পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ছাড়া বৈসাবি উৎসব সফল হবে না- উষাতন তালুকদার
স্টাফ রিপোর্টার:
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ছাড়া পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন, ২৯৯ রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছরেও পাহাড়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের বৈসাবি উৎসব পালন করার মতো পরিস্থিতি গড়ে উঠেনি। কারণ এখনো চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। যে কোনো আনন্দ উৎসবের জন্য দরকার সুষ্ঠু, স্বাভাবিক ও ভীতিমুক্ত পরিবেশ। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, জাতিগত বৈষম্য, নির্যাতন, নিপীড়নসহ নানা বঞ্চনার কারণে জুম্ম জনগণ আজও ভীত-সন্ত্রস্ত। ফলে উৎসবে জুম্ম জনগণের মনে আনন্দের ছাপ নেই।
রবিবার সকাল ১০টায় জুম্ম সংস্কৃতি বিলুপ্তির ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ হোন এ স্লোগানকে সামনে রেখে রাঙামাটি পৌরসভা চত্বরে বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসু, বিহু, বিষু (বৈসাবি) চারদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ঊষাতন তালুকদার এসব কথা বলেন।
এসময় বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসু, বিহু, বিষু (বৈসাবি) উযাপন কমিটির আহবায়ক ও আদিবাসি ফোরামের পার্বত্য চট্টগ্রাম ক অঞ্চলের আহবায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির আহবায়ক গোতম দেওয়ান, এমএন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের সদস্য রিতা চাকমা প্রমুখ।
এ সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার আরও বলেন, দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগুলো এখনো সাংবিধানিক স্বীকৃতি পায়নি। প্রতিটি সম্প্রদায় নিজস্ব জাতি হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু শাসক গোষ্ঠি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিচয় চাপিয়ে দিয়ে তাদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের বুকে উৎসব আনন্দ ও সংস্কৃতির লালন, বিকাশ এবং পাহাড়ি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প কিছুই নেই। তাই জুম্মজাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চুক্তি বাস্তবায়নের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সামিল হতে হবে।
তিনি অবিলম্বে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নসহ দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোকে সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান।
এ আগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠেিদর প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিহু ( বৈসাবি)। উৎসব পৌরসভা প্রাঙ্গনে বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন ঊষাতন তালুকদার এমপি। পরে রাঙামাটি শহরে একটি বিশাল র্যালী বের করা হয়।
র্যালীতে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী চাকমা, মারমা, খুমী, ম্রো ও চাক, বম, খিয়াং, তঞ্চঙ্গ্যা, অহমিয়া, পাংখোয়া ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শত শত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এসময় র্যালীটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষির্ণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সামনে গিয়ে শেষ।