ভারতের ১০ রাজ্যে প্রবল বৃষ্টি-বন্যা-ভূমি ধসে নিহত ১৭৮

fec-image

বর্ষার এই মাঝামাঝি সময়ে প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধ্বস শুরু হয়েছে ভারতের ১০টি রাজ্যে। জার্মানিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডিডব্লিউ জানিয়েছে, তুমুল বর্ষণ-বন্যা ও ভূমিধ্বসে ইতোমধ্যে দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৭৪ জনের। ডিডব্লিউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক সপ্তাহের বর্ষণে ভারতের মহারাষ্ট্র, গুজরাট, জম্মু ও কাশ্মির উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, তেলেঙ্গানা ও আসামে বন্যা ও ভূমিধ্বস শুরু হয়েছে। নিহত ১৭৪ জনের মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গেছেন ৮৯ জন। এছাড়া গুজরাটে ৬৯ জন, কাশ্মিরে ১৬ জন এবং ঝাড়খণ্ডে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বন্যা ও ভূমিধ্বসে।

মহারাষ্ট্রে সর্বত্র বৃষ্টি:
মহারাষ্ট্রের সর্বত্র তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে। ইতোমধ্যে রাজধানী মুম্বাইয়ের অনেক এলাকা ডুবে গেছে। মুম্বাইয়ের নিকটবর্তী জেলা পুনেতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। পালঘর ও থানে জেলায় বন্যা ও ভূমি ধস শুরু হয়েছে। তাতে মৃত্যুও হয়েছে কয়েকজনের। মহারাষ্ট্রের নাগপুর জেলায় তিনজনকে নিয়ে একটি গাড়ি বন্যার জলে ভেসে গেছে বলে জানা গেছে। তিনজনই মারা গেছেন। তারা মধ্যপ্রদেশ থেকে নাগপুর এসেছিলেন। গাড়িটি একটি ব্রিজের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় পানির তোড়ে ভেসে যায়। গত এক সপ্তাহের বন্যায় নিহতের হিসেবেও সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ভারতের এই পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটিতে। এ পর্যন্ত সেখানে ৮৯ জন মারা গেছে বলে উল্লেখ করেছে ডিডব্লিউ।

সংকটে গুজরাট:
প্রবল বৃষ্টি ও বন্যায় গুজরাটের অবস্থাও সঙ্কটজনক। সোমবার ২৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিতে ডুবে যায় রাজধানী আমেদাবাদের প্রায় সব এলাকা। রাজধানীর বাইরে ডাং, ডাঙ, নবসারি, তাপি, ভালসাদ, পাঁচমহল, ছোট উদয়পুর, খেড়া জেলাতেও বন্যা দেখা দিয়েছে। বহু নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩৩টি বড় দল বিভিন্ন প্রান্তে উদ্ধারকাজে ব্যস্ত। এ পর্যন্ত গুজরাটে বন্যাজনিত দুর্যোগে নিহত হয়েছেন ৬৯ জন।

পাহাড়ে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও চকিত বন্যা:
কয়েক দিন আগে জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যে অমরনাথ যাত্রার সময় মেঘভাঙা বৃষ্টি (ক্লাউড বার্স্ট) শুরু হয়। প্রবল বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় এবং ১৬ জন তীর্থযাত্রী মারা যান। এই পরিস্থিতিতে স্থগিত করা হয় অমরনাথ যাত্রা। তারপর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রাস্তা ঠিক করে দেওয়ার পর যাত্রা আবার শুরু হয়। কিন্তু ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় পুনরায় তা স্থগিত করা হয়েছে।

হিমাচল রাজ্যের মানালিতে প্রবল বৃষ্টির ফলে আকস্মিক বন্যা (ফ্ল্যাশ ফ্লাড) হয়েছে। রাজ্যের মানালির বাসস্ট্যান্ড ভেসে গেছে। বেশ কয়েকটি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথের রাস্তা বৃষ্টির জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কারণ, চামোলি্তে বেশ কয়েক জায়গায় ধস নেমেছে। পাশপাশি কেদারনাথের আবহাওয়ার দিকে দিনরাত নজর রাখা হচ্ছে।

অন্যান্য রাজ্য:
মধ্যপ্রদেশে বন্যার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে সেখানে বৃষ্টি হচ্ছে। হারদা, বেতুল সহ বেশ কয়েকটি জেলার অধিকাংশ এলাকা জলের তলায় চলে গেছে। রাজধানী ভোপাল-বেতুল সড়ক বন্ধ করে দিতে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় জানিয়েছে, বহু মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ওড়িশায় মঙ্গলবার থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে রাজ্যের বহু এলাকায় ধস নেছে, অনেক গ্রাম তলিয়ে গেছে পানিতে

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নিহত, বৃষ্টি-বন্যা-ভূমি ধস, ভারত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন