চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের কেউ প্রার্থী হয়নি

পানছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা কাকে ভোট দিবে?

fec-image

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৬ প্রার্থী। তবে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী নেই। চেয়ারম্যান পদে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সকলেই কোনো না কোনো সশস্ত্র আঞ্চলিক সংগঠন সমর্থিত। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং সমর্থিত অথবা সাধারণ কোনো প্রার্থী নেই। এ নিয়ে চলছে নানা রকমের বিশ্লেষণ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সমর্থকেরা চেয়ারম্যান পদে ভোট কাকে দেবে?

জেলা নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে পানছড়ি উপজেলায় ৫ ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে ৫৬ হাজার ৫ জন। এর মধ্যে পরুষ ভোটার ২৮ হাজার ২৪ জন এবং নারী ভোটার ২৭ হাজার ৯৮০ জন। পানছড়ি উপজেলায় ভোট কেন্দ্র রয়েছে ২৫ টি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পানছড়ি উপজেলায় ১১টি কেন্দ্রে কোনো ভোট পড়েনি।

আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পানছড়ি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে বিএনপি ভোট বর্জন করছে। চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তবে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী নেই। বাছাইয়ের দিন পানছড়ি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে শান্তি জীবন চাকাম ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে সঞ্চয় চাকমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। দুজনেই ফেরারি আসামি। তথ্য গোপন করেছেন হলফনামায়।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া বা না হওয়ার অধিকার সকল নাগরিক এবং দলের রয়েছে। ভোট দানের ক্ষেত্রেও ভোটারের স্বাধীনতা রয়েছে। তবে অবশ্যই একটি দলের নীতি-নৈতিকতা আদর্শের ব্যাপার রয়েছে।পানছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়রা কাকে ভোট দিবেন। প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হলেও রাজনৈতিক আদর্শ পরিচয় বহন করে।উপজেলা আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে আগ্রহী এমন কাউকে তৈরি করতে না পারা অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যর্থতা। যেহেতু আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল।

খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী বলেন, পানছড়িতে সাধারণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা কষ্টসাধ্য। তবুও উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঘরনার একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার প্রয়োজন ছিল। প্রার্থী দিতে না পারা অবশ্যই সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং ব্যর্থতা বলে মনে করেন তিনি।

পানছড়ি উপজেলায় আঞ্চলিক সংগঠনের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের দেওয়ায় ভোট নবরঞ্জন ত্রিপুরা নামে একজনকে হত্যা করা হয়েছিলো।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না শর্তে পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের জনৈক নেতা জানান, চেয়ারম্যান পদে না থাকলেও ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করা প্রার্থী রয়েছেন। যেহেতু কেন্দ্রীয় ভাবে দলীয় কোনো প্রার্থী নেই। সেহেতু জনগণ ইচ্ছে মতো ভোট দিবেন। মন্দের ভালো বেছে নেবে জনগণ।

চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত কারো আগ্রহ ছিল না বলেও জানান তিনি। টানা এত বছর ক্ষমতায় থাকার পরও পানছড়িতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে শাসকদলের প্রার্থী দিতে না পারাকে চরম রাজনৈতিক ব্যর্থতা মনে করেন সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, পানছড়ি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন