মহালছড়িতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই ভরসা ৫ গ্রামের মানুষের

fec-image

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও ক্যায়াংঘাট ইউনিয়নের ৫ গ্রামবাসীর পারাপারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। এলাকাবাসীর উদ্যোগে চেঙ্গী নদীর উপর দিয়ে নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি এখন ক্যায়াংঘাট ইউনিয়নের দাবা ফাদা পাড়া, ধনপাতা পাড়া, রাঙ্গাপানি ছড়া, ক্যায়াংঘাট গুচ্ছগ্রাম ও মহাজন পাড়া গ্রামের জনসাধারণের পারাপারের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে স্থানীয় ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহালছড়ি সদর ও জেলা সদরে যেতে হলে এ ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোটি উপর দিয়েই যেতে হয়। এ ছাড়া স্কুল-কলেজে পড়ূয়া শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত তরিতরকারি নিয়ে হাট-বাজারে যেতে হলে এ ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোটি ছাড়া পারাপারের বিকল্প কোন রাস্তা নেই এই ৫ গ্রামবাসীর। বিশেষ করে জরুরি অবস্থায় কোন রোগী হাসপাতালে নিতে হলে মহা বিপদের সম্মুখীন হতে হয়।

দাবা ফাদা পাড়া গ্রামের এক সরকারি চাকুরিজীবী নিক্কন খীসা সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, এই এলাকার জনসাধারণে জন্য এটি দীর্ঘ দিনের সমস্যা। এলাকার এ সমস্যাটি নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ গ্রহণের কোন লক্ষণ নেই। অথচ বর্তমান সরকার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় পাড়া কার্বারি শিশির বিন্দু চাকমা বলেন, এ এলাকায় বর্ষা মৌসুমে চেঙ্গী নদীর উপরে পারাপারের জন্য কোন সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন যাবত এলাকাবাসী চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়া উৎপাদিত ফসলাদি সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে পারছেন না কৃষকেরা। এলাকার যেকোন রোগী জরুরি ভিত্তিতে উপজেলা সদর হাসপাতাল কিংবা জেলা সদর হাসপাতালে নিতে হলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। কোনমতে চলাচলের জন্য একটি ফুটব্রিজ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি করেছেন তিনি।

দাবা ফাদা গ্রামের বাসিন্দা গরুর দুগ্ধ খামারের মালিক ত্রিশঙ্কু খীসা বলেন, চেঙ্গী নদীর উপর সেতু না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো পার হতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে অনেকবার সংগ্রহ করা গাভির দুধ নষ্ট হয়েছে। এরকম অনেক কৃষকের উৎপাদিত তরিতরকারি কাঁধে বহন করে বাজারে নিতে গিয়ে বাঁশের সাঁকো থেকে পিছলে পড়ে যাওয়ার কথা সবার জানা আছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে মহালছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান রতন কুমার শীল ও ক্যায়াংঘাট ইউপি চেয়ারম্যান রুপেন্দু দেওয়ান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে, ওই এলাকায় অন্তত একটি ফুট ব্রিজের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, চেঙ্গী নদীর উপর দিয়ে ফুট ব্রিজ নির্মাণ করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এত টাকা বরাদ্দ দেয়া সম্ভব নয়। এখানে একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য জেলা পরিষদ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ফুট ব্রিজ নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ দিতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তারা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন