জানিয়েছেন।

এসময় চীন সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে রাজী করানোর আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রীকে। এছাড়াও ১০ জুলাই জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসলে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য আকুতি জানিয়েছেন। এতে রোহিঙ্গাদের মাঝে নতুন করে মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার আশার সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত প্রত্যাবাসনের আশায় বুক বেঁধেছে রোহিঙ্গারা।

কুতুপালং লম্বাশিয়া ১নং ক্যাম্পের মাঝি কলিম উল্লাহ জানায়, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে প্রত্যাবাসন নিয়ে নতুন করে আবারও আশার সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারকে রাজী করাতে চীনের প্রতি আহ্বান করেছেন। সরকারের এই আন্তরিক ভূমিকায় রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

মধুরছড়া ক্যাম্পের আরেক রোহিঙ্গা মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, আমরা বিভিন্ন মিডিয়া থেকে জানতে পেরেছি সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তাছাড়া জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এলে আমরা স্বদেশে ফেরত যাওয়ার ব্যাপারে জোর আকুতি জানিয়েছি। তিনিও আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।

একই ক্যাম্পের নুর বেগম নামের এক বিধবা জানান, ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট তার স্বামী আব্দুর রশিদকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। ১ ছেলে ১ মেয়েকে নিয়ে সে কোন রকম প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে চলে আসতে সক্ষম হলেও ২বছরে তার কোন আত্মীয়-স্বজনের এখনো দেখা পায়নি। তার চিন্তা কখন মিয়ানমারে ফেরত যেতে পারবে। স্বদেশে ফিরতে অধির আগ্রহে আছে জানিয়েছেন সে।

থাইংখালী তাজনিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝি মো. আলী জানান, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিলে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে মরতে হত বন-জঙ্গলসহ নাফ নদীতে। এ জন্যে আমরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। এখন আমরা মিয়ানমারে ফেরত যেতে চাই, তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের দাবি মিয়ানমারে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করার।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হলে আমাদের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে রোহিঙ্গারা। তাই সরকারের প্রতি আমাদের দাবি দ্রুত যেন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয় সে ব্যবস্থা করার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন