শত বছর পরে দুই গ্রামের মিলবন্ধন

কুতুবদিয়ায় গ্রামবাসীর চলাচলে সাঁকোর স্থলে পেল দৃষ্টিনন্দন ব্রীজ

fec-image

এটা কোন মহাসড়কের ব্রিজ নয়, দুই গ্রামের সংযোগ ব্রিজ। দুই শতাব্দী ধরে এ দুই ইউনিয়নের দু’টি গ্রামের মানুষ যুগের পর যুগ ধরে পিলটকাটা খালে নৌকা দিয়ে যোগাযোগ মাধ্যম ছিল। ছিল না চলাচলের রাস্তা। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর এ খালের উপর এলাকার লোকজন নিজের উদ্যাগে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে চলাচল উপযোগী করে। এ দ্বীপে বৃটিশ শাসন আমল থেকে অনেক স্থাপনা নির্মাণ করলেও এ সাঁকোর উপর ব্রিজ নির্মাণের কোন পরিকল্পনা হাতে নেয়নি কোন সরকার।

যুগের পর যুগ অতিক্রম হলেও দুই গ্রামের মানুষের দুঃখ শেষ হয়নি। শুধু শুনে আসতো সাঁকোর স্থলে ব্রিজ হবে। এ সাঁকোটি কোথাও নয় এটি কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশীখালী ইউনিয়নের ঠান্ডা চৌকিদার পাড়া হতে কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ডিংগাভাংগা এলাকায় পিলট কাটা খালের উপর।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুতুবদিয়া মহেশখালী আসনের সাংসদ আলহাজ আশেক উল্লাহ রফিক এমপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সাঁকোর স্থলে ব্রিজ নির্মাণ করবে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের প্রচেষ্ঠায় সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসেবে লেমশীখালী ইউনিয়ন ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের সংযোগ ঠান্ডা চৌকিদার সড়কটির পিলট কাটা খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।

মতির বাপের পাড়ার বাসিন্দা স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াছমিন নতুন ব্রিজ দিয়ে হাটতে পেরে খুশিতে কান্নায় ভেঙে পড়ে। যুগ যুগ ধরে তাদের পরিবারবর্গের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। একটু বৃষ্টি হলে সাঁকোটি ডুবে যেত। বাড়ি থেকে নৌকায় চড়ে স্কুলে যাওয়া আসা করা লাগতো। কত বই পানিতে পড়ে গেছে। ধন্যবাদ জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে।

কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কৈয়ারবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আজমগীর মাতবর বলেন, লেমশীখালী ইউনিয়নের ঠান্ডা চৌকিদার পাড়া, মতির বাপের পাড়াসহ পাঁচ গ্রামের মানুষ ঠান্ডা চৌকিদার সড়কের সাঁকোর উপর দিয়ে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কাজে এবং হাট বাজারে যাতাযাত করতো। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে এ সড়কের উপর উন্নয়নের ছোঁয়া লেগে সাঁকোর স্থলে দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ হয়েছে। সড়ক সংস্কার ও ব্রিজ নির্মাণ হওয়ায় দুই গ্রামবাসী মহা খুশি। এমনকি বিকাল হলে লোকজন মুক্ত বাতাস উপভোগ করতে এ ব্রিজের উপর ভীড় জমায়।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এক সময় দুই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। একটু বৃষ্টি হলেই সাঁকোটি ডুবে যেত। নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হতো এলাকাবাসীর। দুই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ চোখের সামনে পরির্তন।

এ বিষয়ে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন কবির জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের (এলজিইডি) অধীনে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০মিটার আরসিসি গাডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কুতুবদিয়া, গ্রামবাসী, দৃষ্টিনন্দন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন