মিয়ানমার বিজিপি‘র ক্যাম্পে আরাকান আর্মির হামলা
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের রাথিডং শহরতলীর সাজাংম্রাইন গ্রামে অবস্থিত বিজিপি-র ক্যাম্পে ২৯ মে রাত আড়াইটার দিকে আরাকান আর্মির সেনারা হামলা চালালে আরাকান আর্মি আর বিজিপি-র পরস্পর সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
এ হামলায় এখন পর্যন্ত মিয়ানমার বিজিপি-র ১০জন সদস্য ও একজন শিশু‘সহ ৩জন বিজিপি পরিবারের সদস্য নিখোঁজ রয়েছে বলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ-মিন-তুন্ জানান।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ-মিন-তুন্ বলেন, ২৯ মে রাত আড়াইটার দিকে রাখাইনে রাছিডং শহরতলীর অন্তর্গত সাজাংম্রাইন বিজিপি ক্যাম্পে আরাকান আর্মিরা এসে ছোট-বড় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
অপূর্ণ সৈন্যবল সাজাংম্রাইন বিজিপি ক্যাম্পকে শতাধিক আরাকান আর্মিরা হামলা করলে নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে সকাল ৫টার দিকে অতিরিক্ত মিয়ানমার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ-মি-তুন্ বলেন।
রাথিডং শহরতলীর স্থানীয়রা, রাত আড়াইটার দিকে সাজাংম্রাইন বিজিপি ক্যাম্প হামলার শিকার হয় ও ক্যাম্পের কয়েকটি স্থানে আগুনে পুড়তে দেখা গেছে বলে জানান।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইন-থুখাকে পার্বত্যনিউজের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ২৯ তারিখ ভোররাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে সাজাংম্রাইন বিজিপি ক্যাম্প নামধারী সন্ত্রাসী মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে আরাকান আর্মির হামলার ঘটনা নিশ্চিত করেন। এতে একটি রকেট লঞ্চারসহ ১৪টি অস্ত্র ও ব্যাপক গোলাবারুদ জব্দ এবং কিছু লোকজনকে আটক করে নিয়ে আসা হয়েছে। আটককৃত লোকজনের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে নির্দোষ বা বেসামরিক প্রমাণিত হলে ছেড়ে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
আটককৃতদের মধ্যে শিশুসহ ৩জনকে শনিবার (৩০ মে) সকাল ৮টায় বুছিডং শহরতলীর অক্-ক্যংদং বিজিপি ক্যাম্পে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্মুখে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে খাইন-থুখা জানান।
মুক্তি পাওয়ারা হলেন, ড-চেন্দা (৩২), ড-শৈজাং (২৬) ও তার ৪ বছরের। কন্যা। ড-চেন্দা(৩২) সৈনিক ঞিঞিলোয়াং ও ড-শৈজাং(২৬) সৈনিক অংকোমাং এর স্ত্রী বলে জানা গেছে। মুক্তি পাওয়া উভয়ের স্বামী এখনো পর্যন্ত আরাকান আর্মির নিকট বন্দী রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কথিত ওই বিজিপি ক্যাম্প থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীরা প্রতিদিন জনসাধারণকে অন্যায় অত্যাচার-নির্যাতন, হত্যা গুম করা হতো। যা এখনও এলাকার বেশকিছু লোক নিখোঁজ রয়েছে।
গত ২৪ মে প্লাটওয়া শহরতলীতে আরাকান আর্মির একটা হাসপাতাল ইউনিটে মিয়ানমার সেনাবাহিনীরা হামলা করে এবং আটককৃত আহত চিকিৎসাধীন রোগীদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
২৯ মে সকাল ৭টা বাজে ১৪ মিনিটে মিনব্যা শহরের সেনফাপ্যো এলাকা হতে পূর্ব দক্ষিণ কোণ ১.৮ কিলোমিটার দুরত্বে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ব্যাপক অস্ত্র গোলাবারুদ জব্দ করেছে বলে খাইনথুখা বলেন।
উল্লেখ্য,২৯ মে রাখাইন বুছিডং শহরতলীর সাজাংম্রাইন বিজিপি-র ক্যাম্পে হামলার পর সকাল ১১ঃ০০টার দিকে মিয়ানমারের তাআং প্রদেশের কোয়াক্ষাইন শহরতলীর নেন্-কোয়াট্ গ্রামের নিকটে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক গোলাবারুদ ভর্তি গাড়ি একটি হামলার শিকার হয়। এতে মর্টার সহ ব্যাপক অস্ত্র, গোলাবারুদ জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে। আরাকান আর্মির মিত্র নর্দার্ন এলিয়েন্স তাআং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (TNLA) এ হামলাটি চালিয়েছে বলে জানা গেছে।