বাংলাদেশে আশ্রয় নিলো বিজিপির আরো ১২৮ সদস্য

fec-image

মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে উত্তর রাখাইন থেকে ৩ দিনে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির অন্তত ১২৮ সদস্য।

গত শুক্রবার থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত এরা পালিয়ে এসেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় সংবাদমাধ্যম ইরাবতী। এ সময় তাদের কাছে অস্ত্র-গোলাবারুদও ছিল।

জানা যায়, রবিবার (৫ মে) ভোরে ৩টি কাঠের ট্রলার যোগে নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে ৮৮ জন বিজিপি সদস্য। এদের মধ্যে ৩ জন সিনিয়র অফিসার রয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে শুক্রবার (৩ মে) মধ্যরাতে টেকনাফের সাবরাং আচারবুনিয়া দিয়ে ১৪ জন এবং নাজিরপাড়া সীমান্ত দিয়ে ২২ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন। পরে নাজিরপাড়া দিয়ে আজ শনিবার (৪ মে) সকালে আরও ৪ জন বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের বরাতে ইরাবতী জানিয়েছে, রোববার সকালে দুটি নৌকায় ৮৮ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর আগের ২ দিনে অনুপ্রবেশ করে বাকিরা। এদের মধ্যে তিনজন মেজর রয়েছেন বলে জানা যায়।

ইরাবতী জানায়, পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যদের টেকনাফের একটি সরকারি স্কুলে রাখা হয়েছে। তারা বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন। বিজিবি কর্মকর্তারা বলছেন, বিজিপির ১২৮ সদস্যের কেউই আহত নন বা তাদের কারো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।

এর আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমার সেনাবাহিনী, বিজিপিসহ ৬১৮ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল ২৮৮ জন এবং গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে স্বদেশে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) একটি সদরদপ্তর দখলে নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মি। গত শুক্রবার রাখাইনের মংডু শহরের উত্তরে অবস্থিত বিজিপি সদরদপ্তরটির নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি

গত বৃহস্পতিবার কিই কান পিয়েন বর্ডান গার্ড পুলিশ হেডকোয়ার্টারটিতে আক্রমণ করে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। কিই কান পিয়েন গ্রামের অবস্থান মংডু থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে। আরাকান আর্মির একটি সূত্র জানিয়েছে, লড়াইয়ে কুলিয়ে উঠতে না পেরে বিজিপির কমান্ডাররা জান্তা সরকারের হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে যান।

মংডুর পূর্বের নিও থিট কিই এবং ইন ডিন আউটপোস্টে জান্তা বাহিনীর শক্তিশালি অবস্থান রয়েছে।

রাখাইনের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, এ সময় অন্তত ৫০ জন জান্তা সেনা আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের সদস্যরাও হেডকোয়ার্টারটির প্রতিরোধে অংশ নিয়েছিল। তবে এই তথ্যটি স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।

গত বছরের নভেম্বরে জান্তার বিরুদ্ধে সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রাখাইন ও চীন প্রদেশের ৯টি শহর দখল করেছে আরাকান আর্মি

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বিজিপি, মিয়ানমার, সীমান্ত উত্তেজনা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন