পেকুয়ায় এক বসতবাড়িতে সশস্ত্র ডাকাতি: গুলিতে এক দিনমজুর নিহত

10841329_729750973785859_499504033_n

মো: জুবাইদ, পেকুয়া :

পেকুয়ায় গভীর রাতে এক বসতবাড়িতে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এ সময় ডাকাতের গুলিতে ওই এলাকার এক দিনমজুর নিহত হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব গোয়াঁখালী সাকোর পাড়া (টেক পাড়া) এলাকার নুর আহমদের পুত্র মীর কাশেমের বসতবাড়িতে ঘটনাটি ঘটছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায় ওই দিন রাতে মুখোশপরা সশস্ত্র ৬/৭ জন ডাকাত মীর কাশেমের বসতঘরে হানা দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ঘরের লোকজনকে মারধর করে। পরে ডাকাতরা মীর কাশেমের স্ত্রী ছেনু আরা বেগমকে রশি দিয়ে বেধে শারিরিক নির্যাতন ও মারধর করে। এ সময় মীর কাশেম ডাকাত আসছে বলে চিৎকার করলে ডাকাতরা তাকে ছুরির আঘাত করে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। এতে মীর কাশেম গুরতর আহত হয়। এক পর্যায়ে মীর কাশেম ডাকাতদের কবল থেকে কৌশলে পালিয়ে গিয়ে ডাকাত এসেছে বলে চিৎকার করলে গ্রামবাসীরা বের হয়ে ডাকাতদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে ডাকাতরা গ্রামবাসীকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এসময় ডাকাতের গুলিতে ওই এলাকার ওলা মিয়ার পুত্র আবদুল খালেক(২৬) ঘটনাস্থলে নিহত হয়।

পরে বেশি লোকজন জড়ো হতে দেখে ডাকাতরা ফাঁকা গুলি করে ঘরের মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রকিব সঙ্গী নিয়ে দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌছেন এবং লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। রোববার সকাল সাড়ে ১০ টায় লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। এদিকে পেকুয়া থানা পুলিশ মীর কাশেমকে উদ্ধার করে পেকুয়া সদর হাসপাতালে ভর্র্তি করে।

এদিকে মীর কাশেমের স্বীকারোক্তি মতে জানা যায় সরকারী ঘোনা এলাকার মতলবের পুত্র বেলালের সাথে মীর কাশেমের বসতবাড়ির জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলছে। জায়গা জমি সংক্রান্ত শত্রæতার জের ধরে গত ২৩ নভেম্বর রাত দেড়টার সময় পূর্ব গোয়াখালী এলাকার ফরিদ আহমদের পুত্র লালু মীর কাশেমের বাড়ীতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসে। সর্বশেষ শনিবার দিবাগত রাতে পূর্ব গোয়াখালী এলাকার ফরিদ আহমদের পুত্র লালু এবং একই এলাকার আকতার আহমদ প্রকাশ বলি আক্তারের পুত্র জেল ফেরত বাহাদুরের নেতৃত্বে সশস্ত্র মুখোশপরা ৬/৭ জন ডাকাতরা হামলা করছে এবং আবদুল খালেককে গুলি করছে বলে মীর কাশেম জানায়। তিনি আরো জানান ঘরের ভিতরে যখন ডাকাতরা প্রবেশ করে তখন এই দু জনকে চিনতে পারে মীর কাশেম। প্রতিপক্ষগণ আমাদেরকে ওই জায়গা থেকে উচ্ছেদ করার জন্য টাকা দিয়ে ডাকাতদের মাধ্যমে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করেন মীর কাশেম।

এদিকে নিহত দিনমজুর আবদুল খালেকের ২ বছরের একটি শিশু কন্যা সন্তান রয়েছে। নিহত আবদুল খালেকের মা-বাবা ও স্ত্রী এবং দু বছরের শিশু কন্যার আহাজারিতে আকাশ যেন ভারী হয়ে উঠেছে। এদিকে মা-বাবার পুত্রহারানোর শোক অপরদিকে ছোট শিশুটির বাবা হারানোর শোকে থানা কম্পাউন্ডে আহাজারি চলছে।

ঘটনার খবর পেয়ে রোববার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে চকরিয়া-পেকুয়ার দায়িত্বরত অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার মাসুম আলম পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রকিব-কে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে জানতে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবদুর রকিব‘র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এটি জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের। তিনি আরো জানান লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রির্পোট ফেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন