আবারো উত্তপ্ত বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত: গুলিবিদ্ধ ইউপি সদস্য

fec-image

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে বান্দবানে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ছাবের আহমদ নামে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) একজন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

সোমবার (১১ মার্চ) বিকেল পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

মিয়ানমারের ওপার থেকে আসা গুলিতে আহত হওয়ার বিষয়টি পার্বত্যনিউজকে নিজেই নিশ্চিত করেন আহত ইউপি সদস্য ছাবের আহমদ।

তিনি জানান, মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য জামছড়ি এলাকার সীমান্তে যান তিনি। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ফোন করার সময় হঠাৎ একটি গুলি এসে তার বাঁ পায়ের হাঁটুতে লাগে। এতে তিনি আহত হন।

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার জামছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলছে ব্যাপক গোলাগুলি। সোমবার (১১ মার্চ) বিকেল ৪টা থেকে গোলাগুলির শব্দ সীমান্তের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বিকেলে ইউপি সদস্য সাবের হোসেন বিজিবির জামছড়ি সীমান্তচৌকি এলাকায় গিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যদের খোঁজখবর নেন। এসময় স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকও তার সঙ্গে ছিলেন। এসময় হঠাৎ একটি গুলি এসে ছাবের আহমদ’র বাঁ পায়ের হাঁটুতে লাগে। পরে স্থানীয় সাংবাদিকেরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) আবু জাফর মোহাম্মদ ছলিম জানান, সীমান্তে গুলিবিদ্ধ ইউপি সদস্য ছাবের আহমদকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে সোমবার (১১ মার্চ) সকালে মিয়ানমারের রাখাইনে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘাতের জেরে জীবন বাঁচাতে আবারো বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা। বিজিপির মোট ২৯ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা যায়।

বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।

এ বিষয়ে তিনি জানান, বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন (১১ বিজিবি) এর অধীনস্থ জামছড়ি বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকা দিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অংথাপায়া ক্যাম্প থেকে ২৯ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এসময় সীমান্তে পরিদর্শনে আসেন বিজিব’র রামু সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মেহেদী হাসান ও নাইক্ষ্যংছড়ি ১১-বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ নোবেলসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। তবে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবর পক্ষ থেকে কোন ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে আরাকান আর্মির আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ (বিজিপি) ৩৩০ জন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়া ইনানী নৌ-বাহিনীর জেটিঘাট থেকে জাহাজে করে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আরাকান আর্মি, মিয়ানমার, সীমান্ত উত্তেজনা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন