মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিলো আমেরিকার
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সেদেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর যে নিপীড়ন চালিয়েছে, তাকে প্রথমবারের মত ‘জোনোসাইড’ হিসেবে বর্ণনা করল যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন।
গতকাল রোববার এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে। আজ সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস হলোকস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এ বিষয়ে জনসম্মুখে একটি ঘোষণা দেবেন। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এরকম একটি ঘোষণার পক্ষে দাবি জানিয়ে আসছে।
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে সংঘটিত নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের অভিযোগকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেনি। এই সহিংস ঘটনার ফল হিসেবে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। ফলে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনার সুপারিশ করে জাতিসংঘ।
রোববার এক বিবৃতিতে ডেমোক্র্যাটিক দলের সিনেটর ও সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য জেফ মার্কলে বলেন, ‘অবশেষে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংস ঘটনাগুলোকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করায় আমি বাইডেন প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই। যদিও এ ঘোষণা আরও অনেক আগেই আসা উচিৎ ছিল, তবুও এটি এ নির্দয় শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার পথে একটি শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।’
তিনি আরও জানান, ‘এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্বের ভার নিতে হবে এবং সারা বিশ্বের কাছে এ বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে যে, এ ধরনের নৃশংসতার ঘটনা পৃথিবীর যেখানেই ঘটুক না কেনো, কখনোই তা ধামাচাপা দেওয়া যাবে না।’
২০১৮ সালে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমিত আকারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেখানে বলা হয়, মিয়ানমারের উত্তরের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতাকে ‘বড় আকারের, বিস্তৃত এলাকাজুড়ে সংঘটিত ভয়াবহ ঘটনা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই সহিংসতার পেছনে মূল লক্ষ্য ছিল এই জনগোষ্ঠীকে আতংকগ্রস্ত করা এবং তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া।
ইতোমধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লাইংসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।