বান্দরবানে ৩.৬ কেজি আফিমসহ মাদককারবারি গ্রেফতার

fec-image

বান্দরবানে তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা মূল্যমানের ৩.৬ কেজি আফিম উদ্ধারসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে লামা থানাধীন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা ছোটপাড়া এলাকা থেকে মাদকসহ তাকে আটক করা হয়।

আটক হ্লামং মারমা লামা থানার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইয়াংছা ছোটপাড়ার বাসিন্দা মংচাই মারমার ছেলে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব-১৫ জানায়, গোপন সূত্রে র‌্যাব-১৫ জানতে পারে যে, বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা থানাধীন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডস্থ ইয়াংছা ছোটপাড়া এলাকার জনৈক এক মাদক কারবারীর বসতঘরে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য তথা আফিম বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ রয়েছে। পরে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার এর সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকার জনৈক হ্লামং মারমার বসত ঘরের সামনে উপস্থিত হলে র‌্যাবের আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালায়নের চেষ্টাকালে কুখ্যাত মাদক কারবারী হ্লামং মারমাকে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে এবং তার বসত ঘরের শয়ন কক্ষের খাটের নিচে বিশেষ কায়দায় বাজারের ব্যাগের ভিতর বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মাদকদ্রব্য আফিম মজুদ রয়েছে বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে বিধি মোতাবেক গ্রেফতারকৃত হ্লামং মারমার বসত ঘর তল্লাশী করে সর্বমোট ০৩ কেজি ৬০০ গ্রাম আফিম উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অবৈধ আফিম এর আনুমানিক মূল্য প্রায় তিন কোটি ষাট লক্ষ টাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান যে, বান্দরবানের গহীন পাহাড় বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় একটি সিন্ডিকেট রয়েছে, যারা এই আফিম চাষ করাসহ প্রক্রিয়াজাত করে থাকে। এরপর তারা সেগুলো শহরে নিয়ে আসে; পরে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন যাত্রীবাহী পরিবহনে যাত্রী সেজে, অভিনব কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে এবং কখনো কখনো আফিম চালানের ক্যারিয়ারদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই আফিম ছড়িয়ে দেয়া হয় বলে জানায়।

গ্রেফতারকৃত হ্লামং মারমা একজন চিহ্নিত মাদক কারবারী। সে পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও কক্সবাজার কেন্দ্রিক আফিম ক্রয়-বিক্রয় এবং দীর্ঘ দিন যাবৎ মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িত। সে বান্দরবানের পাহাড়ী মাদক সিন্ডিকেটের সাথে সার্বিক সমন্বয় করে দূর্গম পাহাড়ী অঞ্চল এবং ক্ষেত্র বিশেষ পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আফিম নিয়ে আসতো। অতঃপর অবৈধ পথে পাচারকৃত মাদক নিজের হেফাজতে বসতঘরে মজুদসহ বিভিন্ন স্থানে অভিনব কৌশলে লুকিয়ে রাখতো। পরবর্তীতে আফিমসহ অন্যান্য মাদকের চালান ভাগ ভাগ করে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে পর্যায়ক্রমে বান্দরবানসহ পাশ্ববর্তী জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে এবং চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নির্ধারিত মাদক কারবারী এজেন্টদের নিকট পাচার করে থাকে। এক্ষেত্রে গ্রেফতারকৃত মাদক চোরাকারবারী প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে বিভিন্ন কৌশলী পন্থায় ব্যাগের ভিতরে সু-কৌশলে লুকিয়ে মাদকের এজেন্টদের গন্তব্যের পৌঁছে দিতে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় র‌্যাব।

এর আগে ২০২৩ সালে র‌্যাব-১৫ কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত অভিযানের মাধ্যমে অন্যান্য মাদকের পাশাপাশি সর্বমোট ১৪.৮৪৫ কেজি আফিম উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আফিম দুর্লভ ও দামী মাদক, যা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল ও উচ্চ বিলাসী মাদক সেবীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। দেশের যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত রাখতে র‌্যাব-১৫ সর্বদা বদ্ধ পরিকর।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন