মাটিরাঙ্গা হাসপাতালের অনিয়ম-অব্যাবস্থাপনা : তোপের মুখে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

 

মাটিরাঙ্গা সংবাদদাতা :

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা হাসপাতালের অনিয়ম অব্যাবস্থাপনাকে কেন্দ্র করে জনপ্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের তোপের মুখে পড়েছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: খাইরুল ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ঘটনাটি ঘটেছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, বৈঠকের শুরুতেই কমিটির সদস্য মাটিরাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক মো: আলাউদ্দিন লিটন মাটিরাঙ্গা হাসপাতালে ডাক্তার স্বল্পতা, রোগীদের খাদ্য সরবরাহসহ নানা অনিয়ম-অব্যাবস্থাপনাকে কেন্দ্র বক্তব্য দিলে তার বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: খাইরুল ইসলাম।

আর তখন তার আপত্তিকর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দাবী করেন বৈঠকে উপস্থিত মাটিরাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম তাজু। এর পরপরই বৈঠকে উপস্থিত বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আলী আকবর, মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা, মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সুভাষ চাকমা ও মাটিরাঙ্গা প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান ভুইয়া মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন ডাক্তারের দিনের পর দিন অনুপুস্থিতি, রোগীদের মধ্যে নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ, পরিচ্ছন্নতাসহ নানা অনিয়ম-অব্যাবস্থাপনা তুলে ধরে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা ডা: কামরুন নাহার কি করে দিনের পর দিন হাসপাতালে অনুপুস্থিত থেকে সরকারী কোষাঘার থেকে বেতন গ্রহণ করেন এবিষয়েও ব্যাখ্যা দাবী করেন।

মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দিনের পর দিন চিকিৎসা সেবা প্রার্থীদের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কখনো কোন ডাক্তারকে পাওয়া যায়না। জানতে চাইলেই, বলা হয় তারা প্রশিক্ষণে আছেন। বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আলী আকবর বলেন, মাটিরাঙ্গা হাসপাতালে টাকা দিলে এ্যাম্বুলেন্স মিলে । টাকা না দিলে গাড়ী নষ্ট বা চাকা নেই এরকম নানা অজুহাত দেখানো হয়।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চাকমা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: খাইরুল ইসলাম নিজেই হাসপাতালে অনুপুস্থিত থাকেন অভিযোগ করে বলেন, যিনি নিজে ঘুম থেকে উঠেন ১২টার পরে সেখানে অন্যরা কেন আসবেন। তিনি হাসপাতালের নানা অনিয়ম-অব্যাবস্থাপনার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে দায়ী করেন।

এসময় আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্ঠা করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: খাইরুল ইসলাম বলেন, কেউ এ্যাম্বুলেন্স চেয়ে না পেলে যথাযথ অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি হাসপাতালে পানি সরবরাহের মোটর ও জেনারেটর না থাকার কথা বলে এসব সমস্যা বৈঠকে উপস্থাপন করেন।

প্রসঙ্গত দীর্ঘদিন ধরে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার স্বল্পতা, ডা: কামরুন নাহার নামের একজন ডাক্তারের দিনের পর দিন অনুপুস্থিতি, রোগীদের মধ্যে নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ, হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাসহ নানা অনিয়ম-অব্যাবস্থাপনা চলে আসছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে লেখা-লেখি হলেও কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্টরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন