পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের কর্মসূচি গ্রহণ

fec-image

পার্বত্য চট্টগ্রামে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির অবসানের লক্ষে আওয়ামী লীগ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে সুদীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পার্বত্য সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি এটিকে রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদকালে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) মধ্যে কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে তিন পার্বত্য জেলায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটে। জনগণ শান্তি চুক্তি পূর্ববর্তী সেই রক্তাক্ত সংঘাতময় দিনগুলিতে ফিরে যেতে চায় না। তাই পার্বত্য জনজীবনে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির গুরুত্ব অনেক বেশি। এর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিবদমান দুই দশকের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান হয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হয়। সে প্রক্রিয়া এখনো চলমান।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রতি বছর গুরুত্ব সহকারে দিনটি পালন করতে যাচ্ছে। ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের রজতজয়ন্তী ২৫ বর্ষপূতি সুষ্ঠু, সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালনের লক্ষে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ দুই দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা খাগড়াছড়ি অফিসার্স ক্লাবে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন করবেন ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা সম্পন্ন) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। সকাল ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিষয়ে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, সকাল ১১টায় সরকারি গণগ্রন্থাগারে ভ্রাম্যমাণ সংগীত পরিবেশনা কার্যক্রমের উদ্বোধন, জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এসআইডি-সিএইচটি, ইউএনডিপি প্রকল্পের প্রশিক্ষিত যুব মহিলাদের সেলাই মেশিন বিতরণ ও জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষ গরীব দুস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ, সন্ধ্যায় জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির উপর নির্মিত প্রমাণ্য চিত্র প্রর্দশন করা হবে।

পরদিন শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় বর্ণাঢ্য র‌্যালির উদ্বোধন করবেন, ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা সম্পন্ন) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। র‌্যালিটি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে হতে শুরু হয়ে শাপলা চত্বর হয়ে খাগড়াছডি টাউন প্রাঙ্গণে এসে শেষ হবে। সকাল সাড়ে ৯টায় র‌্যালি শেষে “শান্তিচুক্তি একটি ঐতিহাসিক অর্জন” হিসেবে উপলব্ধি করতে টাউন হল চত্বরে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক প্রদান ও কেক কাটা শেষে বর্ণিল ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হবে।

এছাড়াও সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। দুপুর ১টায় শিশু সদন/এতিমখানা/অনাথ আশ্রমে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, বিকাল ৩টায় খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে সম্প্রীতি কনসার্ট, সন্ধ্যায় একই স্থানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন-আতসবাজি ও ফানুস উড়ানো, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্ব স্ব উদ্যোগে আলোজসজ্জার আয়োজন করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন