বিলাইছড়ি ‘ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র’ পুনর্নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি

fec-image

জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ধুপশীলস্থ ‘ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র’ পূনর্নির্মানে প্রধানমন্ত্র্রীর নিকট স্মারকলিপি দিয়েছে বিহার পরিচালনা কমিটি ও দায়ক এবং দেব মানব পুজ্য অরণ্য বিহারী, শ্মশানচারী, ত্রি-চীবরধারী পাংশুকুলিক ধূতাঙ্গ সাধক ড. এফ দীপংকর মাহাথের এর সেবকবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১২টায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতি বলা হয়, পূজনীয় আর্য্য শ্রাবক সাধনানন্দ মহাস্থবীর বনভান্তের অন্যতম অনুসারী দেব মানব পুজ্য অরণ্য বিহারী, শ্মশানচারী, ত্রি-চীবরধারী পাংশুকুলিক ধূতাঙ্গ সাধক ড. এফ দীপংকর মাহাথের প্রবজ্যা গ্রহণের পর ভারতে ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালে উচ্চ শিক্ষাসহ পিএইচডি গ্রহণ শেষে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন।

তিনি লক্ষ্য করেন সব স্থানেই ছল-কপট, প্রতারণা, প্রবঞ্চনা, স্বার্থপরতা ও মিথ্যাচার তাই তিনি সব কিছুকে তুচ্ছ করে ২০১২ সালের শেষের দিকে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদ পাড়ি দিয়ে দূর্গম বিলাইছড়ি উপজেলার ধুপপানিছড়া এলাকার গভীর জঙ্গলে ধ্যানে মগ্ন হন এবং শুধুমাত্র তিন খানা হালকা বস্ত্রে গভীর জঙ্গলে, উন্মুক্ত মহা শ্মশানে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টানা ৭ বছর কখনো ৭,১৫,৩০দিন আবার কখনো ৩ মাস ১বার ভোজন করেছেন, ৭ দিনে একবার জনসাধারনের সাথে দেখা করেছেন। শ্মশানে মরদেহ’র গায়ের ফেলে দেয়া ছেড়া ফাঁটা কাপড় সেলাই ও রং করে পরিধান করতেন। এভাবেই দেব মানব পুজ্য অরণ্য বিহারী, শ্মশানচারী, ত্রি-চীবরধারী পাংশুকুলিক ধূতাঙ্গ সাধক ড. এফ দীপংকর মাহাথের ধ্যান সাধন জীবন পার করেছেন।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, রাঙ্গামটি জেলার বিলাইছড়িতে এ ধূতাঙ্গ ভিক্ষু দ্বারা বৌদ্ধ সমাজের দায়ক, পূর্ণাথীরা সেখানে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সীমা বিহার, ভাবনা কেন্দ্রসহ ভিক্ষু শ্রামণের অধিবাসস্থল প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু স্ব-ধর্মের অ-ধার্মিক শান্তি বিনষ্টকারী প্রতিহিংসাপরায়ণ কিছু ব্যক্তি ধর্ম প্রচারে বৌদ্ধ ভিক্ষু, শ্রামণদের অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন করছে। ঐ সব ব্যক্তিরা ধ্যান সাধনায়রত ভিক্ষুদের ও বিহারের সেবক-সেবিকাগণকে নির্যাতন চালিয়ে আসছে।

গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারের লকউডাউন ঘোষণায় মানুষ যখন করোনা-১৯’র বিরুদ্ধে সোচ্চার ঠিক তখনই গরিব দুঃখী ও দেশ বিদেশসহ তিন পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ সমাজের অর্থে গড়া প্রত্যন্ত বিলাইছড়ি’র ধূপশীলস্থ ‘ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র’টি প্রতিহিংসাপরায়ণ কিছু ব্যক্তি অন্যের দ্ধারা প্রভাবিত-প্ররোচিত হয়ে গত ১৫ মে শুক্রবার রাত ৯ঘটিকায় আগুন দিয়ে ভষ্মিভুত করে দেয়। সেখানে থাইল্যান্ড কর্তৃক প্রদত্ত অষ্টধাতুর বৃহৎ বুদ্ধমূর্তি, বুদ্ধবাণী পবিত্র ত্রিপিটিক, ভিক্ষুসহ, গৃহী সংঘের, ভাবনাকারীদের ব্যবহার্য্য জিনিষপত্রসহ আনুমানিক ২(দুই) কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করে।

প্রধানমন্ত্রী আপনি মানুষের কল্যাণে, পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছেন। একটি কুঁড়ে ঘরকেও অন্ধকারে রাখছেন না। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে বৌদ্ধ সমাজের সেবক-সেবিকা, পূর্ণাথীদের দানের টাকায় নির্মিত প্রতিষ্ঠান কিছু অধার্মিক, অসামাজিক, দুষ্কৃতকারী মানুষ দ্ধারা ক্ষতির সম্মুক্ষিণসহ অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছি। এক আহারী ধূতাঙ্গ সাধক ড.এফ দীপংকর মহাথের এর ধর্মপ্রচারে কেন এত অত্যাচার তা আমাদেরও বোধগম্য নয়। আপনি রাষ্ট্র ও জাতির বিজ্ঞ-বিচক্ষণ অভিভাবক, দেশের চলমান মাহাক্রান্তিকালে আপনিই জাতির পাশে দাঁড়িয়েছেন, জীবন জিবীকা রক্ষা করেছেন। ঘরবন্ধী মানুষের ঘরে ঘরে ভাতের জোগান দিয়েছেন। আপনার নিকট তেমন কিছু চাওয়ার নেই। আমরা এটাই চাই যে, ধূতাঙ্গ সাধক ড. এফ দীপংকর মাহাথের ও তাঁহার ভিক্ষু সংঘ সহ বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার ও লালন পালনে ‘ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র’টি পূঃননির্মাণ। সেই সাথে ধর্ম লালন পালনে ধূতাঙ্গ সাধক ড.এফ দীপংকর মাহাথের তাঁর ভিক্ষু সংঘসহ বৌদ্ধ সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আকুল প্রার্থনা করছি।

এসময় জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেছেন, বিহারের উন্নয়নে তিনি আর্থিক সহায়তা প্রদান করবেন। তিনি বলেন, মানুষের কল্যাণে জেলা প্রশাসন এর সুনজর রয়েছে। বিহারটি নির্মাণে তাঁর সার্বিক সহযোগীতা থাকবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র এর প্রধান সেবক, শুক্রসেন তঞ্চঙ্গ্যা, স্বধর্ম সুরক্ষা সেবক পরিষদ, চট্টগ্রাম অঞ্চল এর অনক বড়ুয়া এবং ধুতাঙ্গ সাধক ড.এফ দীপংকর মহাথের এর একনিষ্ট সেবক ও সাপ্তাহিক পাহাড়ের সময় সম্পাদক ও প্রকাশক মিলটন বড়ুয়া, এছাড়াও দায়ক কাঞ্চন বড়ুয়া, মিন্টু বড়ুয়া।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র, প্রধানমন্ত্রী, রাঙামাটি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন