মহেশখালীতে নৌকার টানাপোড়নে বিদ্রোহের ছড়াছড়ি
প্রথম ধাপের আগামী ১১ এপ্রিল ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আ.লীগের কেন্দ্রের উল্টো স্রোতে হাটছে মহেশখালীর তৃণমূলের নেতারা। মহেশখালী ৩ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভায় অনুষ্ঠিত হবে ১১ এপ্রিল এ নির্বাচন। কিন্তু নৌকার টানাপোড়েনে অসন্তুষ্ট অনেক নেতাকর্মী। এজন্য কেন্দ্রের নির্দেশনাকে অমান্য করে ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে নৌকা ডোবাতে এ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে দাঁড়িয়ে পড়েছে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের অনেক আ.লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
এদিকে বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় স্বতন্ত্রসহ বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে রাখা হয়েছে বিশাল সুযোগ। তবে এ সুযোগ আ.লীগের কোন কর্মী বা নেতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তাই নৌকা নিয়ে টানাপোড়ন হওয়ায় চলছে বিদ্রোহের ছড়াছড়ি। মাঠে ময়দানে কেউ কাউকে মানছে না।
জানা যায়, মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু হায়দারকে দেওয়া হয়েছে নৌকা প্রতীক আবার একই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক না পেয়ে উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক রুহুল, জেলা পরিষদের সদস্য মাস্টার রুহুল আমিন ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দু সত্তার করছেন নৌকার বিরোধিতা। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ। হোয়ানক ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামালকে কেন্দ্র থেকে নৌকার মাঝি করা হলেও একই ইউনিয়নে আ.লীগের সভাপতি মীর কাসেম ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ওয়াজেদ আলী মুরাদ নৌকা প্রার্থী হয়েছেন নৌকা ডুবাতে।
পাশাপাশি কুতুবজোম ইউনিয়নেও দেখা গিয়েছে একই চিত্র, ইউনিয়নটিতে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ কামালকে নৌকা দেওয়া হলেও নৌকার বিদ্রোহী হয়ে কাজ করছেন বর্তমান ইউপি সদস্য ও উপজেলা আ.লীগের সদস্য নুরুল আমিন খোকা। আবার দলের জন্য অনেকটা ত্যাগ তিতিক্ষা সয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন খোকন।
অন্যদিকে মহেশখালী পৌরসভায় বহুল আলোচিত সমালোচিত বর্তমান মেয়র আলহাজ মকছুদ মিয়াকে নৌকার মাঝি করায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি পৌরবাসীর মাঝেও ক্ষোভ দেখা গিয়েছে। তাই পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন সাবেক মেয়র সরওয়ার আজম বিএ। আবার নৌকার বিরোধী হয়ে কাজ করছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন, মহেশখালী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান ও মেয়র মকছুদ মিয়ার সহধর্মিণী সার্জিনা আক্তার।
উপজেলা পর্যায়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন দলীয় প্রতীক রাখাটা দলের জন্য ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি দলীয় প্রতীক দিয়ে দলের কিছু কিছু ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। যার কারণে খোদ দলের কর্মীরাই বিদ্রোহী হয়ে কাজ করছে নৌকা ডোবাতে।
আবার জেলা পর্যায়ে কয়েকজন আ.লীগ নেতা জানান, এখন থেকে তৃণমূলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে না আনলে চরম সংকটে পড়তে হবে আ.লীগকে।
এদিকে ২৩ মার্চ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় জানান, কক্সবাজার জেলায় যারা নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন ২৪ মার্চের মধ্য দ্রুত প্রত্যাহার করে নিবেন অন্যথায় দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবে দল।