উপজাতীয় নওমুসলিমদের ওপর খ্রিস্টান মিশনারীদের দৌরাত্ম
মোহাম্মদ আবদুল গফুর
দেশে সম্প্রতি এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে তাতে মনে হবে বাংলাদেশে কোন অমুসলমান যদি ইসলামের সাম্য ভ্রাতৃত্বের আদর্শে মুগ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করতে চায় তা হবে শাস্তিযোগ্য ঘোরতর অপরাধ। তবে কেউ যদি অন্য ধর্ম ত্যাগ করে বিশেষ করে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে তাতে কোন দোষ হবে না। আমরা এ মন্তব্য করতে বাধ্য হচ্ছি অকারণে নয়- কতগুলো বাস্তব ঘটনার প্রেক্ষিতে।
সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু উপজাতীয় মুসলিম ছাত্র ঢাকার একটি মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার হয়ে এখন খ্রিস্টান ক্যাথলিক চার্চে রয়েছে বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসায় পড়া এসব ছাত্রকে এক মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ২ জানুযারি বাসাবোর একটি মাদ্রাসায় হানা দিয়ে পুলিশ ৫ জন উপজাতীয় নওমুসলিম অভিভাবক এবং তাদের ১৬ সন্তানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাদের ইসলাম গ্রহণের এফিডেভিট ও অন্যান্য বৈধ কাগজপত্র দেখে পুলিশ ১১ শিক্ষার্থী ও তাদের ৫ অভিভাবককে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ৫ জন ছাত্র আগে থেকেই মাদ্রাসায় পড়তো বলে তাদের অভিভাবক সাথে ছিল না। অভিভাবক আসা পর্যন্ত তাদের তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখে পুলিশ। পরে তাদের অভিভাবকরা তাদের আনতে গেলে ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরামের নাম নিয়ে কতিপয় উপজাতীয় লোক তেজগাঁও থানার সীমার সামনে থেকে মাদ্রাসায় যেতে না দিয়ে তাদের জোর করে ধরে নিয়ে যায়। উপজাতীয় এসব লোক অভিভাবক ও তাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় যেতে না দিয়ে খ্রিস্টান ক্যাথলিক চার্চ নিয়ন্ত্রিত একটি এনজিও সংস্থার কাছে দিয়ে দেয়। জানা গেছে, উক্ত ক্যাথলিক চার্চ নিয়ন্ত্রণ করেন রোজালিন ডি কস্তা।
প্রশ্ন উঠছে, সনাতন ধর্মাবলম্বী ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকেরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলো, আর তাদের জোর করে নিয়ে গিয়ে রাখা হলো খ্রিস্টান ক্যাথলিক চার্চ নিয়ন্ত্রিত একটি বেসরকারি সংস্থায়- এ কেমন কথা? উল্লেখ্য, রোজালিন ডি কস্তা খ্রিস্টান ধর্মীয় সংস্থা কারিতাসের প্রতিষ্ঠাতা ফাদার আর ডব্লিউ টিম-এর সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করার বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কাজ করেন। ধর্মান্তর করার বিষয়ে বিতর্কিত কর্মকা- নিয়ে ইতিপূর্বে তিন পার্বত্য জেলায় পার্বত্য গণপরিষদের পক্ষ থেকে প্রবল আন্দোলন হওয়ার প্রেক্ষিতে এ পর্যায়ে তিনি সাময়িকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ত্যাগ করেন। পরে আবার তিনি আসা-যাওয়া শুরু করেন। গত ৮ জানুয়ারি ২০১৩ তিনি মুসলিম হওয়া গ্রামগুলোতে মাদ্রাসা পড়–য়া সব ছাত্রকে ফিরিয়ে এনে চার্চে ভর্তি করার কাজ শুরু করেন। এ ব্যাপারে মুসলিম গ্রামগুলোতে মিশনারী লোকদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি খবর দেয়ার কাজ নতুন করে শুরু করেছেন তিনি।
জানা গেছে, উপজাতীয় নওমুসলিম ঢাকায় এলেই অদৃশ্য কারণে পুলিশ প্রতিবারই তাদের গ্রেফতার করে। এর আগেও একই এলাকার নওমুসলিম জুতিরাং ত্রিপুরা ওরফে জালাল ত্রিপুরা, তার সন্তান ও ছোট ভাইকে মাদ্রাসায় ভর্তি করানোর জন্য ঢাকায় আনলে বাস থেকে নামার সাথে সাথেই একজন চাকমা কমান্ডারের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। তাকে বেদম প্রহার করে রক্তাক্ত করে ফেলে। তাকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে মাদ্রাসার ২ শিক্ষককেও গ্রেফতার করা হয়। পরে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার তদবিরে তারা ছাড়া পান। সম্প্রতি গাজীপুরের মিয়াপাড়ায় দারুল হুদা মাদ্রাসায় এরূপ উপজাতীয় নওমুসলিম ছাত্রদের ধরে নিয়ে আসে। খ্রিস্টান মিশনারীরা তাদের একটি ওয়েবসাইটে তাদের এভাবে গ্রেফতার হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই তা বিশ্বব্যাপী প্রচার করে ফেলে।
জানা গেছে, এসব উপজাতীয় নওমুসলিম রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার দুমদুমিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তারা সবাই ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোক। তাদের অনেকে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। সেখানে কোন স্কুল কিংবা অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। কেবল খ্রিস্টান মিশনারীদের একটি মিশনারী প্রাইমারি স্কুল ছিল। গ্রামের লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় মিশনারীরা স্কুলটি বন্ধ করে চলে যান। রাঙ্গামাটি শহর থেকে উক্ত গ্রামে যেতে হয় কখনও পায়ে হেঁটে, কখনো ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চড়ে। শুকনো মৌসুমে যেতে প্রায় ৩ দিন এবং বর্ষাকালে ২ দিন সময় লাগে। অধিবাসীদের পেশা মূলত জুম চাষ।
দুমদুমিয়া গ্রামের কাছাকাছি পাহাড়ের উপরে বিজিবি’র একটি ক্যাম্প রযেছে। ক্যাম্পে লাকড়ি সাপ্লাইয়ের কাজ করতো গ্রামের জুলেহা ত্রিপুরা নামের একজন অধিবাসী। বিজিবি সদস্যদের আজানের সুমধুর আওয়াজ এবং সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া দেখে তার মনে একটা পরিবর্তন আসে। তিনি প্রায়ই আজানের আওয়াজের জন্য অপেক্ষা করতেন এবং নামাজরত ব্যক্তিদের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। তিনি তার স্ত্রীকে বিষয়টি জানালে সেও একই অনুভূতি প্রকাশ করে। পরে তারা গ্রামের সবার সাথে আলাপ করলে তারাও মুসলমান হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু কিভাবে মুসলমান হবেন কিছুই জানেন না। ২০০৮ সাল থেকে দুই বছরেরও বেশি সময় মুসলমান হওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হন। তারা কাপ্তাই উপজেলার তৎকালীন ইউএনও’র কাছে বিষয়টি জানালে ইউএনও’র রুম থেকে তাদের বের করে দেয়া হয়। ২০১০ সালে কোন এক সহৃদয় ব্যক্তি তাদের রাঙ্গামাটি শহরে ইসলামিক ফাউন্ডেশন নামক একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানান।
এরপর এক পর্যায়ে কোন প্রকার পূর্ব যোগাযোগ ছাড়াই নারী-পুরুষ মিলে ১৫-১৬ জনের একটি দল তাদের পোষা শূকর ও ছাগল বিক্রি করে টাকা যোগাড় করে রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে রওনা করে। শুকনো মৌসুম থাকায় কখনো হেঁটে, কখনো বোটে প্রায় ৩ দিন পর রাঙ্গামাটি শহরে এসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালকের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। উপপরিচালক সাহেব তাদের জানান, ইসলামের প্রচার-প্রসার ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য হলেও কাউকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার কার্যক্রম তাদের নেই। তবে ঢাকায় আবুজর গিফারী ট্রাস্ট এবং আরও কিছু সরকার অনুমোদিত বেসরকারি সংস্থা আছে যারা নওমুসলিমদের ইসলামী ধর্মীয় রীতি-নীতি শিক্ষা দিতে সাহায্য করে থাকে। তবে আগে এফিডেভিট করে মুসলমান না হলে উক্ত ট্রাস্টও সহায়তা করে না। এরপর তারা এফিডেভিট করে মুসলমান হয়ে ঢাকায় গিয়ে ইসলামের ধর্মীয় রীতি-নীতি শিখে আসেন। পরবর্তীতে তাদের দেখাদেখি ঐ গ্রামের হেডম্যানসহ সমগ্র লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ক্রমান্বয়ে পার্শ্ববর্তী সাংড়াছড়ি গ্রামের লোকজনও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে শুরু করেন।
উপরে উপজাতিদের কিছু কিছু লোকের মধ্যে ইসলাম গ্রহণের যে বিস্তারিত বিবরণী দেয়া হলো তাতে এটা স্পষ্ট যে, ইসলামের সাম্য-ভ্রাতৃত্বের আদর্শে মুগ্ধ হয়েই তারা ইসলাম গ্রহণ করে। তাদের উপর কোন চাপ প্রদান তো নয়ই, এমন কি এ জন্য কাউকে কোন প্রকার পার্থিব লোভ দেখানোও হয় না। অথচ এসব স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণকারী নওমুসলিমদের সাথে প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত কেউ কেউ এমন ব্যবহার করে থাকেন যেন ইসলাম গ্রহণ করে তারা মহা অপরাধ করে ফেলেছেন। তাদের হয়রানি করার ব্যাপারে এক শ্রেণীর ইসলাম বিদ্বেষী তথাকথিত আঁতেলেরও উৎসাহের কমতি যে নেই, তা তো স্পষ্ট হয়ে ওঠে এ ব্যাপারে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তির অতি উৎসাহ থেকে। গত ১ জানুয়ারি ২০১৩ মঙ্গলবার সাংড়াছড়ি এলাকার নওমুসলিম মো. করিম হোসেন (পূর্ব নাম হাসাজং ত্রিপুরা), মো. নূর ইসলাম (পূর্ব নাম সুবাসং ত্রিপুরা), মো. সোহেল (পূর্ব নাম বিন্দুলাল চাকমা)সহ কিছু নওমুসলিম রাঙ্গামাটি আসেন। তারা তাদের সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। নওমুসলিমদের দলটিকে ঢাকায় গমনের পূর্বে বাস কাউন্টারে দেখে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের রাঙ্গামাটিস্থ অস্থায়ী প্রতিনিধি তাৎক্ষণিকভাবে দুই চাকমা সাংবাদিককে টেলিফোন করে জানান। তারা সাথে সাথে বাস কাউন্টারে এসে তাদের ছবি তোলেন। তারা বাসে চড়ে পরদিন ২ জানুয়ারি ২০১৩ বুধবার ভোরে ঢাকার সবুজবাগ থানাকে টেলিফোনে জানান, আবুজর গিফারী কমপ্লেক্সে কিছু উপজাতি শিশুকে পাচারের জন্য রাখা হয়েছে। তাদের সাথে যে তাদের অভিভাকরাও আছেন তা গোপন রাখা হয়। একজন সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, একজন সাংবাদিক ও কিছু বুদ্ধিজীবী মাদ্রাসায় অভিযান চালানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করে। পুলিশ গিয়ে শিশুদের এবং তাদের অভিভাবকদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে বিস্তারিত জেনে এবং বৈধ কাগজপত্র দেখে শিশুদের ১১ জনকে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় দিয়ে দেয়া হয়। অভিভাবকরা পুনরায় তাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, ৫ জন শিশুর সঙ্গে অভিভাবক ছিল না। কারণ তাদের কেউ কেউ আগে থেকেই মাদ্রাসায় পড়ছিল। তাদের আপাতত তেজগাঁও ভিকটিম সপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। তাদেরও শেষপর্যন্ত খৃস্টান মিশনারীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হলে আশ্চর্যের কিছু নেই।
অনেকের বিশ্বাস, খৃস্টান মিশনারীদের আসল টার্গেট আবুজর গিফারী টাস্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সচিব একনিষ্ঠ গবেষক ইসলামের নিঃস্বার্থ সেবক ও শতাধিক গ্রন্থের প্রণেতা এজেডএম শামসুল আলম। কারণ যেসব উপজাতিকে খৃস্টান বানানোর টার্গেট করেছিল মিশনারীরা তারা যে ইসলাম গ্রহণ করে অসহায় হয়ে পড়ছে না তার পেছনে তার অবদান রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনীতির সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে পশ্চিমা সা¤্রাজ্যবাদের সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত রয়েছে। খৃস্টান মিশনারীরা সা¤্রাজ্যবাদের ছত্রছায়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি খৃস্টান অধ্যুষিত জনপদে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই লক্ষ্য অর্জিত হলে সা¤্রাজ্যবাদের পক্ষে মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র বাংলাদেশ একদিন পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিণত হবে নতুন এক পূর্বতিমুর অথবা দক্ষিণ সুদানে। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে বহু আগেই দেশের রাজনৈতিক নীতিনির্ধারকদের সাবধান করে দেয়া হয়েছে। অবিলম্বে এ ব্যাপারে সচেতন না হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি নতুন পূর্বতিমুর হিসেবে দেখা দেবে। রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দ কি দেশের রাষ্ট্রীয় অখ-তার স্বার্থে সময় থাকতেই এ ব্যাপারে সাবধান হবে?
লেখক: অগ্রজ ভাষা সৈনিক, প্রাবন্ধিক ও ফিচার সম্পাদক, দৈনিক ইনকিলাব
আরও খবর পড়ুন
হিন্দু থেকে মুসলিম হলেন একই পরিবারের ৫ জন
ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মুসলিমরা নির্মম নির্যাতনের শিকার
নায়িকা শাবনাজের বদলে যাওয়ার গল্প
মুসলিম হচ্ছেন বলিউডের সেক্স সিম্বল নায়িকা মমতা কুলকার্নি
আমি আল্লাহর কাছে তওবা করেছি আর ওড়না খুলবো না- ভীনা মালিক(ভিডিওসহ)
ইসলামকে জানার চেষ্টায় আমার চোখ খুলে গেল- মার্কিন সঙ্গীত শিল্পী জেনিফার(ভিডিওসহ)
চলচ্চিত্রে নিজের অভিনীত চরিত্র দেখলে এখন নিজেই বিব্রত হন শাবানা
খাগড়াছড়িতে অর্ধসমাপ্ত মসজিদ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলেন জেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা
One Reply to “উপজাতীয় নওমুসলিমদের ওপর খ্রিস্টান মিশনারীদের দৌরাত্ম”