মানিকছড়ি কোরবানীর হাটে ক্রেতা খুশি, পুঁজিহীন খামারীরা!

fec-image

মানিকছড়ি কোরবানীর পশুর হাটে শেষ সময়ে এসে পশু বেচা-কেনায় ক্রেতারা স্বস্তিবোধ করলেও পুঁজি হারিয়ে অস্বস্তিবোধ করেছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারী খামারী! ফলে উপজেলার অর্ধশত খামারী ও মধ্যস্থভোগী বেপারী এ বছর গরু ব্যবসায় নাভিশ্বাস! কৃষক পরিবার পুঁজি ফিরে পেয়ে কিছুটা স্বস্তিতে।

২৫ জুলাই উপজেলার বড় বাজার মানিকছড়ি পশু হাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতার চেয়ে ৪ গুন বেশি দেশি বলদ ও ষাঁড় গরুতে বাজার সয়লাব। বড় খামারে লাইফ ওয়েট পদ্ধতিতে গরু বেচা-কেনার সুযোগ থাকায় অনলাইনে ৪০/৫০ ভাগ গরু বিক্রি হলেও ক্ষুদ্র-মাঝারী খামার এবং কৃষকের ঘরে মোটাতাজা গরু গত ৩/৪ বাজারে ক্রেতাশূণ্য থাকায় খামারীরা দুশ্চিান্তায় পড়েছিল। তবে শেষ সময়ে এসে শনিবার (২৫ জুলাই) দেড়/দুই হাজার গরু বাজারে জমায়েত হয়।

এর মধ্যে দেশি (মাঝারী) বলদ ও ষাঁড় গরুই সবচেয়ে বেশি। বেচা-কেনার ক্ষেত্রে বলদ ও ষাঁড় বিক্রি হয়েছে একটু বেশি। তবে বাজারে সমবেত গরুর এক-চতুর্থাংশ গরু বিক্রি হয়েছে বলা যায়! সাড়ে ৪মণ থেকে ৫মণ (মাংস) ওজনের বলদ গরু বিক্রি হয়েছে গড়ে ৮৫-৯৫ হাজার টাকায়। আর একই ওজনের ষাঁড় বিক্রি হয়েছে গড়ে ৮০-৮৫ হাজার টাকায়। সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ মণ ওজনের ষাঁড় বিক্রি হয়েছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকায়।

এছাড়া ছোট ও মাঝারী গাভী, বলদ, ষাঁড় গড়ে ৪০-৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে খামারী ও কৃষকদেরকে! কারণ বাজারে সমবেত গরুর চেয়ে ক্রেতা ৪ গুন বেশি হওয়ায় গরু নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে মধ্যস্তভোগী বেপারীরা। ক্ষুদ্র খামারী এবং কৃষকরা এবার গরু বিক্রিতে লাভবান না হলেও অন্তত পুঁজি নিয়ে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

অন্যান্য বছরের ন্যায় বেশি লাভবান না হওয়ায় মাঝারী খামারী ও মধ্যস্থভোগী বেপারীরা পুঁজি হারিয়েছে অনেকে। আবার অনেকে গরু বিক্রি না করে আবারও গৃহে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ২৯ জুলাই উপজেলার তিনটহরীতে আরেকটি বড় বাজার হবে। সেখানেও কয়েক হাজার গরু জমায়েত হওয়ার সম্ভাবণা রয়েছে।

গরু ব্যবসায়ী মো. হুমায়ন কবীর বলেন, এ বছর করোনায় সব কেঁড়ে নিয়েছে! শতাধিক ষাঁড় ও বলদ গরু এক বছরব্যাপী কিনে বর্গায় লালন-পালন করিয়েছিলাম। এখন বাজারের যে অবস্থা তাতে দেখছি পুঁজি টিকানো দায়! কী করবো ভেবে কূল পাচ্ছি না।

এদিকে কোরবানীর হাটে অবাধে বেচা-কেনায় ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার্থে পুলিশ, ব্যাংক স্টাফ ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক বাজারে অবস্থান করতে দেখা গেছে। বাজার ইজারাদার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বাবুল গরু বেচা-কেনার চিত্র তুলে ধরে বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরু বেচা-কেনা হচ্ছে এক-চতুর্থাংশ! জনপদ ও শহরে ভাটা পড়েছে। মানুষজন করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং সামাজিক ও স্বাস্থ্যবিধির ওপর গুরুতারোপ করে অনেকে কোরবানি দিচ্ছে না। যার ফলে এর প্রভাব পড়েছে কোরবানের হাটে!

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন