সীমান্ত উত্তেজনা ও বাংলাদেশ-মায়ানমার সম্পর্কের বহুমাত্রিক নয়া চ্যালেঞ্জ

fec-image

বাংলাদেশের নতুন চ্যালেঞ্জের নাম বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্ত। অন্যভাবে বললে বলা যায়, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা। গত ১৩ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও সেদেশের বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সাথে নতুন করে যুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত আরাকান আর্মির সম্পূর্ণ দখলে যাওয়ার পর বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্ত এমন একটি পরিস্থিতিতে উন্নীত হয়েছে যা প্রথাগত কেতায় বা পুঁথিগত বিদ্যায় সংজ্ঞায়িত করা একটু জটিল। এই জটিলতা বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় বহুমুখী চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী, বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী, প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য।

বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের ২৭২ কি.মি. সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ কি.মি. নদী পথে। বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্ত আরাকান আর্মির দখলে চলে আসার পর বর্তমানে সীমান্তে যুদ্ধের মাত্রা অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ঘুমধুম, তুমব্রু সীমান্ত এলাকার কিছুটা শান্ত হলেও, নতুন করে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত দুই দিনে এই সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী যেমন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, একাধিকবার রোহিঙ্গারাও প্রবেশের চেষ্টা করেছে। যদিও রোহিঙ্গাদের বিজিবি পুশব্যাক করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের আগমন পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। স্থানীয়দের দাবী, দুর্গম সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানিদের মতো করে দুই/চারজন করে রোহিঙ্গারা আসছে। কিন্তু ধরা পড়ার ভয়ে তারা ক্যাম্পে প্রবেশ না করে স্থানীয় বা পূর্ব থেকে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে লুকিয়ে থাকছে। শুধু রোহিঙ্গা নয়, সীমান্তের ওপারে থাকা বেশ কিছু উপজাতি সদস্যও ইতোমধ্যেই একই কায়দায় প্রবেশ করে স্থানীয়দের মাঝে গা ঢাকা দিয়েছে। বাকিরাও সীমান্তে অপেক্ষায় রয়েছে। মূলতঃ নিরাপত্তা ও খাদ্য সঙ্কটের ফলে তাদের সামনে এ ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই।

কিন্তু সীমান্তের ওপার থেকে এখনো বাংলাদেশের দিকে গুলি আসছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ- মায়ানমার সীমান্তে যেসব যুদ্ধ চলছে তার বেশির ভাগই আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের মধ্যে। মূলত মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর পরিত্যক্ত ক্যাম্পগুলো থেকে রোহিঙ্গা সশস্ত্র সংগঠনগুলো যে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র সরিয়ে নিয়ে গেছে, সেসকল অস্ত্র হস্তগত করার জন্যই আরাকান আর্মি সীমান্তে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। তবে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার আর্মির মধ্যেও যুদ্ধ থেমে নেই। সেই যুদ্ধ এখন সীমান্ত থেকে কিছুটা ভিতরে সংঘটিত হচ্ছে। তবে এই লেখার আলোচ্য বিষয় সেটি নয়।

বাংলাদেশের সামনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নিরাপদ করা। যুদ্ধের তীব্রতা কমার কারণে বাংলাদেশের সীমান্তবাসীরা নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছে। অনেকেই সীমান্তবর্তী জমিতে চাষাবাদ করতে যাচ্ছেন।  এতে তারা বিভিন্ন স্থানে মর্টার সেল, রকেট সেল খুঁজে পাচ্ছেন। অনেকেই না বুঝে হাতে করে, কাঁধে করে বাড়িতে নিয়ে আসছে। একটু অসতর্কতায় বিষ্ফোরিত হলে যে কতটা ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনতে পারে সাধারণ মানুষের পক্ষে তা বোঝা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর আশু কর্তব্য, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে পড়ে থাকা অজ্ঞাত বোমা, মর্টার সেল, রকেট সেলগুলো উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করা এবং এলাকার মানুষদের নিকট থেকে তা দূরে সরিয়ে নেয়া।

অন্যদিকে বিজিপি, মিয়ানমার সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য সরকারী অফিসের সদস্যরা যখন বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, সীমান্তবর্তী এলাকায় সাধারণ মানুষ; আরএসও, এআরএ, আরসার মত রোহিঙ্গা সশস্ত্র বাহিনীগুলো তাদের হাত থেকে অনেক অস্ত্র নিয়ে নিয়েছে বিজিপির হাতে জমা দেয়ার কথা বলে। এই নিয়ে নেয়া অস্ত্র ও গুলির কতগুলো শেষ পর্যন্ত জমা পড়েছে আর কতগুলো জমা পড়েনি- তা খতিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরী। প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক, কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে এবং কিছু অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা যায়নি। এই অনুদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো কাদের হাতে রয়েছে, প্রথম হাতেই রয়েছে নাকি হাত বদল হয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে এবং কোথায় গিয়েছে, তা জানা অত্যন্ত জরুরি। এ সকল অস্ত্র যদি রোহিঙ্গা ক্যাম্প বা দেশের অভ্যন্তরের সন্ত্রাসীদের কাছে চলে আসে, তাহলে তা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাছাড়া এই অঞ্চলে বহুবার জঙ্গি তৎপরতা এবং এখানকার দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের অনেক খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেটাও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার দাবি রাখে। এছাড়াও পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরাও ঢুকেছে কিনা সেটা অনুসন্ধানও জরুরী। কিন্তু এখানে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক এ দাবী করতে পারছি না। কেননা যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারত না। কেননা, সীমান্ত প্রকৃতপক্ষে জনশূন্য করতে পারলে এ ধরণের পরিস্থিতি রোধ করা সহজ হতো।

সীমান্ত থেকে প্রাপ্ত প্রায় সকল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিজিপির সদস্যরা যখন বাংলাদেশে প্রবেশ করছে তখন শত শত বাংলাদেশী সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের রিসিভ করে বাংলাদেশের ভেতরে নিয়ে আসছে। এটা কোনভাবেই কাম্য হওয়ার কথা ছিল না। অথচ বিজিবি বারবার বলছে, সীমান্ত খালি করে দেয়ার কথা, লোক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার কথা, কিন্তু বাস্তবে তার বাস্তবায়ন খুবই কম দেখছি। এছাড়াও যেহেতু একেবারেই সীমান্তবর্তী এলাকায় যুদ্ধ চলেছে, একটু এদিক-সেদিক হলেই এই লোকগুলো ব্যাপকভাবে জীবনের ঝুঁকিতে পড়তে পারতো। তাছাড়া এই ধরনের স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র কোনভাবেই সাধারণ মানুষের হ্যান্ডেল করার কথা নয়। তারা জানে না এগুলো কিভাবে সংরক্ষণ বা নাড়াচাড়া করতে হয়। প্রাপ্ত একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও তার লোকজন তার কার্যালয়ে বিজিপির অস্ত্রগুলো জমা রাখছে এবং গোলাবারুদ সাজিয়ে রাখছে। যদিও তিনি এসব অস্ত্র পরে বিজিবির কাছে জমা দিয়েছেন। কিন্তু এর ভেতরে যদি কোন দুষ্ট লোক দুয়েকটি সরিয়ে ফেলে থাকে তা এই ধরনের জটিল পরিস্থিতিতে আলাদা করে খেয়াল করা খুব কঠিন ছিলো। এটা কোনভাবেই কাম্য হওয়ার কথা ছিল না।

প্রাপ্ত আরেকটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, সীমান্তবর্তী তুমব্রু লেফট ক্যাম্প, রাইট ক্যাম্প ও নাইদাসাং ক্যাম্পে কিছু রোহিঙ্গা সশস্ত্র যোদ্ধারা প্রবেশ করে সেখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের পাশাপাশি অনেক কাঁধে গ্রহণযোগ্য হালকা অস্ত্র ও ভারী আর্টিলারি গোলাবারুদ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভরে নিয়ে গেছে। এরা নিজেদেরকে আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি(এআরএ) বলে পরিচয় দিলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আরসা থেকে বেরিয়ে যাওয়া নবী হোসেন গ্রুপের সদস্য। এছাড়াও আরএসও’র যোদ্ধারা ছিল এই তালিকায়। প্রশ্ন হল, এই সমস্ত আর্টিলারি গোলাবারুদ ব্যবহারের জন্য আর্টিলারি গান এই সমস্ত সশস্ত্র সংগঠনের কাছে নেই। এগুলো ব্যবহার সম্পর্কে তাদের ভালো ধারণাও নেই। ফলে এগুলোর ভুল ব্যবহার ও ভুল সংরক্ষণের কারণে বিস্ফোরণ ঘটলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। এই সমস্ত সংগঠনগুলোর তৎপরতা যেহেতু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রয়েছে কাজেই তারা যদি এগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে আসে কোনভাবে, তাহলে কী ভয়াবহ বিপদ ঘটতে পারে তা কল্পনা করাও কঠিন। এছাড়াও তারা যেহেতু এটা ব্যবহার করতে পারবে না, সে কারণে অন্য কোন সশস্ত্র বা জঙ্গি সংগঠনের কাছে বিক্রি করে দেয় টাকার জন্য এবং সেসব সংগঠনের যদি বাংলাদেশে কোন তৎপরতা থাকে এবং তারা ব্যবহার করে তাহলে ভয়াবহ বিপদ। তাছাড়া ছুঁড়তে না পারলেও এসব গোলাতে ডেটনেটর লাগিয়ে তারা বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। ইসরাইল হামাস যুদ্ধে আমরা দেখতে পেয়েছি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ছোঁড়া অবিস্ফোরিত বোমাগুলো বিশেষ প্রক্রিয়ায় খুলে হামাস যোদ্ধারা সেগুলোর ভেতরে থাকা বিস্ফোরক দিয়ে আইডি ও মিসাইল ওয়ারহেড তৈরি করেছে। একই প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গা সশস্ত্র যোদ্ধারা যদি এ সমস্ত ভারী কামানের গোলা খুলে তার ভিতরে থাকা বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দিয়ে অসংখ্য আইডি বা হাতে তৈরি মাইন বানাতে সক্ষম হয় এবং সেটা যদি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বা বাংলাদেশের ভিতরে চলে আসে, তাহলে বিরাট নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।

অন্যদিকে এই লুটপাট এর সময় তারা অনেক হাতে বা কাঁধে বহন যোগ্য স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গেছে। এছাড়াও যে সমস্ত বিজিপি সদস্যরা আত্মসমর্পণের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, স্থানীয়দের দেয়া মতে, সীমান্ত এলাকায় তাদের কাছ থেকে আরএসও এবং অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনগুলো তাদের অস্ত্র গোলাবারুদ কেড়ে রেখে দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কতগুলো প্রশ্ন এসে দাঁড়ায়। আমরা প্রায় প্রতিদিনই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পারস্পারিক বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হতে দেখি। চাঁদাবাজি, চোরাচালান ও মাদক পাচার কাণ্ডেও তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রতিনিয়ত খুন-খারাবি চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা দেশীয় বা হাতে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। এখন এ সকল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে যদি বিজিপি ও মিয়ানমার আর্মির ব্যবহার করা স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র, মর্টার বা ‌ রকেট লঞ্চারের মত অস্ত্র চলে যায় এবং সেই সমস্ত অস্ত্র কোন না কোনভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে আসে এবং ব্যবহৃত হয়, তাহলে কী ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে ভাবতেও গা শিউরে ওঠে। এছাড়াও আরাকান আর্মির অভিযোগ যদি সত্যি হয়, কিংবা এ সমস্ত রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলো যদি তাদের দখল করা অস্ত্র বাংলাদেশী সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠনগুলোর কাছে বিক্রি করে দেয় তাহলে দেশের মধ্যে এর পরিণতি কী হতে পারে গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখা দরকার।

আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক না বললেই নয়। স্থানীয় বাঙালিদের দাবী, আরাকান আর্মিতে বান্দরবানের অনেক উপজাতি জনগোষ্ঠীর সদস্য যোগদান করে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধ করছে। তাদের মাধ্যমেও এই সকল অস্ত্র যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের হাতে পড়ে, তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিরও চরম অবনতি হতে পারে। আশা করি, সংশ্লিষ্টরা বিষয়গুলো ভেবে দেখবেন। প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর যুবকদের বিপুল পরিমাণ বেতন দিয়ে আরাকান আর্মিতে ভেড়ানো হয়েছে। তারা সব ধরনের যুদ্ধাস্ত্র পরিচালনার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এছাড়াও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ যুদ্ধের বাস্তব অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে। অনেক আরাকান আর্মির সদস্য পরিচয় গোপন করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বিভিন্ন উপজাতীয় পরিবারে বিয়ে-শাদী করেছে বলে জানা যায়। দুর্বল সীমান্ত ব্যবস্থা ও দুর্গমতার কারণে খুব সহজেই পালিয়ে তারা দুই সীমান্তের এপার-ওপার যাতায়াত করতে সক্ষম। আরাকান আর্মি যখন সীমান্ত দখলে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও মিয়ানমার আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তাদের তখনকার ভূমিকা এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর তাদের ভূমিকা একই থাকবে এরকম নিশ্চয়তা দেয়া কঠিন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, বাংলাদেশ যখন মিয়ানমার সীমান্তে পরিত্যক্ত মর্টার সেল নিষ্ক্রিয় করার জন্য বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল, তখন ওপার থেকে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের দিকে গুলি ছুঁড়েছিল। এ অবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী উপজাতীয় সংগঠনগুলো আরাকান আর্মিতে থাকা তাদের স্বগোত্রীয় যোদ্ধাদের মাধ্যমে যদি অস্ত্র সংগ্রহের উদ্যোগ নেয় সেটা খুব বেশি কঠিন হবে না। এটা স্বীকৃত যে, এ ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর আর্থিক সংস্থানের অন্যতম উপায় মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা। কিংবা সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের পর আরাকান আর্মি যদি তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে ফেলে এবং তাদের বাহিনীতে থাকা যোদ্ধাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেয় কিংবা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দেয় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তার জন্য তা ভয়াবহ হুমকির সৃষ্টি করবে। এসব বিষয়গুলোর গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে।

এদিকে সীমান্তে অস্থিরতা সৃষ্টির পর বাংলাদেশ মিয়ানমার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ বেশ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য মিয়ানমার থেকে আমদানি করে। মিয়ানমারে বাংলাদেশ রফতানি করে কম। আমদানী করে বেশি। চাল, পিঁয়াজ, মশলা প্রভৃতি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে অনেক সময় মিয়ানমার থেকে জরুরী ভিত্তিতে পণ্য এনে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়। এখন বাংলাদেশ- মিয়ানমার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের আমদানি- রপ্তানি বন্দর পুরোপুরি আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে থাকায় এই বাণিজ্য কীভাবে পরিচালিত হবে তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইতিমধ্যেই সীমান্তের বাণিজ্য কেন্দ্রে থাকা অনেক কাস্টমস অফিসার যুদ্ধের কারণে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সাথে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সামনে রমজান ও কুরবানির ঈদ। এই অবস্থায় বাংলাদেশ মিয়ানমারের সাথে কীভাবে পুনরায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য শুরু করবে সেটা বের করা খুব কঠিন। এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না যে, কয়েকদিন বা দুয়েক মাসের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। আরাকান আর্মি হয়তো কয়েক মাসের মধ্যে উত্তর রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হলেও পশ্চিম রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নেয়া তাদের জন্য খুবই কঠিন ও দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ হতে পারে।

এই বাণিজ্য পরিচালনা করতে গেলে এলাকার আর্মির সাথে ফর্মাল আলোচনা করতে হবে। কিন্তু এ ধরনের আলোচনা মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাছাড়া একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সাথে একটি রাষ্ট্র কীভাবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পরিচালনা করবে সেটাও বাংলাদেশের জন্য এবং বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা। এদিকে সীমান্ত এলাকায় অবস্থানের কারণে এবং মিয়ানমার আর্মির প্রতিরোধের কারণে বার্মার অন্যান্য অঞ্চল থেকে খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা পাওয়া বা আমদানি করা তাদের পক্ষে খুবই কঠিন। সেই তুলনায় বাংলাদেশ তাদের কাছে গ্রামের হাটের মত নিকটবর্তী। কাজেই আরাকান আর্মিও তাদের খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তার জন্য বাংলাদেশের মুখাপেক্ষী হতে বাধ্য হবে। তাদের সংগঠন পরিচালনা ব্যয় নির্বাহের জন্য বাংলাদেশের সাথে প্রচলিত ও অপ্রচলিত ব্যবসা করতে উদগ্রীব থাকবে- এটা খুবই স্বাভাবিক। ফর্মাল চ্যানেলে সেটা করতে গেলে তাদেরকেও বাংলাদেশের সাথে আলোচনা করতে হবে। আর সেটা করতে না পারলে তারা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশে পাচার করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। এসব চ্যালেঞ্জগুলো বাংলাদেশ কীভাবে মোকাবেলা করবে তা এখন থেকেই গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখা জরুরি।

একই ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জন্য। অভিন্ন সীমান্ত হওয়ায় মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তে নানা ঘটনা ও দুর্ঘটনা ঘটে, উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এতে বিজিবি ও বিজিপি দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, চিঠি চালাচালি, পতাকা বৈঠক প্রভৃতির মাধ্যমে সমস্যা নিরসন করে থাকে। এখন বাংলাদেশ- মায়ানমার সীমান্তে যদি আরাকান আর্মির অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে একই ধরনের ঘটনা-দুর্ঘটনা বা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর করণীয় কী হবে? বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর পক্ষে আরাকান আর্মির সাথে অফিশিয়াল আলোচনা পত্রালাপ বা ফর্মাল বৈঠক কতটা সম্ভব এই মুহূর্তে? সব সংকট কী ইনফর্মাল আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হবে? তাছাড়া এ ধরনের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সাথে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ফর্মাল আলোচনার অভিজ্ঞতাও বিজিবি বা বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য সম্পূর্ণ নতুন। কেননা এ ধরনের বাহিনীগুলো সেভাবে কাঠামোবদ্ধ সিস্টেমে পরিচালিত হয় না, যেভাবে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। এছাড়া বিজিবি কীভাবে বসবে, কোথায় বসবে, কার সাথে বসবে এবং এ ধরনের ঘটনা ঘটলে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিক্রিয়া কী হবে- এ ধরনের অনেক অমীমাংসিত বিষয় এখানে রয়েছে। সেগুলো নিয়ে বাংলাদেশকে এখনই ওয়ার্কআউট শুরু করে দিতে হবে।

এছাড়া মিয়ানমারের জান্তা সরকার কখনোই একটি আন্তর্জাতিক সীমান্ত সে দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রাখবে না। তারা চেষ্টা করবে যে কোন মূল্যে এই সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ পুণরুদ্ধার করতে। এটা সহজেই অনুমেয় যে, স্বল্প সময়ে বা কিছুটা দেরিতে হলেও মিয়ানমারের মূল সেনাবাহিনী এই সীমান্ত থেকে আরাকান আর্মিদেরকে উৎখাত করতে সর্বশক্তি নিয়ে এগিয়ে আসবে। স্বাভাবিকভাবেই সে সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বন্দুকের নল থাকবে বাংলাদেশের দিকে। ফলে তাদের ছোঁড়া ভারী আর্টিলারি সেল, হেলিকপ্টার ও বিমানের গোলা ব্যাপকভাবে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করার ঝুঁকি রয়েছে। এটা অবশ্যম্ভাবী ধরে নিয়েই তা অবস্থা মোকাবেলায় এখন থেকেই বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা যেমন কোনোভাবেই চাই না মিয়ানমার থেকে কোন গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে প্রবেশ করুক। ঠিক তেমনি ঐরকম অবস্থায় আরাকান আর্মি যদি কোণঠাসা হয়ে পড়ে তারাও যেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারেও এখন থেকে যা যা করণীয় তা করা অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা একটি উত্তম বিকল্প হতে পারে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের তথা রাখাইনের অনেক বিষয় নিয়েই বাংলাদেশের কূটনীতিকরা মিয়ানমারের কূটনৈতিকদের সাথে কথা বলে থাকেন। এখন রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর বাংলাদেশের কূটনীতিকরা মিয়ানমারের কূটনীতিকদের সাথে আলোচনা করে রাখাইন ইস্যুতে উদ্ভূত সমস্যার কতটা সমাধান করতে পারবে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। রাখাইন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে থাকলে তাদের সম্মতি ছাড়া সেখানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কাজেই আরাকান আর্মির সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত- এ ব্যাপারে এখন থেকেই সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। আরাকান আর্মির সাথে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্কের কথা শুরু থেকেই আলোচিত। অন্যদিকে ভারতের কালাদান প্রজেক্ট ব্যর্থ করে দিতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সাথে গভীর সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও চায়না আলাদাভাবে আরাকান আর্মির সাথে সম্পর্ক মেইনটেইন করে চলেছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাখাইনে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির পর থেকে ভারতও আরাকান আর্মির সাথে গোপনে সম্পর্ক তৈরি করেছে এবং এই সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। শুধু কালাদান মাল্টি মোডাল প্রজেক্ট নয়, রাখাইনে বিপুল বিনিয়োগ এবং রাখাইনের উপকূলবর্তী এলাকায় খনিজ সম্পদ আর আহরণে ভারতের বিপুল স্বার্থ রয়েছে। কাজেই এই স্বার্থ রক্ষায় আরাকান আর্মির সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ভিন্ন ভারতের গত্যন্তর নেই। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সম্পূর্ণ হাত গুটিয়ে বসে থাকা কতটুকু জাতীয় স্বার্থের অনুকূল সেটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনার দাবি রাখে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন তথা আরাকানের নাগরিক। তাদের ঘরবাড়ি, জমিজমা, সবকিছুই আরাকানে। কাজেই তাদের প্রত্যাবাসন করতে গেলে আরাকানেই করতে হবে, মিয়ানমারের অন্যত্র নয়। কিন্তু বিদ্যমান অবস্থায় আরাকান আর্মির কাছে রাখাইনের অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর মিয়ানমার সরকারের পক্ষে রাখাইনে বা আরাকানে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করা বা প্রত্যাবাসনের আলোচনা চালানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে আরাকান আর্মির মনোভাব এখনো ইতিবাচক নয়। যদিও কয়েক বছর আগে আরাকান আর্মির দিক থেকে বাংলাদেশ সরকারের নিকট প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, বাংলাদেশ সরকার যদি আরাকান আর্মিকে স্বীকৃতি দেয় বা সহায়তা করে তাহলে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, বুদ্ধিস্ট অধ্যুষিত আরাকান আর্মির পক্ষে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নেয়া খুব সহজ নয়। স্থানীয় বুদ্ধিস্ট জনগণ রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে রাজি নয়। তাছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা ঘরবাড়ি, জমিজমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থানীয় বুদ্ধিষ্ট জনগণ দখল করে নিয়েছে। এ কারণেও তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে।

এ সকল কারণে এই জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে আরাকান আর্মি যদি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে চায়, তাহলে তারা স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়তা হারাবে। এই ঝুঁকি আরাকান আর্মি সহজে নিতে চাইবে না। ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল- এ সন্দেহ অমূলক নয়। এ অবস্থায় বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে। এ সকল ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টরগুলো কী ভাবছে সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হলেও সাম্প্রতিক সময়ে তার পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে অতিমাত্রায় বৈদেশিক নির্ভরতা ও পরামর্শ গ্রহণ প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যু মোকাবিলায় বাংলাদেশ শুরু থেকেই চায়না, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্বের পছন্দ-অপছন্দ, চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনা মোকাবিলায়ও বাংলাদেশ চায়নার সহায়তা প্রত্যাশা করেছে, দিল্লীতে আলোচনা করেছে। সে কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্পর্কে সৃষ্ট নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উক্ত বৈদেশিক ফ্যাক্টরগুলোর চাওয়া-পাওয়া, ইচ্ছা-অনিচ্ছাও বাংলাদেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এ সকল চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্য এবং বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুতি, দক্ষতা ও দেশপ্রেমে উত্তীর্ণ হতে পারবে তা একমাত্র সময়ই বলে দিতে পারে।

♦ লেখক: চেয়ারম্যান, সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও সম্পাদক, পার্বত্যনিউজ

 

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আরাকান আর্মি, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্পর্ক, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন