আজ রামগড় পৌর নির্বাচন : আ.লীগ-বিএনপির টার্গেট স্বতন্ত্রপ্রার্থী

Ramgarh 24.5.16(1)
রামগড় প্রতিনিধি
বুধবার ২৫ মে খাগড়াছড়ির রামগড় পৌরসভার তৃতীয় নির্বাচন। পৌরসভার ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি মঙ্গলবারই সম্পন্ন করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন পরিবশে ভোট গ্রহণের জন্য র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মোতায়েনের মাধ্যমে কড়া নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করা হয়েছে। সকাল আটটা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

এদিকে, ভোটারদের অভিমত ও নির্বাচনের সর্বশেষ অবস্থা বিশ্লেষন করে ধারণা করা হচ্ছে, রামগড় পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে তিন প্রতিদ্বন্দ্বির মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মো. শাহজাহানই (কাজী রিপন) প্রধান টার্গেট আওয়ামীলীগ ও বিএনপির । দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসায় আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর জয়ের পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িছেন তিনি। এছাড়া সদ্য অনুষ্ঠিত খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগের প্রার্থী পরাজিত হওয়ার কারণে রামগড় পৌরসভার নির্বাচন এখন দলটির জন্য একদিকে চ্যালেঞ্জ , অন্যদিকে প্রেস্টিজ ইস্যূ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: শাহজাহান (কাজী রিপন)কে  মূল টার্গেট করে দলীয় প্রার্থী বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী(বিশ্ব ত্রিপুরা)কে বিজয়ী করতে মরিয়া হয়ে লড়ছে দলটি।

অন্যদিকে  পাহাড়ি বাঙ্গালি ইস্যূতে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনিত প্রার্থীর অবস্থান ততটা শক্ত নয় এমন ধারণায় বিএনপিরও মূল টার্গেট স্বতন্ত্রপ্রার্থী ম. শাহজাহান (কাজী রিপন)। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক রামগড় বাজরের এক ব্যবসায়ী(ভোটার) বলেন, অন্যান্য বারের মত এবারের পৌরসভা নির্বাচনেও জাতিগত ইস্যূটি ভোটারদের মধ্যে কাজ করছে। এ অবস্থায় বিএনপি ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে হচ্ছে।

আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী(বিশ্ব ত্রিপুরা) বলেন, এবার ভোটাররা জাতিধর্ম ও সম্প্রদায়ের উর্ধ্বে উঠে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে তাঁকেই নির্বাচিত করবেন। প্রচার প্রচারণায় ভোটাদের ব্যাপক সাড়া দেখে এমনটাই ধারণা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে রামগড় পৌরসভাকে মাদক মুক্ত এবং ডিজিটাল পৌরসভায় রুপান্তরিত করার কাজ করবেন। এছাড়া বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের পক্ষে জোরালো ভুমিকা রাখবেন।

বিএনপির প্রার্থী হাফেজ আহমদ ভুইয়া বলেন, দুই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী এখনও তরুণ। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিচারে ভোটাদের সর্বাধিক সমর্থন তাঁর দিকে। বিপুল ভোটে  বিজয়ী হওয়ার আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে পৌর এলাকার শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করবেন। এছাড়া দারিদ্র বিমোচন ও মাদক বিরোধী কার্যক্রমে গুরুত্ব দেবেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: শাহজাহান (কাজী রিপন) বলেন, তাঁর জনসমর্থন দেখে আওয়ামীলীগ বেসামাল হয়ে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ভাড়াটে লোকজন এনে ভোটের কাজ করিয়েছে। মানুষকে হুমকি, ধমকি প্রদর্শন করেছে। ভোটাররা ভোটের মাধ্যমে তাদের এ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জবাব দেবে। সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ ভোট হলে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন বলে জানান তিনি। কাজী রিপন বলেন, এবার নির্বাচিত হলে তাঁর অসমাপ্ত উন্নয়নমূলক কাজ সমাপ্ত করবেন। পৌরসভাকে একটি আকর্ষনীয় পর্যটন শহরে রুপান্তরিত করার কাজ করবেন।
এদিকে ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মোট ৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া তিনটি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত জন প্রার্থী।

খাগড়াছড়ি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রির্টানিং অফিসার মো. নুরুল আলম বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, ৯টি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা  রক্ষার জন্য একজন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট ও চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া নিরাপত্তার কাজে র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারবাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। রির্টানিং অফিসার বলেন, মংগল রাত থেকেই কাজ শুরু করেছেন নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিতরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন