নাইক্ষ্যংছড়িতে বাল্য বিবাহের হিড়িক: কু-চক্রী মহলের শিকারে পরিণত হচ্ছে প্রতিটি পরিবার
উপজেলা প্রতিনিধি, নাইক্ষ্যংছড়ি:
বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বাল্য বিবাহের হিড়িক পড়েছে । প্রতিটি পরিবারের নাবালক ছেলে -মেয়েরা এই বাল্য বিবাহের শিকারে পরিণত হচ্ছে প্রতিনিয়িত। উপজেলার কিছু সংখ্যক দুষ্টু প্রকৃতির লোকের ইশারা এই বাল্য বিবাহের শিকারে পরিণত হচ্ছে অবুঝ নাবালক ছেলে মেয়েরা । অভিযোগে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বড়ুয়া পাড়ার রুবেল বড়ুয়ার পুত্র রাসেল বড়ুয়া পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রী । নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম সনদ অনুযায়ী তার বয়স ১৫ বছর ২ মাস । যার নিবন্ধন বহি নং-৬,নিবন্ধনের তারিখ-১৩/০৮/২০১১ ইং । জন্ম নিবন্ধন নম্বর ১৯৯৮০৩১৭৩৭৬০২৫১০১ । তার বিবাহের বয়স না হওয়ার পরও ছেলের মামা টাকার লোভে রাসেল বড়ুয়াকে দিয়ে মিথ্যা বানোয়াট নোটারী রেজিষ্টেশন মূলে উপজেলার সীমান্তবর্তী ঘুমধুমের লক্ষীকান্ত মেম্বার পাড়ার সুবরন বড়ুয়ার কণ্যা মানিকা বড়ুয়া (২৫) এর সাথে বিবাহ সম্প্রদান করেন । ভূঁয়া ওই নোটারী রেজিষ্টেশন মূলে বিবাহ না মানায় ছেলে ও ছেলের মা-বাবার বিরুদ্ধে উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরে মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে বলে জানা যায় ।
এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ওই বিবাহ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে কাগজের গরমিল পাওয়া যায় । থানায় কাগজ পত্র পাঠালেও থানা কাগজ পত্র গরমিল থাকায় অভিযোগ খানা ফেরত দিয়েছে । এই বিষয়ে রাসেল বড়ুয়ার মাতা মিনু বড়ুয়া জানান, আমার ছেলের বয়স এখনও ২১ বছর পূর্ণ হয়নি । তার বয়স ১৫ বছর । এই সময় বিয়ে হলে তার ভবিষৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে । আমার পরিবার ও ছেলের ভবিষৎ এর কথা বিবেচনা করে পুলিশ-প্রশাসন ও সচেতন মহলের কাছে দাবী, এই সময় যাতে এই বিয়ে দেওয়া না হয় । এই বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি । এবং কু-চক্রী ও ষড়যন্ত্রকারী নাইক্ষ্যংছড়ি বড়ুয়া পাড়ার ধর্মরাজ বড়ুয়ার পুত্র টুনু বড়ুয়া (৪৫),কক্সবাজার জেলার উখিয়ার মাঝের পালং এলাকার ফকির বড়ুয়ার পুত্র অমর বড়ুয়া (৩৮) এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান ।
উপজেলার দালাল প্রকৃতির একজন প্রবীন পিটিশন রাইটারের ষড়যন্ত্রে এই মিথ্যা বাল্য বিবাহ দেয় কু-চক্রী মহল । রাসেল বড়ুয়ার পিতা রুবেল বড়ুয়া বলেন, আমার ছেলে নাবালক । কিছু লোক ষড়যন্ত্র করে আমার ছেলেকে মিথ্যা বিয়ে দিচ্ছে । সে এখনও বিয়ে বা সংসার কি জিনিস জানে না । এমন ঘটনা প্রতি সম্পাহে উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ঘটছে সর্বত্র । গেল মাসে বালিকা বিদ্যালয়ের মনু মিয়ার মেয়েকে বাল্য বিবাহ দিচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ জামিল অভিযান চালিয়ে বাল্য বিবাহটি পন্ড করে দেয় । প্রশাসনের চোখের আড়ালে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় প্রতি সম্পাহে ২-৩টি বাল্য বিবাহের শিকার হচ্ছে অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষ । কেউ পরিস্থিতির শিকার হয়ে এমন অপরাধের শিকার হচ্ছে বলে জানান নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ডা: ইসমাইল । নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ জামিল বলেন,-বাল্য বিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি । এলাকার জনগণ সচেতন হলে এই বাল্য বিবাহ রোধ হবে । আমি এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকে গোপন সংবাদে খবর পেয়ে ৩টি বাল্য বিবাহ বন্ধ করে দিই ।