বসুন্ধরা করোনা হাসপাতালে সাংবাদিকদের জন্য ২০০ শয্যা বরাদ্দের প্রস্তাব ব্যবস্থাপনা পরিচালকের 

fec-image

আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্থাপিত ২০১৩ শয্যাবিশিষ্ট আইসোলেশন ইউনিটে সাংবাদিকদের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর কমপক্ষে ২০০ শয্যা বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছেন।

রবিবার (১৭ মে) বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহানকে নিয়ে ফিতা কেটে ২০১৩ শয্যার হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সেখানে সায়েম সোবহান আনভীর এ প্রস্তাব দেন। এ সময় বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহানও উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা বাইরে কাজ করছে। এই হাসপাতালে কমপক্ষে তাদের জন্য ২০০টি শয্যা বরাদ্দ করা উচিত।

উল্লেখ্য, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে।

বসুন্ধরার কাছ থেকে আইসিসিবি’র সকল স্থাপনা বুঝে নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দিতে গত ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর (এইচইডি)। জনবল নিয়োগসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ চিকিৎসাসেবার জন্য খুলে দেয়া হলো হাসপাতালটি।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক এবং নিউজ টুয়েন্টিফোর ও রেডিও ক্যাপিটালের সিইও নঈম নিজাম, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বসুন্ধরা গ্রুপের গণমাধ্যম উপদেষ্টা আবু তৈয়ব, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. সাজ্জাদ হায়দার ও আইসিসিবি’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলানিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম এর সম্পাদক জুয়েল মাজহার, আইসিসিবি হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. এহসানুল হক, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান সরোয়ার প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের অন্যতম বড় শিল্পগোষ্ঠী। দেশের এই দুর্যোগে গ্রুপটি দেশ ও মানুষের সেবায় এগিয়ে এসেছে। তাদের অন্যতম বড় স্থাপনা ছেড়ে দিয়েছে করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নির্মাণে।

এছাড়া সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ২০১৩ শয্যার এই আইসোলেশন সেন্টারটি দেশের সবচেয়ে বড় আইসোলেশন সেন্টার। এছাড়া এখানে অক্সিজেন, ভেন্টিলেশনসহ ৭১ বেডের আইসিইউ প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। প্রয়োজন হলেই রোগীকে আইসিইউ সেবা দেওয়া যাবে। এত বড় একটি হাসপাতাল করার সুযোগ করে দেওয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে পর্যায়ক্রমে জনবল নিয়োগ করা হচ্ছে। প্রথমে ৫০০ রোগীর চিকিৎসার জন্য জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। রোগীর উপর ভিত্তি করে পরে আরও ৫০০ রোগীর জন্য জনবল নিয়োগ করা হবে। এভাবে ধাপে ধাপে বাকি শয্যাগুলোর জন্য জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান বলেন, আমরা সুষ্ঠুভাবে হাসপাতালটি করতে পেরেছি এটা বড় আনন্দের। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই যে, উনি আমাদের হাসপাতাল তৈরির প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছেন। আমরা যতটুকু সম্ভব ততটুকু করেছি, এখন হাসপাতালটি যাতে ঠিকভাবে পরিচালিত হয়, রোগীরা যাতে কাঙ্ক্ষিত সেবা পায় এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাই। এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। সবার প্রতি আমার অনুরোধ আমরা যেন এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলায় যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসি। তিনি করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা সাংবাদিকদের জন্য হাসপাতালে ২০০ টি বেড বরাদ্দ রাখার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।

উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর।

আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন